কার্প মাছের ফ্যাটেনিং পদ্ধতিতে চাষ ও কিছু গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য মৎস্য চাষিদের সঠিকভাবে জেনে রাখা দরকার। কার্প মাছ চাষ লাভজনক হওয়ায় দিন দিন এই মাছ চাষে আগ্রহ বাড়ছে মৎস্য চাষিদের। কার্প মাছ চাষে ফ্যাটেনিং খুবই গুরুত্বপূর্ণ। চলুন আজকে জেনে নেই কার্প মাছের ফ্যাটেনিং পদ্ধতিতে চাষ ও কিছু গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে-
ফ্যাটেনিংঃ
সহজভাবে কার্প জাতীয় মাছকে নির্দিষ্ট ঘনত্বে,পানির গুণাগুণ রক্ষা করে এবং সুষম খাবার নিশ্চিত করার মাধ্যমে অতি অল্প সময়ে দ্রুত বড় করার পদ্ধতিকেই কার্প ফ্যাটেনিং বলা হয়।
পুকুরের আয়তন এবং গভীরতাঃ
এক্ষেত্রে আমি মনে করি পুকুরের আয়তন ১০০ শতাংশ/১ একর থেকে ৫ একর পর্যন্ত হওয়া আদর্শ। পুকুরের পানির গভীরতা ৬-৯ ফুট থাকা সবচেয়ে ভাল ।
পুকুর প্রস্তুতিঃ
অন্যান্য চাষের ন্যায় একইভাবে পুকুর প্রস্তুত করতে হবে।
মজুদকালীন সময়ঃ
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে মজুদকালীন সময়। অভিজ্ঞতায় বলে এপ্রিলে মাঝামাঝি সময়ে পোনা মজুদ করতে পারলে ডিসেম্বর এর আগেই মাছ কাংখিত(রুই ২-২.৫ কেজি,কাতল ৪ কেজির, সিলভার,বিগহেড, ৪.৫-৫ কেজির উপর,মৃগেল, কালিবাউশ ১.৫-১.৮ কেজি) গ্রোথে চলে আসে।
মজুদ ঘনত্বঃ
ফ্যাটেনিং এর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এ মজুদ ঘনত্ব। আমি আমার অভিজ্ঞতার আলোকে বলতে পারি শতাংশে ১৮-২০ টি তিন স্তরের মাছ মজুদ করাই কার্প ফ্যাটেনিং এর জন্য সবচেয়ে আদর্শ মজুদ ঘনত্ব। মজুদকালীন মাছের ওজন ৫০০-৭০০ গ্রাম মধ্যে হতে হবে।
তিন স্তরের মাছের মধ্যে-
কাতলা =১ টি/শতাংশ,
সিলভার =১ টি/শতাংশ
বিগহেড =১ টি/শতাংশ
রুই = ৯ টি/শতাংশ
গ্রাসকার্প =১টি/শতাংশ
মৃগেল = ৪ টি/শতাংশ,
কার্পিও = ৩ টি/শতাংশ
এছাড়া সাথি ফসল হিসেবে দেশী মাগুর ও টেংড়া মাছ অল্প পরিমাণে মজুদ করা যেতে পারে।
সুষম খাবারঃ
২৫-২৬% প্রোটিন যুক্ত হাতে বানানো খাবার হলে সব থেকে ভাল।
কোম্পানির খাবারও ব্যবহার করে লাভ করা সম্ভব। তবে মাছের জন্য ডুবন্ত খাবার আদর্শ।
ফ্যাটেনিং এর সময় প্রতিদিন মাছের দেহের ওজনের ৫% খাবার চাহিদা থাকে। পর্যাপ্ত প্রাকৃতিক খাবারের ব্যবস্থা করতে পারলে ৩% খাবার দিলেই চলবে।
প্রাকৃতিক খাবারের জন্যঃ
প্রতি সপ্তাহে, পুরাতন গোবর – ১ কেজি; ইউরিয়া – ৫০ গ্রাম; টিএসপি – ৫০ গ্রাম; এমওপি – ১০ গ্রাম প্রয়োগ করা যেতে পারে।
বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষে পানির গুণাগুণ