সুন্দরবন ডেক্স: সুন্দরবনের নদী খালে আগামী দুই মাস সকল প্রকার মাছ আহরন নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে বন-বিভাগ। বন-বিভাগ জানায়, জুলাই ও আগস্ট মাস মৎস্য প্রজনন মৌসুম। এ সময়ে সাধারণত সকল মাছে ডিম ছাড়ে। তাই প্রতি বছরের ন্যায় চলতি বছরের ১জুলাই থেকে ৩০ আগস্ট পর্যন্ত দুই মাস সুন্দরবনের সকল প্রকার মৎস্য আহরন বন্ধ থাকবে।
মৎস্য সম্পদ রক্ষায় ইন্টিগ্রেটেড রিসোর্সেস ম্যানেজমেন্ট প্ল্যানস এর (আইআরএমপি) সুপারিশ অনুযায়ী ২০১৯ সালে এ সিদ্ধান্ত নেয় বন-বিভাগ। তার পর থেকে প্রতি বছর সুন্দরবনের বিভিন্ন নদ-নদীতে নিরাপদে মৎস্য প্রজনন ঘটে থাকে। সুন্দরবনের ৬ লাখ ১ হাজার সাতশ হেক্টর বনভূমির মধ্যে সাড়ে চারশত নদী ও খাল রয়েছে।
এর মধ্যে অভয়ারণ্য এলাকা সহ ১৮টি খাল এবং ২৫ ফুটের কম প্রসস্ত খালে সারা বছর মাছ ধরা নিষিদ্ধ। তবে, প্রজননের জন্য জুলাই ও আগষ্ট দুই মাস বনের সকল খালে মাছ ধরা বন্ধ করা হয়।
অপরদিকে, মাছ ধরা বন্ধের ঘোষনায় সুন্দরবনের উপর নির্ভশীল পেশাজীবিরা হতাশা প্রকাশ করেছেন।
উপজেলার শরণখোলা গ্রামের জেলে জলিল হাওলাদার, সোনাতলা গ্রামের জেলে হারুন মুন্সি, খুড়িয়াখালী গ্রামের জেলে হাবিব হাওলাদার সহ কয়েক জন বলেন, আমরা সুন্দরবনে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে থাকি। করোনা কালীন সময়ে হঠাৎ করে মাছ ধরা বন্ধ করে দিলে আমাদের না খেয়ে থাকতে হবে।
শরণখোলার মৎস্য ব্যবসায়ী তুহিন বয়াতী ও জালাল মোল্লা জানান, প্রায় দুই হাজার পারমিটধারী জেলে মৎস্য আহরন করে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করে। তাদের সাথে প্রায় ২৫ থেকে ৩০ হাজার মানুষ জড়িত রয়েছে। আমরা জেলেদের লাখ লাখ টাকা দাদন দিয়েছি। করোনা পরিস্থিতিতে বাইরেও কোন কাজকর্ম নেই। দুর্যোগ কালে দুই মাস মাছ ধরা বন্ধ থাকলে জেলে পরিবার গুলোতে মানবতের জীবন-যাপন শুরু হবে।
তবে, বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন জানান, মৎস্য সম্পদ রক্ষায় প্রতি বছরের ন্যায় এবছরও দুই মাস সুন্দরবনের সকল প্রকার মাছ ধরা বন্ধ থাকবে। এছাড়া জেলেদের দুর্ভোগের বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।