প্রকাশিত: ১২:৪৭ অপরাহ্ণ, ৬ জুলাই ২০২১
ছবি: সংগ্রহীত
টানা এক সপ্তাহ ধরে দেশজুড়ে চলছে বৃষ্টিপাত। দেশের উত্তরাঞ্চলে যার মাত্রা আরও বেশি। মৌসুমি বায়ুর প্রভাব এবং উজানে ভারী বৃষ্টির কারণে দেশের নদ-নদীগুলোর পানিও বাড়ছে দিন দিন। এদিকে জানা গেছে, আগামী ৭২ ঘণ্টা দেশের উত্তরাঞ্চলের তিস্তা, ধরলা, দুধকুমার নদীর পানি দ্রুত বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। চলতি সপ্তাহের মধ্যে একটি স্বল্পমেয়াদি বন্যা শুরু হতে পারে। এটি দশ দিন থেকে সর্বোচ্চ দুই সপ্তাহ স্থায়ী হতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া বলেন, মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে এবং উজানে ভারী বৃষ্টির কারণে বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে বন্যার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। আমরা আশঙ্কা করছি, আগামী দুই-চার দিনের মধ্যে দেশের উত্তরাঞ্চলের কুড়িগ্রাম, জামালপুর, গাইবান্ধা, নীলফামারী, লালমনিরহাট- এই অঞ্চলগুলোয় বন্যার ঝুঁকি আছে। পরে এই বন্যা দেশের উত্তর মধ্যাঞ্চল সিরাজগঞ্জ ও বগুড়া হয়ে মধ্যাঞ্চলের দিকে অগ্রসর হতে পারে। সে ক্ষেত্রে আগামী সপ্তাহের মধ্যে দেশের মধ্যাঞ্চলের রাজবাড়ী, ফরিদপুর, শরীয়তপুর ও চাঁদপুর বন্যাকবলিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
তিনি বলেন, আবহাওয়া পূর্বাভাস অনুযায়ী জুলাই মাসে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের কথা বলা হয়েছে। তবে চলতি মাসের প্রথম ও দ্বিতীয় সপ্তাহে বৃষ্টির পরিমাণ বেশি। এটি দেশের ভেতরে ও উজানেও বেশি। সে ক্ষেত্রে আমরা আশঙ্কা করছি মধ্যম মানের একটি বন্যা হতে পারে। চলতি মাসের মাঝামাঝি আবার বৃষ্টির পরিমাণ কমে যাবে। তার পর বন্যার পানি কমে আসবে বলে আশা করছি। কাজেই এই বন্যা বড় ধরনের কিছু হবে না বলেই আমাদের মনে হচ্ছে। এটি স্বাভাবিক বন্যার মতো হবে। এটি বিপদসীমার কিছুটা ওপরে উঠে তার পর আবার নেমে যাবে বলে আশা করছি আমরা।
তিনি বলেন, আসন্ন বন্যাটি দীর্ঘায়িত হওয়ার আশঙ্কা নেই। এটি দশ দিন থেকে সর্বোচ্চ দুই সপ্তাহ স্থায়ী হতে পারে। এর পর ক্রমান্বয়ে চলতি মাসের তৃতীয় সপ্তাহে বন্যার পানি নামতে শুরু করতে পারে। এ বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হবে না।
এদিকে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়, দেশের উত্তর পূর্বাঞ্চলের আপার মেঘনা অববাহিকার প্রধান নদ- নদীগুলোর পানির সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে যা আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। একইভাবে ব্রহ্মপুত্র ও যমুনার পানির সমতল বাড়তে শুরু করেছে, যা আগামী ৭২ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে। এ ছাড়া গঙ্গা নদীর পানির সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে ও পদ্মা নদীর পানির সমতল স্থিতিশীল আছে, যা আগামী ২৪ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে।
গত ২৪ ঘণ্টায় বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের স্টেশনগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয়েছে ডালিয়া স্টেশনে ১৪৭ মিলিমিটার। এ ছাড়া ঢাকা স্টেশনে ৭৪, বরগুলা স্টেশনে ৮০ এবং কক্সবাজার স্টেশনে ৬৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।
শাওন/সাএ