ইসলামী ব্যাংক হাউজ লোন, বাড়ি তৈরির জন্য দেয়া হয়। বাড়ি মানুষের আপন নীড়। একটি স্বপ্নের ঠিকানার নাম বাড়ি। দিনশেষে সকল কাজকর্মের অবসান করে মানুষ একটু শান্তির খুঁজে ছুটে চলে নিজের বাড়িতে। তাই, বাড়ি হওয়া চাই প্রতিটি মানুষের স্বপ্নের কল্পনার প্রতিচ্ছবি।
যেখানে ফুটে উঠবে একজন ব্যক্তির রুচি-বোধের পূর্ণাঙ্গ প্রকাশ। তাই নিজের রুচি-বোধের সংমিশ্রণ ফুটিয়ে তুলতে সকলে একটি বাড়ি তৈরির স্বপ্ন দেখে থাকে। বাড়ি তৈরির স্বপ্ন প্রতিটি মানুষের অন্তরের এক লালিত স্বপ্নের নাম। প্রতিটি মানুষের আর্থ সামাজিক অবস্থা যাই হউক না কেন, তার একটি স্বপ্ন থাকে একটি বাড়ি নির্মাণ করা এবং সেই সাথে নিজের পরিবার নিয়ে সুখে শান্তিতর বসবাস করা।
দেশের আর্থসামাজিক খাতে এবং অর্থনীতি বিবেচনা করলে উচ্চবিত্ত শ্রেণী পেশার মানুষদের কাছে বাড়ি তৈরি কোনো ব্যাপার না হলেও, বিপত্তি বাধে মধ্যবিত্ত কিংবা নিম্মবিত্ত মানুষের বাড়ি তৈরির স্বপ্ন পূরণের ব্যাপারে।
বাংলাদেশ মধ্যবিত্ত এবং নিম্মবিত্ত শ্রেণীর আয়ের উৎস খুবই সীমিত থাকার ফলে, তাদের পক্ষে নিজের আয়ের উৎস থেকে একটি বাড়ি তৈরি করা খুবই আকাশচুম্বী ব্যাপার হয়ে উঠে। কারণ সংসার চালিয়ে, ছেলে মেয়েদের পড়াশোনা খরচ চালিয়ে,পরিবারের সকলের চাহিদা পূরণ করে তার পক্ষে আর বাড়ি তৈরি করার খরচের এর জোগান হয়ে উঠে না। দেশের মধ্যবিত্ত কিংবা নিম্ন শ্রেণী পেশার মানুষের কাছে বাড়ি তৈরির একটি খুবই দুঃসাধ্য ব্যাপার।
এই তো কিছুদিন আগেও প্রত্যেক শ্রেণী পেশার মানুষের কাছে নিজের আয়ের উৎসের মাধ্যমে বাড়ি নির্মাণ করা বেশ অকল্পনীয় একটি ব্যাপার ছিল। কিন্তু, বর্তমানে সেই স্বপ্ন পূরণ করতে পারবেন যেকোনো শ্রেণি পেশার মানুষ।
জি, হ্যাঁ আপনি ঠিক শুনেছেন। আপনিও তৈরি করতে পারবেন আপনার নিজের বাড়ি। মানুষের বাড়ি নির্মাণ স্বপ্নে এগিয়ে এসেছে ব্যাংকসমূহ। বাড়ি নির্মাণ স্বপ্ন পূরণের জন ব্যাংক সমূহ নিয়ে এসেছে হোম লোণের ব্যবস্থা। যেখানে মানুষ তার আয়ের উপরে ব্যাংক থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ ঋণ নিয়ে, বাড়ি নির্মাণ করতে পারবে।
আপনি যদি হোম লোণ নেওয়ার পরিকল্পনা করে থাকেন তাহলে, আপনাকে কিছু জিনিস অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে। আর তা হলো:
যেহেতু আপনি একজন কর্মজীবী, আপনার একার পক্ষে বাড়ি তৈরি করা সম্ভব নয়। সেই ক্ষেত্রে আপনি হোম লোণের জন্য ব্যাংক বরাবর আবেদন করবেন। এই ক্ষেত্রে ব্যাংক আপনার আয়ের উৎস যাচাই করে নিবে।
তারা আয়ের উৎস যাচাই করবে যে, আপনি লোণ পরিশোধ করার সামর্থ্য রাখেন কিনা। তবেই, তারা আপনাকে ইসলামী ব্যাংক হাউজ লোন প্রদান করে থাকবে।
যেকোনো ক্ষেত্রে ব্যাংক সমূহ চাইবে, আপনি তাদের ভবিষ্যতে ঋনের টাকা পূরণের সর্বোচ্চ সামর্থ্য রাখেন কিনা। কিন্তু যদি আপনি আগে থেকে ঋণে জর্জরিত থাকেন, সেই ক্ষেত্রে আপনার হোম লোণ পাওয়ার সম্ভাবনা একদম ক্ষীণ হয়ে যায়।
লোণ নেওয়ার ক্ষেত্রে বয়স খুবই একটি বিবেচ্য বিষয়। কারণ, যদি আপনার বর্তমান বয়স চল্লিশ এর ঊর্ধ্বে হয় তখন আপনাকে ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে ব্যাংকে অনেকবার চিন্তা করতে হবে।
কারণ বয়স বৃদ্ধি হলে আপনার আয়ের উৎস যদি না থাকে, তখন আপনাকে ঋণ টাকা পরিষদের ক্ষেত্রে খানিকটা বিপত্তির মধ্যে দিয়ে যেতে হবে। তাই হোম লোণের জন্য আবেদন করার ক্ষেত্রে, ব্যক্তির বয়স ১৮ বছর থেকে ৩৫ বছর হলো ভালো হয়।
ইসলামী ব্যাংক হাউজ লোন গ্রহণের ক্ষেত্রে পূর্বের ব্যাংকিং অভিজ্ঞতা খুবই একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ, হোম লোণের জন্য ব্যাংকে আবেদন করার পূর্বে তারা আপনার পূর্বে যেকোনো ব্যাংকে লেনদেন অভিজ্ঞতা সন্ধান করব।
যেখানে বিবেচ্য বিধায় থাকবে আপনি, এর আগে ব্যাংক থেকে লোণ নিয়েছেন কিনা? সেই লোণ যথাসময়ে পূরণ করতে পেরেছেন কিনা ইত্যাদি।
ব্যাংক হোম লোণ প্রদানের ক্ষেত্রে আপনার কর্মস্থল সম্পর্কে, আপনার সম্পর্কে, সেই সাথে আপনার কর্মস্থলে আপনার সম্পর্কে ব্যাংক সমূহ পূর্ণাঙ্গ যাচাই বাছাই করে নিবে। আপনি মানুষ হিসাবে কেমন, কারো সাথে টাকা নিয়ে দ্বন্দ্ব আছে কিনা, এইসব বিষয়ও যাচাই করবে।
হোম লোণ বর্তমানে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। সাধ্যের মধ্যে বাড়ি নির্মাণের স্বপ্ন পূরণের একটি কাঙ্ক্ষিত দূরদর্শিতা স্থাপন করেছে ব্যাংক সমূহ।
ইসলামী ব্যাংকও তার ব্যতিক্রম নয়। গ্রাহকের সর্বোচ্চ সেবাদানের প্রকল্পে তাদের বাকি সেবা সমূহের মতো, হোম লোণ তাদের বেশ জনপ্রিয় একটি সেবার নাম। তাই, আজ আমি আলোচনা করব ইসলামী ব্যাংকের হোম লোণের সেবা নিয়ে। আশা করি আপনাদের উপকার হবে।
গ্রাহকদের সেবার সম্পূর্ণ একটি শরিয়া সম্পূর্ণ ব্যাংক হলো ইসলামী ব্যাংক। গ্রাহকদের সেবার মান উন্নয়নে, তাদের হোম লোণ একটি দূরদর্শী পদক্ষেপ। এই হোম লোণ সুবিধার জন্য অনেক মানুষেরা তাদের বাড়ি নির্মাণের স্বপ্ন পূরণ করতে পেরেছে।
ইসলামি ব্যাংক মূলত গ্রাহদের জন্য হোম লোণের আওতায়, গ্রাহকদের বাড়ি নির্মাণ এবং সেই সাথে রেডিমেড ফ্ল্যাট কিনার উপর নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ ঋণ সুবিধা প্রদান করে থাকে।
ইসলামী ব্যাংক হাউজ লোন সার্ভিস এর নাম হলো: Bai-Muajjal / HPSM
এই ইসলামী ব্যাংক হাউজ লোনের আওতায় ইসলামী ব্যাংক তাদের গ্রাহকদের জন্য সর্বোচ্চ ১০ লক্ষ্য টাকার ঋণ সুবিধা প্রদান করে থাকে।
তবে, এই ক্ষেত্রে কিছু জিনিস বিবেচ্য রয়েছে।
ইসলামী ব্যাংক হাউজ লোন নেওয়ার জন্য অবশ্যই আপনার নিজস্ব মালিকানার জমি থাকতে হবে।
আপনি যদি এই ঋণের জন্য আবেদন করতে চান, সেক্ষেত্রে আপনি আপনার নিকটস্থ ইসলামী ব্যাংকের শাখা যোগাযোগ করার জন্য আবেদন করছি।
ইসলামি ব্যাংকের শাখার ঠিকানার তালিকা: islamibankbd.com
এই ছিল আজকে ইসলামী ব্যাংক হাউজ লোন নেয়ার বিস্তারিত নিয়ম কানুন। মানুষ ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কথা চিন্তা করে স্বপ্ন দেখে একটি বাড়ি বিনির্মাণ করে। যাতে তাদের সামনের দিনগুলো একটু নিরাপদে কাটাতে পারে।
তাই, যে কোনো শ্রেণী পেশার মানুষের থাকে একটি আপন নীড়ের খোঁজ। যেখানে সে থাকে তার পরিবারের মানুষদের নিয়ে খানিকটা নিরিবিলি সময় কাটাতে পারবে। বাংলাদেশের মতো লোণ সুবিধা একটি সম্পূর্ণ দূরদর্শী পরিকল্পনা। অদূর ভবিষ্যৎ এ এই ধারা অব্যাহত থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করা যাচ্ছে।
আর কিছু লেখা