কার্প ফ্যাটেনিং পদ্ধতিতে লাভবান হওয়ার কৌশল মৎস্য চাষিরা জানলে সহজেই লাভবান হতে পারবনে। বর্তমানে আমাদের দেশে ব্যাপকহারে মাছ চাষ করা হচ্ছে। এর প্রধান কারণ হল প্রাকৃতিক উৎসে মাছ তেমন পাওয়া যাচ্ছে না। পুকুরে চাষ হওয়া মাছগুলোর মধ্যে কার্প মাছ অন্যতম। আজকের এই লেখাতে আমরা জেনে নিব কার্প ফ্যাটেনিং পদ্ধতিতে লাভবান হওয়ার কৌশল সম্পর্কে-
কার্প ফ্যাটেনিং পদ্ধতিঃ
কার্প ফ্যাটেনিং পদ্ধতিতে সাধারণত পুকুরে অনেক পাতলাভাবে মাছের চাষ করতে হবে। খুব কম সময়ে মাছ বেশি পরিমাণ খাদ্য খেয়ে যাতে দ্রুত সময়ের মধ্যে শারীরিকভাবে বেড়ে ওঠে সেজন্য মাছকে বেশি পরিমাণ খাদ্য দিতে হবে।
এ পদ্ধতিতে প্রত্যেক বিঘায় ১৫০ থেকে ২০০টি রুই মাছ, কাতলা মাছ ৫০টি, সিলভার কার্প ৫০টি, গ্রাস কার্প ৫টি, মৃগেল মাছ ১৫০টি এবং মিরর কার্প মাছ ২৫ থেকে ৩০টি পরিমাণে পুকুরে চাষ করতে হবে।
এ পদ্ধতির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল মাছের পোনা নির্বাচন। কার্প ফ্যাটেনিং পদ্ধতিতে মাছের পোনাগুলোকে বেশি পরিমাণ চাপে একটি পুকুরে সংরক্ষণ করা হয়ে থাকে। তার পরেই এই পোনাগুলোর ওজন ৪০০ থেকে ৫০০ গ্রাম হলেই কার্প ফ্যাটেনিং করার জন্য মাছগুলোকে আলাদাভাবে প্রস্তুত পুকুরে ছেড়ে দিতে হবে।
এর পরে এই মাছগুলোকে অনেক বেশি পরিমাণে সুষম খাবার সরবরাহ করা হয়। যাতে করে মাছগুলো খুব দ্রুত সময়ের মধ্যেই বড় হয়। এই সময়ে কার্প মাছ প্রচুর পরিমাণ খাদ্য গ্রহণ করে থাকে। মাছ খাদ্য বেশি গ্রহণ করার ফলে কম সময়ের মধ্যেই বেশি ওজনের হয়ে থাকে। এই পদ্ধতি সঠিকভাবে মেনে মাছ চাষ করার কারণে এসব মাছের প্রত্যেকটির ওজন প্রায় ৮-১০ কেজির মতো হবে।
এই কার্প ফ্যাটেনিং প্রক্রিয়ায় আরও নতুন অনেক পদ্ধতিতে মাছের চাষ করেছেন মাছ চাষিরা। তারা এই ফ্যাটেনিং পদ্ধতির সাথে মনোসেক্স তেলাপিয়া মাছের চাষ করছেন। এই পদ্ধতি মাছ চাষিরা নতুন করে যোগ করেছেন। ফলে এই পদ্ধতিতে কার্প মাছের সাথে আরও কিছু পরিমাণ মনোসেক্স জাতের তেলাপিয়া মাছ করার সুযোগ সৃষ্টি করেছেন। এই ক্ষেত্রে প্রত্যেকটি তেলাপিয়ার ওজন বছরে প্রায় ১ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে।
এ পদ্ধতিতে কার্প মাছকে দ্রুত সময়ের মধ্যে বৃদ্ধি করা আমাদের দেশে একটি নতুন ধারণা। এই পদ্ধতি অবলম্বন করে মাছ চাষিরা সহজেই লাভবান হতে পারবেন।