লেবু ও মাল্টা চাষে মোসলেম উদ্দিনের অভাবনীয় সাফল্য এসেছে। একদিন দুপুরের খাওয়ার সময় বাড়ির আঙিনায় লাগানো গাছে প্রচুর লেবু ঝুলতে দেখে বাণিজ্যিকভাবে লেবু চাষের স্বপ্ন দেখেন তিনি। তার সেই লালিত স্বপ্নই আজ তার হাতের মুঠোয় ধরা দিয়েছে। গাছে গাছে ঝুলছে থোকা থোকা সিডলেস লেবু ও বারি-১ জাতের মাল্টা।
জানা যায়, মাত্র ৯ বছর আগেও অন্যের জমিতে দিন মজুরের কাজ করতেন মোসলেম উদ্দিন। সাত সদস্যের দরিদ্র পরিবারের খরচ মেটাতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছিলেন তিনি। কোনোভাবেই যেন চলছিল না তার দিনকাল। অভাবের সংসারের ঘানি টানতে পথে পথে বাদাম বিক্রি ও ভাঙারি বিক্রির কাজও করেছেন। তাতেও ভাগ্যের চাকা ঘোরেনি মোসলেমের। তবে এখন তিনি উপজেলার একজন সফল লেবু ও মাল্টা চাষি। বাগানের লেবু, পেপে, মাল্টা এবং আগাম জাতের টক বরই বিক্রি করে আজ তিনি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন।
মোসলেম উদ্দিন বলেন, ২০১৩ সালে প্রথম দিকে ওই জমির ওপর তার গাছের কলম এবং নরসিংদী ও টাঙ্গাইলের লাউহাটি থেকে আনা সিডলেস ও এলাচি জাতের ৫ হাজার ২০০ চারা লাগান। একই সঙ্গে সাথী ফসল হিসেবে ওই জমিতে ২ হাজার পেঁপের চারাও লাগানো হয়। এসময় ব্যাংক থেকে আরও ৭ লাখ টাকা ঋণ নেন। প্রথম ৬ মাসেই পেঁপে বিক্রি করে চার লাখ টাকা আয় হয়।
তিনি আরও বলেন, তার এই বাগান দেখতে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন আসেন। তাদের লেবু ও মাল্টা চাষ করতে উৎসাহ দেন তিনি। বর্তমানে এ উপজেলায় ৮টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় প্রায় সাড়ে ৫০০ মাল্টা চাষি ৩৬০০ হেক্টর জায়গাজুড়ে মাল্টা বাগান গড়ে তুলেছেন। এছাড়া এ উপজেলার প্রতিটি বাড়ির আঙ্গিনায়ও ছোট ছোট আকারের অসংখ্য মাল্টা বাগান রয়েছে।
উপজেলার কৃষি অফিসার নূরুল ইসলাম জানান, এ অঞ্চলের মাটি মাল্টা ও লেবু চাষের জন্য বেশ উপযোগী। মোসলেম উদ্দিনের বাগান দেখে অনেকেই মাল্টা ও লেবু চাষে উৎসাহী হচ্ছেন।