১ জানুয়ারি থেকে রাজধানীর উপকণ্ঠে নতুন শহর পূর্বাচলে বঙ্গবন্ধু বিবিসিএফইসি সেন্টারে মাসব্যাপী শুরু হলো ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা-২০২২। তবে এবার বাণিজ্য মেলার পরিবেশ কিছুটা থমথমে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। করোনা পরিস্থিতিতে আগের মতো মানুষ না হওয়া ছাড়াও আরও একটি কারণ আবিষ্কার করেছেন বাণিজ্য মেলা পরিষদ।
‘বাণিজ্য’ মেলা হওয়ায় এতে বিজ্ঞান এবং মানবিক বিভাগের ছাত্ররা আসা কমিয়ে দিয়েছে। ঠিক কখন, কোথায় এবং কীভাবে এই আন্দোলনের সূচনা হলো তা কেউ বলতে পারছে না।
এই আন্দোলনে প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণকারী এক তরুণের সাথে কথা বললেই ঘটনার সত্যতা মেলে। তার নাম শামীম খন্দকার (১৮), বাসা নারায়ণগঞ্জ। বাণিজ্য মেলার কোল ঘেঁষে বসবাস করলেও কেন মেলায় যান নি—এমন প্রশ্নেই মেলে কাঙখিত উত্তর।শামীম জানান, ‘ফ্রাঙ্কলি স্পিকিং, আমি ছোটবেলা থেকে বিজ্ঞান বিভাগে পড়েছি, কমার্স (বাণিজ্য), আর্টস (কলা) কিংবা হিউম্যানিটিজ (মানবিক) বিভাগের প্রতি আমার কোনো আকর্ষণ নাই। তাই গত বছর থেকেই আমিসহ আমার বেশকিছু বন্ধু ‘বাণিজ্য’ মেলা বয়কট করছি। আমরা মনে করি, সাইন্সের আলাদা একটা বিউটি আছে, ক্লাস আছে যেটা বাকিদের নাই। আমরা জাস্ট ক্লাস মেইনটেইন করছি.. এইতো…’
শামীমের এ ধরনের বক্তব্যকে অন্যান্য বিভাগের ছাত্রছাত্রীরা তীব্র নিন্দা জানালেও বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রদের ভেতর ইতিবাচক সাড়া পাওয়া গেছে। মানবিক বিভাগের মামুন (১৬) নামের এক তরুণ বলেন, ‘তাইলে একটা মানবিক মেলা হোক। সেইখানে যায়া আমরা একে অন্যের প্রতি মানবিকতা প্রদর্শন করি। সেখান থেকে কেউ কেউ হয়তো মানবিক বিয়ে শাদীও করবে। এইতো আপনারা চান, তাই তো?’
একই ধরনের মন্তব্য করেছে কলা বিভাগের শিক্ষার্থীরাও। ফারুক নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘হে হে.. ভালো জিনিস বলছেন। এইবার একটা ‘কলার মেলা’ করেন। সেখানে বিভিন্ন ধরনের কলা পাওয়া যাবে৷ সবরি কলা, সাগর কলা, চম্পা কলা, বিদেশী কলা সবকিছু… সেলারদের কাছে যেয়ে আপনার কী ধরনের কলা লাগবে জাস্ট বলবেন। সেইম ডিজাইন বিভিন্ন কালার পাওয়া যাবে…হে হে হে.. আপনারা আবার অন্য কিছু ভাইবেন না।‘
এদিকে অন্যান্য বিভাগের ছাত্রছাত্রীদের এমন কথাবার্তা শুনে বেশ আনন্দ পাচ্ছেন বাণিজ্য বিভাগের শিক্ষার্থীরা। তাদের ভেতরই নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমার বয়ফ্রেন্ড পড়ে সরকারি বিজ্ঞান কলেজে। ও মেলায় আসে। আসবে না কেন? এটা তো ওর শ্বশুর মেলা। আমিও বিজ্ঞান মেলায় যাই, ওটা আমার শ্বশুর মেলা।’