শেয়ারের মূল্য বাড়ে বা কমে কেন
আমরা জানি একটা কোম্পানির শেয়ার সাধারনত একই দামে লেনদেন হয় না। অনেক সময় দেখা যায় একই দামে শেয়ারটি লেনদেন শেষ হয়েছে, যদিও এর সংখ্যা খুব বেশি না।
সাধারনত একটা শেয়ার এর মূল্য বাড়া বা কমার পিছনে অনেক কারন থাকে। তবে শেয়ার এর মূল্য বাড়া বা কমার পিছনে একমাএ ভূমিকা থাকে বিনিয়োগকারীদের।
যখন কোনো শেয়ারের ক্রেতা বেড়ে যায় এবং বিক্রেতা কমে যায় তখন এর দাম বাড়ে আর যখন বিক্রেতা বেড়ে যায় ক্রেতা কমে যায় তখনই এর দাম কমে।
যদি বেশির ভাগ ক্রেতা মনে করে একটি কোম্পানির শেয়ার এখন যেই দামে লেনদেন হচ্ছে এই দামে কিনতে পারলে সামনে আরো ভালো দাম পাওয়ার সুযোগ পাওয়া যাবে তাহলে দাম বাড়া শুরু করে।
আর যখন বেশির ভাগ বিক্রেতা মনে করে, এই কোম্পানিটি সামনে ভালো নাও করতে পারে এবং এখন যেই দামে লেনদেন হচ্ছে এর থেকে আরো কমার সম্ভাবনা আছে তাহলে সেই শেয়ারের দাম কমতে পারে।
মূলকথা, ক্রেতার চাপ থাকলে শেয়ারের মূল্য বাড়ে, আর বিক্রেতার চাপ থাকলে কমে।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে একটা শেয়ারের প্রতি ক্রেতার আগ্রহ বাড়ে কখন?
যেমন এটা হতে পারে এই কোম্পানির গত বছরের থেকে বেশি লভ্যাংশ দিয়েছে, কোম্পানির ইনকাম ভাল হচ্ছে, একই ক্যাটাগরির কোম্পানির পারফরমেন্স অনুযায়ী দাম বর্তমানে কম আছে, কোম্পানির ব্যয় কমবে, অধিক পরিমানে ব্যবসা বাড়বে কিংবা এই কোম্পানির আরেকটি ব্যবসা শুরু করতে যাচ্ছে, ইত্যাদি নানা কারনে দাম বাড়তে পারে এবং এর বিপরীর ঘটনা ঘটলে দাম কমতে পারে।
এখন আরেকটা প্রশ্ন আমাদের মাথায় আসতেই পারে। যেমন সকল কোম্পানির শেয়ারের ফেইস ভ্যালু ১০ টাকা।
তাহলে কেন একটা শেয়ারের দাম ১০০ টাকা, যেখানে অন্য একটা শেয়ারের দাম ১৫ টাকা?
এটি মূলত ঘটে স্লাপলাই ও ডিমান্ডের কারনে।
ধরুন, একটা কোম্পানির নাম “এ”, আরেকটি কোম্পানির নাম “বি”। এদের উভয়ের শেয়ার প্রতি ইনকাম বা ইপিএস ১টাকা।
কোম্পানির “এ” এর দাম ১০০ টাকা এবং কোম্পানির “বি” এর দাম ১৫ টাকা।
এই যে দামের তারতম্য, এটা ঘটতে পারে নানা কারনে, তবে প্রধান কারন থাকে কোম্পানির ফ্রী ফ্লোট বা বিক্রয়যোগ্য শেয়ার সংখ্যার উপর।
দেখা গেল কোম্পানি “এ” এর মোট শেয়ার ১ কোটি তাই দাম ১০০ টাকা আর কোম্পানির “বি” মোট শেয়ার ১০ কোটি তাই দাম ১৫ টাকা।
যহেতু কোম্পানির “এ” এর শেয়ার সংখ্যা বাজারে কম তাই ডিমান্ডও বেশি, আর কোম্পানি “বি” এর শেয়ার সংখ্যা বেশি অর্থাৎ, স্লাপলাই বেশি তাই ডিমান্ড কম, তাই দামও কম।
এটি একটি কারন এছাড়া কোম্পানির আয়-ব্যয়, ব্যবসার ধরন, গ্রোথ ইত্যাদি নানা বিষয়ের সাথেও শেয়ারের দাম উঠা নামা করতে পারে।
যেমন কোম্পানি “এ” যদি ঘোষনা দেয় যে, তারা অন্য একটা ব্যবসা শুরু করবে, কিংবা স্পন্সর হোল্ডিং বাড়াবে, কিংবা অন্য যেকোনো ভালো নিউজ যা কোম্পানির ভবিষ্যৎ আলোকিত করবে এই সব খবরের কারনে দাম বাড়তে পারে।
আরো পড়ুন – DSE SME Platform
একজন সাধারন বিনিয়োগকারী হিসাবে আমাদের উচিৎ, কোম্পানির সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য নিয়ে, একই ব্যবসা করে অন্য কোম্পানির সাথে তুলনা করে, দেখে বুঝে শেয়ার কেনা।
আমাদের মনে রাখতে হবে, আবেগ দিয়ে শেয়ার বাজারে ঠিকে থাকা যাবে না। যত বেশি জ্ঞান অর্জন করতে পারবেন, আপনার পুঁজি তত বেশি নিরাপদ থাকবে। – কে এম চিশতি – ইউটিউব লিঙ্ক