শিং মাছ চাষে পোনা মজুদ ও খাদ্য ব্যবস্থাপনা কেমন হবে তা মৎস্য চাষিদের সঠিকভাবে জেনে রাখতে হবে। আগের দিনে নদ-নদীতে প্রচুর পরিমাণে শিং মাছ পাওয়া গেলেও এখন আর তেমন দেখা যায় না। তাই এখন অনেকেই পুকুরে শিং মাছের চাষ করে থাকেন। চলুন আজকে জানবো শিং মাছ চাষে পোনা মজুদ ও খাদ্য ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে-
শিং মাছ চাষে পোনা মজুদ ও খাদ্য ব্যবস্থাপনাঃ
কার্প জাতীয় মাছের সাথে প্রতি শতাংশে ৩০টি পর্যন্ত- আঙ্গুল সাইজের শিং মাছের পোনা ছাড়তে হবে। পোনা মজুদের সময় পোনাকে এন্টিফাঙ্গাস মেডিসিনে গোসল দিয়ে তারপর পুকুরে ছাড়তে হবে। কার্প জাতীয় মাছ ছাড়া তেলাপিয়া এবং পাঙ্গাসের সাথেও শিং মাছের মিশ্রচাষ করা যায়। সে ক্ষেত্রে প্রতি শতাংশে ৫০টি পর্যন্ত- শিং মাছের পোনা মিশ্রভাবে ছাড়া যায়।কার্প জাতীয়, তেলাপিয়া বা পাঙ্গাসের সাথে শিং মাছ চাষ করলে বাড়তি খাবারের প্রয়োজন হয় না। পুকুরের তলায় উচ্ছিষ্ট খাবার খেয়েই এরা বড় হয়ে থাকে। উপরোন্ত- এই জাতীয় মাছের পুকুরে শিং মাছ মিশ্রভাবে চাষ করলে পুকুরে অ্যামোনিয়াসহ অন্যান্য গ্যাসের কম হয়।
একক চাষে শিং মাছ চাষ – প্রতি শতাংশে ৫০০ থেকে ১০০০ টি পর্যন্ত ছাড়া যায়। এবং এটা বেশী লাভজনক।
খাবার প্রয়োগঃ
পুকুরে শিং মাছের পোনা মজুদের পর প্রথম ১০ দিন দৈনিক মাছের ওজনের ২০% খাবার প্রয়োগ করতে হয়। ছোট থাকা শিং মাছ সাধারণত রাতের বেলায় খেতে পছন্দ করে; তাই ২০% খাবারকে দু’বেলায় সমান ভাগ করে সন্ধ্যার পর অর্থাৎ ভোরের দিকে একটু অন্ধকার থাকতে পুকুরে প্রয়োগ করতে হয়।
মাছ মজুদের ১১ তম দিন থেকে ২০ দিন ১৫% হারে এবং এর পরের ১০ দিন মাছের ওজনের ১০% হারে পুকুরে খাবার প্রয়োগ করতে হয় একই নিয়মে। এভাবে এক মাস খাবার প্রয়োগের পর ৫% হারে পুকুরে খাবার দিতে হবে। শিং মাছ ছোট থাকা অবস্থায় রাতে খাবার খেলেও ৩ ইঞ্চির মত সাইজ হওয়ার সাথে সাথে দিনের বেলাতে খাবার দিতে হবে। সন্ধ্যার পর যে খাবার দেয়া হত সেটি সন্ধ্যার একটু আগে এগিয়ে এনে আস্তে আস্তে বিকেলে দিতে হবে। অন্যদিকে ভোর বেলার খাবারও এমনি করে সকাল ৯/১০ টার দিকে পিছিয়ে নিতে হবে। শিং মাছের ওজন ১৫ গ্রাম হলে ৩% এর অধিক খাবার দেয়া মোটেই ঠিক নয় এবং বিক্রির আগ পর্যন্ত এই নিয়মই বজায় রাখতে হবে।
আরও পড়ুনঃ মাছ চাষে সফল হতে পুকুর প্রস্তুতিতে করণীয়
মৎস্য প্রতিবেদন / আধুনিক কৃষি খামার