সাভারে পুলিশের ডিআইজি ও পুলিশ কর্মকর্তা পরিচয়ে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক প্রতারক ও তার সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা জেলা উত্তর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এসময় চক্রের প্রধানের কাছ থেকে অপরাধ প্রতিদিন নামে একটি ভুয়া সাংবাদিক পরিচয় পত্র ও প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত দুটি মোবাইল উদ্ধার করা হয়।
আজ সোমবার দুপুরে ঢাকা জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানানো হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, গাজীপুর জেলার কালিগঞ্জ থানার নগর ভেলা গ্রামের খোরশেদ আলমের ছেলে ও চক্রের প্রধান দ্বীন ইসলাম ওরফে শাওন (২৬) এবং তার সহযোগী একই জেলার কেতুন এলাকার মো. হানিফ সরকারের ছেলে হৃদয় আহমেদ (৩০)।
গোয়েন্দা পুলিশ জানায়, প্রতারক চক্রের হোতা দ্বীন ইসলাম ওরফে শাওন সাংবাদিকতার কার্ড ব্যবহার করে মাদক ব্যবসা পরিচালনার পাশাপাশি নিজেকে ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হিসেবে পরিচয় দিতো। নিজের পরিচয়কে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য সে তার নিজের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরটি ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজির সরকারি মোবাইল নম্বরে ফরওয়ার্ড করে রাখে। কেউ তাকে ফোন দিলে সেই ফোনকলটি ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজির সরকারি নম্বরে চলে যায়। এভাবে সে সাধারণ মানুষসহ বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তাদের কাছে নিজেকে ডিআইজি পরিচয় দিয়ে আর্থিক সুবিধা নিয়ে আসছিল।
গত ১৫ জুন সকালে সাভার মডেল থানাধীন থানাস্ট্যান্ড এলাকায় এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ডিআইজি পরিচয় দিয়ে মোটা অংকের টাকা আত্মসাৎ করেছে। ঘটনাটি সাভার মডেল থানা পুলিশের মাধ্যমে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ জানতে পারে। পরে কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি’র দেহরক্ষী ও পুলিশ সদস্য মো. সোহানুর রহমান বাদী হয়ে সাভার মডেল থানায় একটি মামলা (নং-৬৬) দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর প্রতারক চক্রের প্রধানসহ অপরাধীদের ধরতে মাঠে নামে ঢাকা জেলা উত্তর গোয়েন্দা পুলিশ। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় গাজীপুরের কালীগঞ্জ থানার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে প্রতারক চক্রের প্রধান দ্বীন ইসলাম ওরফে শাওন (২৬) ও তার সহযোগী হৃদয় আহমেদকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গোয়েন্দা পুলিশ আরও জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে চক্রের প্রধান দ্বীন ইসলাম ওরফে শাওন ও তার সহযোগী হৃদয় আহমেদ দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। দ্বীন ইসলাম ওরফে শাওনের বিরুদ্ধে গাজীপুরের কালিগঞ্জ থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে ও প্রতারণার অভিযোগে ২টি এবং তার সহযোগী হৃদয় আহমেদের বিরুদ্ধে মতিঝিল ও সবুজবাগ থানায় পৃথক ২টি মামলা রয়েছে। আদালত থেকে সেই মামলায় জামিনে এসে পুনরায় ডিআইজির পরিচয় ব্যবহার করে মাদক ব্যবসা ও প্রতারণা করে আসছিল।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিবি) মোবাশশিরা হাবীব খান, ঢাকা জেলা উত্তর গোয়েন্দা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. রিয়াজ উদ্দিন আহম্মেদ বিপ্লব, উপ-পরিদর্শক (এস আই) অনোয়ার হোসেনসহ অন্য পুলিশ কর্মকর্তারা।