Future of Bangladesh’s Stock Market
বিশ্বের কয়েকটি দেশ যেমন ইয়েমেন, ভ্যাটিকান সিটি, আফগানিস্তান, গাম্বিয়া, উত্তর কোরিয়া সহ আরো ২/১টি দেশ ছাড়া সকল দেশে স্টক এক্সচেঞ্জ তথা শেয়ার বাজার আছে।
বিশ্বের সকল দেশের শেয়ার বাজারকে চারটি শ্রেণীতে ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন Developed market, Emerging market, Frontier market এবং least developed মার্কেট।
কিছু দিন আগেও আমরা least developed মার্কেট শ্রেনীতে থাকলেও এখন আমাদের অবস্থান Frontier market এ।
Frontier market বলতে বোঝায় আমরা স্বল্পোন্নত দেশগুলির চেয়ে ভালো আছি, তবে Emerging market এর চেয়ে বেশ পিছিয়ে আছি।
Frontier market এ বাংলাদেশ সহ আরো আছে Bahrain, Iceland, Jordan, Kenya, Oman, Romania, Sri Lanka, Vietnam সহ আরো কিছু দেশ। আমাদের পরবর্তী লক্ষ্য হচ্ছে Emerging market এ প্রবেশ করা।
এর মার্কেট উল্লেখযোগ্য যেসব দেশ আছে তা হলো, ভারত, রাশিয়া, পাকিস্তান, সৌদি আরব, চায়না এবং ব্রাজিল।
যে কোনো দেশের অর্থনীতিতে শেয়ার বাজার বা পুঁজি বাজার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
আমাদের মত উন্নয়নশীল দেশের অর্থনীতিতে শেয়ার বাজারের গুরুত্ব কোনো ভাবেই অস্বীকার করার সুযোগ নেই। বিশেষ করে শিল্প এবং উৎপাদন খাতে দীর্ঘমেয়াদী পুঁজির জোগান নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে শেয়ার বাজারের কোনো বিকল্প নেই। আমাদের দেশে দুইটি স্টক এক্সচেঞ্জ আছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ ও চট্রগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ। শেয়ার ব্যবসার কার্যক্রম এই দুই বাজারের চলে। দুইটা স্টক এক্সচেঞ্জ থাকার পরও আমরা বেশ পিছিয়ে আছি। এর কারন অনেক আছে, বিশেষ করে শেয়ার বাজার সম্পর্কে আমাদের দেশের মানুষের ধারনা খুবই সীমিত, যতটুকু ধারনা আছে এর মধ্যে নেগেটিভ ধারনাই বেশি।
এই নেগেটিভ ধারনা একদিনে সৃষ্টি হয় নি। এত বেশি নেগেটিভ ধারনা থাকার পরও বর্তমানে শেয়ার বাজারের প্রতি সাধারন মানুষের আগ্রহ আশানুরূপ।
প্রবাসী আয় এবং পোশাক শিল্প থেকে বৈদেশিক মুদ্রা আমাদের দেশে অর্থনীতির অন্যতম স্তম্ভ। সারা বিশ্বের সাথে পাল্লা দিয়ে আমরাও এশিয়ার অর্থনীতির একটি পরাশক্তি দেশ হতে পারি।
বাংলাদেশের শেয়ার বাজারে ভবিষ্যত কি এর উত্তর জানার আগে আমাদের বুঝতে হবে আমরা বাংলাদেশকে কিভাবে দেখতে চাই? কেননা শেয়ার বাজার একটি দেশের অর্থনীতির ব্যারোমিটার।
দেশের জন্য ভালো বা খারাপ ঘটনা ঘটলে তা সঙ্গে সঙ্গে শেয়ার বাজারে প্রতিফলন ঘটে। যেমন আমাদের দেশে যখন প্রথম করোনা সনাক্ত হলো এর পর থেকে কিছু দিনের জন্য এর নেগেটিভ প্রভাব বাজারে পরেছে।
আজকে দেখুন দেড় বছরের মাথায় এই করোনার কোন নেগেটিভ প্রভাব এখন আর বাজারে নেই। বরং, বিগত ৫ বছরের মধ্যে মার্কেট এখন যথেষ্ট স্থিতিশীল। একটা বিষয় আমাদের মনে রাখতে হবে, বিশ্বের কোন দেশের শেয়ার বাজার শুধু বাড়বে এমন কোন নজির নেই। শেয়ার বাজারের ধর্ম হলো দাম উঠা-নামা করা।
তবে বিপত্তি ঘটে তখনই যখন কোন যুক্তিযুক্ত কারন ছাড়া শেয়ারের দাম বাড়ে বা কমে। বর্তমানে আমাদের দেশে সিকিউরিটিস অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন এই বিষয়ে খুবই সতর্ক। আগেও যে সতর্ক ছিল না তা বলা যাবে না, তবে অন্য যে কোন সময়ের চেয়ে যথেষ্ট কার্যকারী এই কমিশন যা একটি শক্তিশালী শেয়ার বাজারের ইশারা করে।
একটি দেশ কতটা উন্নত তা অনেকটা নির্ভর করে সেই দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার উপর। বর্তমানে আমাদের চলমান দুইটি প্রজেক্ট হলো, পদ্মা সেতু এবং মেট্রো রেল।
এই দুইটি প্রকল্পের কাজ শেষ হলে আমাদের যোগাযোগ ব্যবস্থার আমুল পরিবর্তন হবে। যা পরোক্ষ এবং প্রত্যক্ষ ভাবে শেয়ার বাজারে পজিটিভ ধারনা প্রভাব ফেলবে।
এর পরে আসি, ব্যাংক লোন প্রদানে কড়াকড়ি হওয়ায় বড় শিল্প উদ্যোক্তাগন শেয়ার বাজারকে অর্থের উৎস হিসাবে আগ্রহী হয়ে পড়েছে যা একটি শক্তিশালী মার্কেট পাওয়ার জন্য কার্যকারী ভূমিকা রাখবে।
সরকার, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন, সিডিবিএল, স্টক এক্সচেঞ্জ সহ বাজারে সাথে জড়িত সকলের প্রচেষ্টায় আমরা বর্তমানের থেকে অনেক ভালো একটি বাজার আশা করতে পারি।
এই ভালো মার্কেট পাওয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের দুইটি বিষয়ে খুবই জোড়ালো নজর দিতে হবে।
প্রথমটি হচ্ছে, বাজারে আসতে চাওয়া নতুন কোম্পানিগুলো লিস্টেড করার আগে ভালো ভাবে যাচাই-বাচাই করতে হবে এবং বর্তমানে বাজারে থাকা কোম্পানিগুলোর স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে।
দ্বিতীয় বিষয়টি হচ্ছে, শেয়ার বাজার সম্পর্কে বেশি বেশি শিক্ষাকার্যক্রম অব্যাহত রাখতে হবে। ভিজিট করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল – Bangla Preneur YouTube Channel