আজ সাত বছর বয়সী এমন এক শিশুর গল্প বলবো, যার কথা শুনলে আপনার চোখের সামনে ভেসে উঠবে টাকার পাহাড়! জ্বী হ্যাঁ, টাকার পাহাড়! শিশুটির নাম অ্যানাস্তাসিয়া রাডজিনস্কায়া, গত জানুয়ারিতে সাত বছর পূর্ণ হলো মাত্র। এত ছোট বয়সেই টাকার আক্ষরিক অর্থ কিংবা গুরুত্ব কোনোদিন বুঝতে পারার কথা না তার। তবে এই অল্প বয়সেই সে যা উপার্জন করে তা দিয়ে ছোটখাটো একটা টাকার পাহাড় তৈরি করা যাবে রীতিমতো!
বিশ্বাস করতে না চাইলে ফোর্বস কি বলছে শুনুন। ফোর্বসের হিসেব মতে ২০২০ সালে, মানে গত বছরে সাত বছর বয়সী এই শিশুর আয় ১৮.৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার!বাংলাদেশী মুদ্রায় যা প্রায় একশত সাতান্ন কোটি পঁচিশ লাখ টাকার সমান। সময়ের হিসেবে দিনে তার আয় হয় তেতাল্লিশ লাখ আট হাজার উনিশ টাকা, মানে প্রতি ঘণ্টায় তার উপার্জন এক লাখ উনআশি হাজার পাঁচশত নয় টাকা।
পৃথিবীর এই প্রান্তে যখন রুটি রোজগারের দুটো পয়সার জন্য জীবন বৃত্তান্ত হাতে নিয়ে লাখ লাখ তরুণ দ্বিগ্বিদিক ছুটছে, পৃথিবীর অন্য প্রান্তে তখন অর্থের মানে বুঝে উঠার আগেই অর্থ নিয়ে খেলার মতো খেলছে এক শিশু! হায়রে অর্থ! অ্যানাস্তাসিয়া রাডজিনস্কায়া জন্ম রাশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে হলেও বর্তমানে বাস করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে।
২০১৪ সালে ডিসকাইনেটিক সেরিব্রাল পালসি নামের বিরল একটি রোগ নিয়ে পৃথিবীতে ভূমিষ্ঠ হয়েছিল সে। এই কঠিন অসুখটা হলে খুব একটা ভাগ্যবান না হলে রোগীর মস্তিষ্ক ঠিক মতো কাজ করে না। কথা বলতে পারার সম্ভাবনাও থাকে না বললেই চলে। ডাক্তাররাও কথা বলতে না পারার সম্ভাবনার কথা আগে থেকেই জানিয়ে রেখেছিলেন তার বাবা-মাকে। একদিক দিয়ে খুব বেশি ভাগ্যবতি বলা যায় তাকে।
ডাক্তারদের মতে যার কথা বলতে পারার সম্ভাবনা ছিল প্রায় শূন্য, আজ কথা বলেই সে প্রতিদিন লক্ষাধিক টাকা উপার্জন করছে! সৃষ্টিকর্তার কি লীলা খেলা! আসলে মূলত একজন ইউটিউবার অ্যানাস্তাসিয়া রাডজিনস্কায়া। ছোটবেলায় তার অসুখতার খবরা-খবর সহজে আত্মীয়-স্বজনকে জানানোর জন্যই বাবাই মূলত তার নামে একটি ইউটিউব চ্যানেল খোলেন, সেই চ্যানেলে ভিডিও করে আত্মীয়-স্বজনদের উদ্দেশ্যে তার অসুস্থতার খবরা-খবর দেয়া হতো।
এরই মধ্যে একদিন বাবার সঙ্গে চিড়িয়াখানায় ভ্রমণে গিয়ে সেখানকার দুটি সার্কের নৃত্য আর গরুর বাচুরকে খাবার খাওয়ানোর ভিডিও করে ইউটিউবে আপলোড করে সে। আর তাতেই রাতারাতি জনপ্রিয়তা অর্জন করে অ্যানাস্তাসিয়া রাডজিনস্কায়া। বর্তমানে তার চারটি ইউটিউব একাউন্টে সাবস্কাইবার সংখ্যা একশত উনসত্তর মিলিয়নের কিছু বেশি। আর ২০২০ সালে ইউটিউবে তার কনটেন্টগুলো ভিউ হয়েছে ঊনচল্লিশ বিলিয়ন! মানে আট লাখ তিপ্পান্ন হাজার নয়শত কোটি বার! ইউটিউব থেকে সর্বোচ্চ আয় করা ব্যক্তিদের তালিকায় বর্তমানে সাত নম্বরে আছে তার নাম!