ইসলামী ব্যাংক লোন পদ্ধতি অনান্য ব্যাংকের থেকে কিছুটা আলাদা। যেহেতু এখানে ইসলামকে কেন্দ্র করে ব্যাংকিং ধারা গড়ে উঠেছে। যদিও অনেকেই, ইসলামী ব্যাংককে শতভাগ ইসলামী ব্যাংক বলতে নারাজ। তবে, সে আলোচনা অন্য আরেক দিন করা যাবে।
সময়ের সাথে সাথে মানুষ অনেক বেশি আধুনিক হয়েছে। প্রযুক্তির ছোঁয়া এবং সেই সাথে উন্নত জীবনধারা দৈনন্দিন জীবনযাত্রাকে সহজ করে তুলেছে। এই পৃথিবীর প্রতিটি মানুষ বিচিত্র। ঠিক সেই সাথে প্রতিটি মানুষের শখ বিচিত্র। মানুষের সেই ইচ্ছা পূরণের জন্য টাকা প্রয়োজন। কিন্তু সকলের থাকে না ইচ্ছা পূরণ কিংবা নিজের চাহিদা পূরণ করার জন্য প্রয়োজনীয় টাকা। তাই, একসময় শুধু মানুষ স্বপ্ন দেখে দিন পার করতে হতো।
বহুকাল আগে থেকে নিজের স্বপ্ন পূরণের জন্য, ঋণ প্রথা প্রচলন হয়ে আসছে। একসময় ঋণের বিনিময়ে কৃষকদের উপর থেকে বিরাট পরিমাণ খাজনা আদায় করা হতো। তারা ঋণের বোঝা পরিশোধ না করতে পারলে, তাদের সেই জমিসহ ঘরবাড়ি পর্যন্ত ছিনিয়ে নিতো আগের সেই মহাজনরা। এতটাই নির্দয় ছিলেন তারা যে, ঋণ নেওয়ার টাকা পরিশোধ না করতে পারলে শারীরিক নানা ধরণের অত্যাচার শুরু করতো। সেই সময়ে তাই কৃষক কিংবা সাধারণ মানুষদের দুঃখ কষ্টের অন্ত ছিল না।
যুগ যুগ ধরে চলে এসেছে সেই ঋণ প্রথা। মানুষ তার স্বপ্ন পূরণের জন্য, পরিবারের ভরণ পোষণের জন্য, জীবিকা নির্বাহের জন্য, কৃষিকাজ করার জন্য ঋণ নেওয়ার সুবিধা গ্রহণ করতো। সময় পাল্টেছে এবং সেই সাথে মানুষের চিন্তাধারা পাল্টেছে। মানুষকে ঋণ দেয়ার জন্য অবির্ভাব হয়েছে বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারি কমার্শিয়াল ব্যাংক সমূহ। রাজা-মহারাজাদের থেকে ঋণ নেওয়ার দিন শেষ। নিজের স্বপ্ন পূরণে ব্যাংকের মাধ্যমে ঋণ নেওয়ার পথে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশে বর্তমানে অনেক ব্যাংক রয়েছে, যারা সকল ধরণের মানুষকে তাদের স্বপ্ন পূরণের জন্য ঋণ দিয়ে থাকে। এইসকল ব্যাংক সমূহ গ্রাহকদের সুবিধার কথা চিন্তা করে বিভিন্ন ধরণের ঋণের ব্যবস্থা করে থাকে। এই সকল ব্যাংক সমূহের মধ্যে অন্যতম হল ইসলামী ব্যাংক। শরিয়াহ মোতাবেক ইসলামী ব্যাংক লোন পদ্ধতি মেনে লেনদেন করার দাবি এই ব্যাংকটিতে।
দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে ইসলামী ব্যাংকের এই ঋণ প্রদান সুবিধা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এই ঋণ প্রদানের লক্ষ্যে ইসলামী ব্যাংক কিছু নীতিমালা গ্রহণ করেছে। যেকোনো ব্যক্তি ঋণ গ্রহণে ইচ্ছুক হল অবশ্যই সেই ঋণ গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় নীতিমালা পূরণ করবেন।
সেই সকল নীতিমালা পূরণ করতে হবে তা হলোঃ
ইসলামী ব্যাংক এমন একটি ব্যাংক যা গ্রাহকদের জন্য বিভাগে ঋণ সুবিধা প্রদান করে থাকে।
নিচে ইসলামী ব্যাংক লোন পদ্ধতির তালিকা তুলে ধরা হল। যেমন:
১. ইসলামী ব্যাংক হোম লোন।
২. ফ্রিল্যান্সিং লোন।
৩. শিল্প খাত উন্নয়নে ঋণ।
৪. ব্যবসা বাণিজ্য প্রসারে ঋণ।
৫. কৃষি ঋণ।
৬. রিয়েল এস্টেট ব্যবসায় ঋণ।
প্রতিটি ব্যাংক যেমন আলাদা, সেই সাথে তাদের লোন দেয়ার ধরনটা আলাদা। আজ আমি আলোচনা করব ইসলামী ব্যাংক লোন পদ্ধতি ধরণ নিয়ে। তাহলে, দেরি না করে শুরু করা যাক।
ইসলামী ব্যাংক হোম লোনের জন্য গ্রাহকদেরকে সর্বোচ্চ ৩০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত লোন দিয়ে থাকে। এছাড়া পুরাতন বাড়ি সংক্ষরণের জন্য হোম লোনের মাধ্যমে ১০ লক্ষ্য টাকা লোন দিয়ে থাকে। সর্বোচ্চ দুইজন সচ্ছল ব্যক্তি এক্ষেত্রে গ্যারান্টার হতে পারবেন।
লোন নেওয়ার জন্য যে সকল প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রয়োজন তা হল
প্রাইভেট প্রপার্টি ক্ষেত্রে:
তরুণ প্রজন্মের ফ্রীল্যান্সিং এর প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধিতে ইসলামী ব্যাংক নিয়ে এসেছে ফ্রীল্যান্সিং ঋণ। একজন ফ্রীল্যান্সার এর যে ধরণের জিনিসপত্র ক্রয় করতে হয় তার সব ধরণের জিনিস কেনার আওতাভুক্ত হয়ে থাকে এই ঋণ। প্রায় দুইবছরের মধ্যে এই ঋণের টাকা পরিশোধ করার বিধান রয়েছে।
শিল্পখাত উন্নয়নে ইসলামী ব্যাংক এস-এমই লোড দিয়ে থাকে। এই লোন শিল্পখাত প্রসারে এবং সেই সাথে নতুন উদ্যোক্তা তৈরিতে কার্যকর ভূমিকা রাখে। ইসলামী ব্যাংক লোন পদ্ধতিতে শিল্পখাতে উন্নয়নে লোন বেশ গুরুত্বপূর্ণ। কেননা, একটি দেশের শিল্পের উন্নয়ন মানে সেই দেশের উন্নয়ন।
লোন নেওয়ার প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম:
ইসলামী ব্যাংক লোন পদ্ধতিতে কৃষি লোন বেশ গুরুত্বপূর্ণ একটি লোন। প্রান্তিক পর্যায়ে কৃষকদের উন্নয়নে এর লক্ষ্যে এবং সেই সাথে নতুন কৃষি উদ্যোক্তা তৈরির লক্ষ্যে ঋণ দিয়ে থাকে ইসলামী ব্যাংক। অত্যাধুনিক ঋণের সেবায় এখন তরুণ প্রজন্ম কৃষির দিকে ঝুঁকছে।
কৃষি ঋণ নেওয়ার প্রয়োজনীয় সরজ্ঞাম:
একটি দেশের উন্নয়নের অর্থনীতি অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। একটি দেশের উন্নয়নে অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের প্রচার এবং প্রসার দেশের অর্থনীতির উন্নয়ন সাধিত হয়।
তাই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য প্রচার এবং প্রসারের ক্ষেত্রে ইসলামি ব্যাংক ব্যবসায়ীদেরকে লোন প্রদানের সুবিধা দিয়ে থাকে। এই লোনের আওতায় একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের শুরু থেকে পণ্য মজুদ সকল ধরণের সুবিধা প্রদান করা হয়ে থাকে।
ইসলামি ব্যাংকের আওতায় এই ঋণ সুবিধা প্রদানে আপনার লাগবে।
সময়ের সাথে সাথে দেশে নানান ধরনের ব্যবসা খাত তৈরি হয়েছে। রিয়েল এস্টেট ব্যবসা তার মধ্যে একটি। বর্তমান সময়ে মধ্যে অন্যতম একটি জনপ্রিয় ব্যবসা হল রিয়েল এস্টেট ব্যবসা।
তাই, দেশের রিয়েল স্টেট ব্যবসা সম্প্রসারণ লক্ষ্যে রিয়েল এস্টেস্ট ব্যবসায়ীদের ইসলামি ব্যাংক ঋণ প্রদানের সুবিধা প্রদান করে থাকে। রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ীরা এই ঋণ গ্রহণ করে নিজেদের ব্যবসা উন্নয়নে ভূমিকা পালন করতে পারবে।
রিয়েল এস্টেট ঋণ গ্রহণে যে যে সুবিধা প্রয়োজন হবে তা হল:
এই ছিল আজকে, ইসলামী ব্যাংক লোন পদ্ধতি নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা। ঋণ সুবিধা আমাদের দৈনন্দিন জীবনের জীবন মান উন্নয়নের ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
ব্যাংকসমূহের এই সুবিধার আলোকে কতশত মানুষের জীবনদান উন্নত হচ্ছে তার হিসাব করা ভার। অদূর ভবিষ্যতে তাই সেই ধারা অব্যাহত থাকবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
আর কিছু লেখা