সুন্দরবন ডেক্স: বাগেরহাটের শরণখোলায় বন্য প্রানী পাচারকারী একটি চক্রের বিরুদ্ধে আদালতে স্বাক্ষী দেয়ার কারণে এক বনরক্ষী ওই চক্রের রোষানলে পড়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
উপজেলার পশ্চিম খাদা গ্রামের বাসিন্দা এবং সুন্দরবনের কচিখালী টহল ফাঁড়ির বনরক্ষী মো.মোস্তফা হাওলাদারের স্ত্রী-বিউটি বেগম (৪০) সম্প্রতি শরণখোলা উপজেলা প্রেসক্লাবে এমন একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন।
বিউটি বেগম তার অভিযোগে জানায়, ২০১১ সালের ১৬ ফেব্রæয়ারী গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে উপজেলার পশ্চিম খাদা গ্রামের বাসিন্দা মৃত. মেছের বয়াতীর ছেলে মো. খয়ের মিয়া বয়াতী (৬০) এর বাড়ীর পাশ থেকে ৪টি বাঘের মাথা, ৩টি বাঘের চামড়া ও ৩১ কেজি বাঘের হাড় উদ্ধার করে বন-বিভাগ ।
পরে ১৭ ফেব্রæয়ারী বন্যপ্রানী নিধন আইনে ৪জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলা নং-সি আর (বন) ০৪/১১। উক্ত মামলায় পশ্চিম খাদা গ্রামের বাসিন্দা মো. খয়ের মিয়া বয়াতীকে ২নং আসামী করা হয়।
উক্ত অভিযানে আমার স্বামী মো.মোস্তফা হাওলাদার (বি.এম-২৭) অংশ গ্রহন করায় তাকে ওই মামলায় ২নং স্বাক্ষীর তালিকায় রাখেন বনবিভাগ।
পরবর্তীতে ২০১৭ সালে উক্ত মামলায় খয়ের মিয়া বয়াতীকে ২ বছরের অধিক সাজা দেন আদালত।
ওই ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে আমার স্বামীর বিরুদ্ধে নানা রকম ষড়যন্ত শুরু করেন খয়ের মিয়া বয়াতী, তার ভাই জালাল বয়াতী ও তার ছেলে বাচ্চু বয়াতী। ২০১৯ সালে কর্তৃপক্ষের নিকট থেকে ছুটি নিয়ে মোস্তফা বাড়ীতে আসলে আদালতে স্বাক্ষী দেওয়ার অপরাধে ওরা আমার স্বামীকে উপজেলার বাংলাবাজার এলাকায় ফেলে মারধর করেন কিন্তু কোন বিচার পাইনি।
সুন্দরবনের বাঘ হরিন সহ অন্যান্য বন্য প্রানী পাচার করাই ওই চক্রটির পেশা । এমনকি প্রতিপক্ষরা আমার স্বামীকে খুজতে রাত-বিরাত আমাদের বাড়ীতে আসে । তাকে না পেয়ে অশ্লীল ভাষায় গালমন্দ করেন । চাকুরিচুত করা সহ নানা ভাবে মিথ্যা মামলায় ফাঁসাতে বন-বিভাগের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে ভিত্তিহীন অভিযোগ দ্বায়ের করেন ওই চক্রের সদস্যরা।
যার ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি হরিন শিকারের কাল্পনিক অভিযোগ তুলে আমার স্বামীর বিরুদ্ধে একটি সংবাদ সম্মেলন করেন খয়ের মিয়া বয়াতীর ভাই জালাল বয়াতী ।
এছাড়া জালাল বয়াতী এক সময়ে সুন্দরবনের দেলোয়ার বাহীনির সেকেন্ডইন কমান্ডের দ্বায়িত্বে ছিলেন। এমনকি তার নের্তৃত্বে তৎকালীন সময়ে সুন্দরবনের দাসের ভাড়ানী টহল ফাঁড়ির দুইটি রাইফেল লুট করা হয়। বর্তমানে তিনি স্বাভাবিক জীবনে আসলেও তার বিরুদ্ধে সুন্দরবনের বিভিন্ন এলাকায় মাছ ধরার নামে নানা অপরাধ মুলক কর্মকান্ড চালানোর অভিযোগ রয়েছে ।
তাছাড়া ওই চক্রের সদস্যরা বিভিন্ন সময় আমাকে ও আমার স্বামীকে ০১৭২৯৩২১২২৮ নম্বর ফোন হতে হুমকি দিয়ে আসছেন। এদের রোষানল থেকে বিউটি বেগম তার স্বামী সহ পরিবারকে বাঁচাতে বন-বিভাগ এবং প্রসাশনের উর্ধতন কর্তৃপক্ষে সু-দৃষ্টি কামনা করেন।
তবে, এ বিষয়ে মো. খয়ের মিয়া বয়াতী ও তার ভাই ব্যবসায়ী মো. জালাল বয়াতীর মুঠোফোনে একাধিক বার ফোন করা হলেও তা রিসিপ না করায় তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।