শুক্রবার, ০৯ জুন ২০২৩, ০৯:৩৭ পূর্বাহ্ন

জুতার ব্যবসা আইডিয়া – Priyocareer

  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ২১ অক্টোবর, ২০২১
girl face

মানুষের নিত্যদিনের সঙ্গী হচ্ছে জুতা। বাইরে বের হওয়ার জন্য আমাদের দরকার এক জোড়া জুতা। এই জুতার ব্যবসা হতে পারে একটি লাভজনক ব্যবসা।

কমবেশি অনেকেরই ব্যবসা করার ইচ্ছা থাকে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্যবসা করার আগে এই চাহিদা এবং বাজার সম্পর্কে জানা জরুরি হয়ে পরে। তবে, জুতার ব্যবসা এর ব্যাতিক্রম। কেননা জুতা মানুষের অবশ্যক একটি জিনিস।

কিন্তু, সব জুতা আবার আবশ্যিক বিষয় নয়। যেমন আপনি যদি অভিজাত এলাকায় বার্মিজ জুতার দোকান দেন, সেক্ষেত্রে খুব বড় জোর বাথরুমের স্যান্ডল কিছুটা চলবে, কমদামীগুলো চলবে না। তাই, দোকান দেয়ার আগে আপনার গ্রাহক করা, সেটা খেয়াল রাখতে হবে। আজকের এই লেখায় জুতার বিজনেস নিয়ে বিস্তারিত বলা হবে।

জুতার ব্যবসা আইডিয়া

১. শুরু করা

যেকোন ব্যবসা শুরু করার প্রাথমিক ধাপ হলো, নতুন ব্যবসা পরিকল্পনা করা। জুতার ব্যবসাও তাই। শুরুতেই ব্যবসা নিয়ে একটি পরিকল্পনা করে ফেলতে হবে।

জুতা যেহেতু সবাই পরে, তাই কাদের জুতা নিয়ে কাজ করতে ইচ্ছুক সেটাও বাছাই করতে হবে।

  • জুতার দোকানটি পুরুষের জুতা হবে?
  • নাকি মেয়েদের জুতা হবে?
  • নাকি বাচ্চাদের জুতা হবে সেদিক বিবেচনা করতে হবে।

তবে এখন অনেকেই দোকানে সব ধরনের জুতা রাখে, তাতে কোন কাস্টমার ফেরত যায় না। আবার জুতা সাধারনত দুই ধরনের হয়ে থাকে।

  • ব্র্যান্ডের
  • নন ব্র্যান্ডের।

আমাদের দেশে কিছু নামীদামি ব্র্যান্ড আছে যেগুলে হলো বাটা, এপেক্স, লট্টো, বে, ওরিয়ন ইত্যাদি। এছাড়া বহু নন ব্র্যান্ডের জুতার দখলে আজকের বাজার। দোকানের একটি সুন্দর নাম বাছাই করে ব্যবসার কাজ শুরু করতে হবে।

২. পুঁজি ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

যেকোন ব্যবসার ক্ষেত্রে পুঁজি খুব জরুরি। পুঁজির যোগান যথাযথ হলে ব্যবসা শুরু করতে সুবিধা হয়ে থাকে। আর পুঁজি যথেষ্ট না হলে ভেবে চিন্তে কাজ করতে হয়।

তবে প্রাথমিক ভাবে জুতা কেনার ক্ষেত্রে ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা ইনভেস্ট করা যেতে পারে। বাকি ব্যয় ও বিবেচনায় রাখতে হবে। যেমন,

  • জায়গা ভাড়া বা দোকান ভাড়া
  • দোকান সাজানো
  • কর্মচারীর বেতন ইত্যাদি।

নিজের কাছে যথেষ্ট পরিমান পুঁজি না থাকলে ব্যাংক থেকে লোন নিতে হবে।

যেকোন ধরনের ব্যবসা শুরু করতে কিছু কাগজপত্র দরকার হয়। যেমন:

  • ট্রেড লাইসেন্স
  • টিন সার্টিফিকেট
  • ভ্যাট রেজিস্ট্রেশন

ছোট বড় সব ব্যবসায় ট্রেড লাইসেন্স দরকার হয় তবে অনেকেই ছোট ব্যবসার ক্ষেত্রে এটি করে না। কিন্তু বড় বড় ব্যবসায় ট্রেড লাইসেন্স না থাকলে ভালো কোন প্রতিষ্ঠানের সাথে সম্পর্ক তৈরি করা যায়না। তাছাড়া, ব্যবসায়িক যে কোন লেনদেন করতে হলে ট্রেড লাইসেন্স জরুরি।

৩. জুতার পাইকারি বাজারের অবস্থান

যে কোন ব্যবসায়ই শুরুতেই পাইকারি বাজার সম্পর্কে ধারনা রাখতে হবে। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় পাইকারি জুতার বাজার হলো গুলিস্থানের দক্ষিণ দিকের ফুলবাড়িয়া জুতার বাজার।

ঠিকানা: এটি মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের উত্তর দিকে। গুলিস্থান মেইন রোড থেকে পূর্ব পশ্চিম দিকে দুইটি ভবন আছে যেখানে পাইকারি জুতা বিক্রি করা হয়ে থাকে। এইখানে দেশিয় বিভিন্ন ব্র্যান্ড থেকে শুরু করে ইন্ডিয়ান, চায়না বা থাইল্যান্ডের জুতাও পাওয়া যাবে।

ঢাকার চকবাজারেও রয়েছে পাইকারি বাজার।

ঠিকানা: চকবাজারের দক্ষিণ দিকে রয়েছে জুতার বাজার। তবে এখানে খুব ভালো মানের জুতা পাওয়া যাবে না। এখানে সাধারনত বাচ্চাদের খেলনা জুতা সহ বাচ্চাদের ও মেয়েদের জুতা বা ছেলেদের বার্মিজ ধরনের জুতা পাওয়া যায়।

জুতার অপর একটি পাইকারি বাজার হচ্ছে ঢাকার যাত্রাবাড়িতে।

ঠিকানা: যাত্রাবাড়ির দক্ষিন দিকের পোস্তগোলা ব্রিজ এর সামনে জুরাইন রেলগেট এর কাছাকাছি রয়েছে আলম সুপার মার্কেট। এখানে সাশ্রয়ী মূল্যে বিভিন্ন স্লিপার, প্লাস্টিকের জুতা ও বার্মিজ জুতা পাওয়া যায়।

কিছু পাইকারি জুতার মার্কেটের ঠিকানা ও ফোন নাম্বার

  • রবিন সুজ: ৫৩,ঢাকা ট্রেড সেন্টার(২য় তলা) গুলিস্তান,ঢাকা-১০০০ ইমো- 01912-794393, 01707-564677
  • নাফিসা সুজ: মোঃখুরশিদ আলম মোবাঃ০১৭১৭-৮৮৪১৯৮ ০১৬৭৭-৩৪৯৩০৭ এখানে সকল প্রকারের চামড়ার জুতা,বার্মিজ সেন্ডেল পাইকারি বিক্রয় করা হয় ১৭ নং সোয়ারিঘাট রোড,চকবাজার ,ঢাকা-১২১১
  • ষ্টার লিবার্টি সুজ: ১০৬, ঢাকা ট্রেড সেন্টার (২য় তলা) সাবেক বঙ্গবাজার, গুলিস্তান, ঢাকা-১০০০। মোবাঃ ০১৭২৪-৩৫৫৭২২ ০১৯২৯-৩৯৩৮০৫
  • আল-নূর এন্টারপ্রাইজ: দোকান নং-১০০ ঢাকা ট্রেড সেন্টার (সাবেক বঙ্গবাজার) ৩য় তলা। মোবাঃ ০১৮১৯-৪২৩৮৩২ নজরুলঃ ০১৬৮১-৯২৫৬৭৭ ফোনঃ ৯৫৮৫১১৯৯
  • এবি ট্রেডার্স: ঢাকা ট্রেড সেন্টার, গুলিস্তান, ২য় তলা, মোবাইল ও ইমো: 01682251468 01618545253

৪. জুতার দোকানের ডেকোরেশন

জুতার ব্যবসা
জুতার ব্যবসা

জুতার দোকানের জন্য একটি সুন্দর জায়গা বাছাই করতে হবে। দোকানটি অবশ্যই বড় রাস্তার পাশে বা যেখানে প্রচুর লোক সমাগম হয় সে স্থানে হওয়া উচিত।

যেখানেই হোক দোকানটি অবশ্যই গোছানো ও পরিপাটি হতে হবে। জুতা সাজিয়ে রাখার জন্য সেলফ থাকতে হবে। দোকানের ভিতর পর্যাপ্ত জায়গা থাকতে হবে যাতে ক্রেতা ঘুরে ঘুরে দেখে পণ্য পছন্দ করতে পারে।

ক্রেতা যাতে দোকানে বসে জুতা ট্রায়াল দিতে পারে তার জন্য পরিষ্কার ও পরিপাটি তিন চারটা সোফা রাখতে হবে। এটা অবশ্য দোকানের আকারের উপর নির্ভর করে কম বেশি হতে পারে।

দোকানে আয়না থাকতে হবে যাতে জুতা পায়ে দিয়ে কেমন দেখাচ্ছে তা খুব সহজেই দেখতে পারে। আয়নাটি বড় সাইজের হলে ভালো হয়। এছাড়া দোকানে বিক্রেতার একটি আসনের ব্যবস্থা থাকতে হবে যেমন একটি চেয়ার এবং একটি টেবিল।

এছাড়া কিছুদিন পর পর ডিসপ্লে পরিবর্তন করে দিলে ভালো হয়। দোকানের আলোকসজ্জার দিকেও নজর দিতে হবে।

৫. অনলাইন বা ফুটপাতে বিক্রি

জুতার ব্যবসা অনলাইন বা ফুটপাতেও শুরু করা যায়। তবে অনলাইনে বিক্রি করতে হলে এ বিষয়ে যথেষ্ট ধারনা থাকতে হবে কারন জুতা ক্রয়ে সাইজটা জরুরি। জুতার সাইজ ঠিক না হলে জুতা পরা যায় না। অনলাইনে জুতা ক্রয়ে সাইজ নিয়ে সমস্যায় পড়তে হয় তাই খুব বেশি অভিজ্ঞতা না থাকলে অনলাইনে জুতার ব্যবসা না করাই ভালো।

ফুটপাতে জুতার ব্যবসা জমজমাট হয়ে থাকে। নিম্নবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত বা মধ্যবিত্ত অনেকেই ফুটপাত থেকে জুতা কিনতে অনেক সময় স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। বড় দোকানগুলোতে দাম বেশি থাকায় ফুটপাতই অনেকের ভরসা হয়।

তাছাড়া ফুটপাতে ব্যবসা শুরু করার জন্য খুব বেশি পুঁজিও দরকার হয় না। তবে জায়গা ভেদে সাপ্তাহিক বা মাসিক চাঁদা দিতে হয়। চাঁদা দিতে হলেও অন্য সব বড় দোকান থেকে ফুটপাতে জুতার ব্যবসা বেশি লাভজনক।

৬. জুতার ব্যবসা কেমন লাভ?

জুতা আমাদের নিত্যদিনের সঙ্গী। আমাদের দেশে প্রতি বছর জুতার চাহিদা বাড়ছে। তাই সঠিক পরিকল্পনা নিয়ে এগুলো জুতার ব্যবসায় সফলতা সম্ভব। সাধারনত বড়দের জুতার চেয়ে শিশুদের জুতার চাহিদা বেশি থাকে।

শিশুরা বাড়ে দ্রুত তাই তাদের জুতাও অল্প দিনেই ছোট হয়ে যায়। কিছু শিশু চঞল থাকে তাই জুতা সহজেই নষ্ট করে ফেলে।

আবার বড়রা পুরানো একটি জুতা দিয়ে অনেকদিন চলতে পারলেও শিশুরা নতুন জুতা চায়। সবদিক বিবেচনায় শিশুদের জুতার চাহিদা বেশি থাকে। আবার ফ্যাশন সচেতন নারীরা পোশাকের সাথে ম্যাচিং করে জুতা কিনতে পছন্দ করে থাকে। তাই শিশুদের জুতার পরেই মেয়েদের জুতার চাহিদা বেশি। সবশেষে দেখা যায় পুরুষদের জুতার চাহিদা সবচেয়ে কম।

৭. বিক্রি বৃদ্ধির উপায়

জুতার বাজার একটি প্রতিযোগিতামূলক বাজার। এখানে টিকে থাকতে হলে প্রচুর পরিশ্রম দরকার হয়। প্রতিদিন নতুন নতুন আইডিয়া কাজে লাগাতে হবে। জায়গা বুঝে জুতার দাম নির্ধারণ করতে হবে। মার্কেটিং করার কৌশল

শহর এলাকায় ফিক্সড দামে জুতা বিক্রি করা যেতে পারে আবার গ্রাম্য এলাকায় দামাদামি করে জুতা বিক্রি করা যেতে পারে। দোকানকে আকর্ষণীয়ভাবে সাজাতে হবে যাতে ক্রেতা আকৃষ্ট হয় বেশি। দোকানে সব ধরনের জুতা রাখতে হবে এবং ভালো মানের জুতা রাখতে হবে।

৮. সতর্কতা

জুতার ব্যবসায় তেমন কোন বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করার দরকার হয় না। তেমন কোন অভিজ্ঞতার ও দরকার হয় না। তাই বাজার সম্পর্কে আইডিয়া নিয়ে সুন্দর একটি পরিকল্পনা নিয়ে যে কেউ এই ব্যবসা শুরু করতে পারে।

উপসংহার

এই ছিল আজকে জুতার ব্যবসা আইডিয়া নিয়ে সংক্ষিপ্ত লেখা। ব্যবসায় সফল হওয়ার উপায় নিয়ে এই লেখাটি পড়তে পারেন, যদি আপনি ব্যবসা শুরু করতে চান।



Source by [সুন্দরবন]]

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Recent Posts

© 2023 sundarbon24.com|| All rights reserved.
Designer:Shimul Hossain
themesba-lates1749691102