মাছ চাষের পুকুরে কতিপয় সমস্যা ও তার প্রতিকার মৎস্য চাষিদের ভালোভাবে জেনে রাখতে হবে। বর্তমানে পুকুরে মাছ চাষ ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। তবে পুকুরে মাছ চাষ করতে গিয়ে অনেকেই সমস্যায় পড়ে থাকেন। চলুন তাহলে আজ জানবো মাছ চাষের পুকুরে কতিপয় সমস্যা ও তার প্রতিকার সম্পর্কে-
কার্বন-ডাই-অক্সাইড জনিতঃ
পুকুরে কোন কারনে মুক্ত কার্বন-ডাই-অক্সাইডের পরিমান অত্যাধিক বেড়ে গেলে মাছের দেহে বিষক্রিয়া শুরু হয়। পুকুরের পানিতে মুক্ত কার্বন-ডাই-অক্সাইডের প্রয়োজনীয় মাত্রা উর্ধ্বে ১২ মিলিগ্রাম/লিটার।
লক্ষণঃ
প্রতিকারঃ
খাবি খাওয়া বা অক্সিজেনের অভাবঃ
পুকুরে এটি একটি সাধারণ সমস্যা। সকালের দিকে বা দিনের অন্যান্য সময় মাছ যদি পানির উপর ভেসে খাবি খায় তবে বুঝতে হবে পুকুরে অক্সিজেনের অভাব হয়েছে। মেঘলা দিনে অথবা কোন কোন সময় বৃষ্টির পরও অক্সিজেনের অভাব হতে পারে। পুকুরের পানিতে দ্রবীভূত অক্সিজেনের পরিমান ৫ মিলিগ্রাম/লিটার এর নীচে নেমে গেলে মাছের এ সমস্যা হতে পারে।
লক্ষণঃ
প্রতিকারঃ
এ্যামোনিয়াজনিত সমস্যাঃ
পানিতে এ্যামোনিয়া বেড়ে গেলে পানির রং তামাটে বা কালচে রংয়ের হয়, মাছ মরতে শুরু করে। পুকুরের পানিতে এ্যামোনিয়ার মাত্রা ০.০২৫ মিলিগ্রাম/লিটার এর উর্ধ্বে উঠলে এ সমস্যা হতে পারে।
লক্ষনঃ
প্রতিকারঃ
মাছের মজুদ ঘনত্ব কমাতে হবে।
সার ও খাদ্য প্রয়োগ সাময়িক বন্ধ রাখতে হবে।
পুকুরের পানি কমিয়ে নতুন করে পানি সরবরাহ করতে হবে।
পানির উপর সবুজ স্তরঃ
পানির রং ঘন সবুজ হয়ে গেলে বা পানির শেঁওলা স্তর পড়লে পুকুরে মাছের খাবার এবং সার দেওয়া বন্ধ রাখতে হবে।
লক্ষনঃ
এ অবস্থায় মাছ পানির উপরিভাগে খাবি খেতে পারে।
প্রতিকারঃ
শতাংশ প্রতি ১২-১৫ গ্রাম তুঁতে বা কপার সালফেট ছোট ছোট পোটলায় বেঁধে পানির উপর থেকে ১০-১৫ সেঃমিঃ নীচে বাঁশের খুটিতে বেঁধে রাখলে বাতাসে পানিতে ঢেউয়ের ফলে তুঁতে পানিতে মিশে শেঁওলা দমন করে।
প্রয়োজন হলে পানি পরিবর্তন করতে হবে।
শতাংশ প্রতি ১ কেজি হারে চুন প্রয়োগ করতে হবে।
সিলভার কার্পের মাধ্যমে জৈবিক নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে।
পানির উপর লাল স্তরঃ
প্রতিকারঃ
পানির ঘোলাত্বঃ
পুকুরে পানির ঘোলাত্ব অন্যতম প্রধান সমস্যা। পুকুরে অত্যাধিক ভাসমান পদার্থ বা ক্ষুদ্র মাটির কনা ঘোলাত্ব সৃষ্ঠি করে। এছাড়া বৃষ্টি ধোয়া পানিতে পুকুর ঘোলা হয়ে যেতে পারে। এর ফলে সূর্যের আলো প্রবেশে বাধা পায় এবং পানিতে খাদ্য তৈরি হয় না, মাছের ফুলকা নষ্ট হয়।
প্রতিকারঃ
পানিরে ক্ষারত্বঃ
পানিতে ক্যালসিয়াম বা ম্যাগনেসিয়াম কম বা বেশী হ্ওয়ার ফল্ওে সমস্যার সৃষ্টি হয়। ফলে মাছ সহজেই অম্লতা এবং বিষাক্ততার দ্বারা আক্রান্ত হয়। মাছ চাষের পুকুরে পানির ক্ষারত্বের উপযুক্ত মাত্রা ৪০-২০০ মিলিগ্রাম/লিটার।
প্রতিকারঃ
পিএইচ জনিত সমস্যাঃ
পানিতে পিএইচ কম থাকলে মাছের শরীর থেকে প্রচুর শ্লেষ্মা বেরিয়ে যায় এবং ফুলকা আক্রান্ত হয়। পিএইচ বেশী হলে পুকুরের প্রাকৃতিক খাদ্য উৎপাদন কমে যায় এবং মাছের খাদ্য চাহিদা কমে যায়। এ ছাড়া মাছের শরীর খসখসে হয়ে যায়, মাছ ক্রমে দূর্বল হয়ে পড়ে এবং সহজেই রোগে আক্রান্ত হয়। পুকুরের পানিতে পিএইচ গ্রহণযোগ্য মাত্রা ৭-৯।
প্রতিকারঃ