প্লাস্টিক রিসাইক্লিং ব্যবসা নিয়ে হয়তো অনেকের আইডিয়া আছে। উৎপাদনমুখী ব্যবসা হিসাবে প্লাস্টিক রিসাইক্লিং ব্যবসা সেরা মানের একটি ব্যবসা। আপনি কি জানেন? আমার কিংবা আপনার মতো মানুষেরাই প্রতিবছর গড়ে ১১ কেজি প্লাস্টিক ব্যবহার করে থাকি?
আমাদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রার ক্ষেত্রে, প্লাস্টিক আমরা আমাদের নিত্যদিনের কাজে ব্যবহার করে আসছি। একটি গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা অনুযায়ী ধারণা করা হয় যে, ভারতে প্রতিবছর প্রায় ২৫,৯৪০ টন প্লাস্টিক নিঃসরণ করে থাকে। সারা বিশ্বব্যাপী প্রায় ৩০০ মিলিয়ন প্লাস্টিক নিঃসরণ করে থাকে। যা আমাদের পরিবেশ এর বিপর্যয়ের ক্ষেত্রে ভূমিকা পালন করে থাকে।
কিন্তু এই বিশাল পরিমাণ সংখ্যা থেকে প্রায় শুধুমাত্র ৯% বর্জ্য রি-সাইকেল করা হয়, বাকি ১২% ভাগ বর্জ্য হয়তো পুড়িতে ফেলা হয় কিংবা বাকি ৭৯ ভাগ বর্জ্য পরিবেশের সাথে মিশে পরিবেশকে দূষণ করে। প্রায় ৪০০ ভাগ বর্জ্য আমাদের সাগরের সাথে মিলিয়ে আমাদের পরিবেশ দূষণ করে থাকে।
উদাহরণ হিসেবে, কোকাকোলার মতো প্রতিষ্ঠানের কথা বিবেচনা করি। প্রতিষ্ঠানটি প্রতিবছর তাদের পণ্য সমূহ প্লাস্টিকের বোতলে বাজারজাত করে, আমাদের সরবরাহ করে। আমরাও আমাদের বিভিন্ন উৎসব, অনুষ্ঠানে পণ্যসমূহ ব্যবহার করি।
প্রায় প্রতি ১ মিনিটে ৯১ মিলিয়নের বেশি প্লাস্টিকের তৈরি কোকাকোলা এইসকল বোতল বাজারে সরবরাহ করা হচ্ছে, যার মধ্যে ৪৫৫ টন বোতল রয়ে গেছে, রি-সাইকেলের ধরা ছোঁয়ার বাইরে।
এখন হয়তো আপনি ভাবতে পারেন যে, প্লাস্টিক বোতল মূলত বাইগ্রেটেড। যা সহজে নিষ্কাশন করা যায় না। কিন্তু সঠিকভাবে প্লাস্টিক নিঃসরণের অভাবে কিংবা প্লাস্টিক রি-সাইকেলের অভাবে পরবর্তীতে আমাদের ফুড চেইনের মধ্যে তালিকাভুক্ত হয়ে যায়। যা আমাদের দৈন্দন্দিন খাদ্য তালিকার পণ্যসমূহের অংশীদার হয়ে যায়।
উদাহরণ হিসেবে, আপনি ভারতের গোয়াকে ধরে নিতে পারেন, যা মূলত একটি সমুদ্র সৈকত। কিন্তু প্লাস্টিক দূষণের কারণে দিন দিন এই সমুদ্র সৈকত তার প্রকাশ সৌন্দর্য হারাতে বসেছে।
এখন আপনি হয়তো প্লাস্টিক রি-সাইকেল কথা ভাবতে পারেন। কিন্তু যখন কোন দোকান থেকে আপনি কোকাকোলা কিনে থাকেন তার আগে কি আপনি তা চিন্তা করে থাকেন? মূলত প্লাস্টিক ব্যবহারের ক্ষেত্রে এটি একটি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হতে পারে।
আপনার জন্য প্লাস্টিক রিসাইক্লিং ব্যবসা একটি জনপ্রিয় ব্যবসা আইডিয়া, হতে পারে। তাই সময় এসেছে ব্যবসা পরিকল্পনা খানিকটা পরিবর্তন নিয়ে আসা। নতুন ব্যবসা পরিকল্পনা করার জরুরি ৯টি ধাপ।
মূলত কোন প্লাস্টিককে পরিবেশ দূষণের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য, প্লাস্টিক সংগ্রহ করে তার থেকে নতুন কোন ধরণের পণ্যসমূহ তৈরি করাকে বলা হয়ে থাকে প্লাস্টিক রিসাইক্লিং ব্যবসা।
বাজারে এই পরিকল্পনাটির অনেক চাহিদা রয়েছে। কারণ, পরিবেশকে প্লাস্টিক দূষণের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য সময় এসেছে। কোন বড় ধরণের উদ্যোগ গ্রহণ করে এইটা তার মধ্যে অন্যতম।
যার ফলাফল স্বরূপ কোকাকোলা, এডিডাস, ইউনিলিভার, পেপসি-কো এর মতো বড় প্রতিষ্ঠানসমূহ রিসাইক্লিনিংয়ের মাধ্যমে সেই সকল পণ্যসমূহ পুনরায় ব্যবহার করতে পারবে। মূলত প্লাস্টিক রি-সাইকেল কিছু পরিকল্পনার উপর নির্ভর করে থাকে। যেমন:
ব্যবহৃত প্লাস্টিকসমূহকে রি-সাইকেল মধ্যে এনে কোন ধরণের রি-সাইক্লিংয়ের মাধ্যমে তাকে পুনরায় কোন নতুন পণ্যের রূপান্তর করা যায় তা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। চলুন জেনে নেই রি-সাইকেল প্লাস্টিকের প্রকারভেদ সম্পর্কে:
পলিইথিলিন থেরাপাডয়েড: নানা ধরনের পানি, কোল্ড ড্রিংক, সফট ড্রিংক এর বোতল সমূহ রি-সাইকেল করে থাকে এই মাধ্যমে।
উচ্চ গতিসম্পন্ন পলিইথিলিন: এই পদ্ধতিতে বিভিন্ন প্লাস্টিক পণ্যসমূহ, পুনরায় গ্রহস্থলি কিংবা বাসা বাড়ির কাজের ক্ষেত্রে ব্যবহার করে থাকে।
পলিবিয়ন ক্লোরাইড: এই পদ্ধতির আলোকে সিলিং ফ্যান, পিভিসি পাইপকে রি-সাইকেল করা হয়ে থাকে।
ধরন সমূহের উপর বিবেচনা করে প্লাস্টিক পণ্যসমূহ হল –
প্লাস্টিক রিসাইক্লিং ব্যবসা শুরু করতে অবশ্যই কিছু কিছু প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন প্রয়োজন। প্রতিষ্ঠানসমূহ হল-
একটি ব্যবসা শুরু করার পূর্বে মূলধন প্রয়োজন। একটি প্লাস্টিক রি-সাইকেল ব্যবসা সেই ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম নয়। আপনি যদি রি-সাইকেল ব্যবসা শুরু করতে চান সেক্ষেত্রে আপনাকে-
বিনিয়োগ নেয়ার কৌশল জানতে হলে নিচের লেখাগুলো পড়তে পারেন।
এই প্লাস্টিক রি-সাইকেল ব্যবসা থেকে আপনি প্রায় প্রতি টন প্লাস্টিক রি-সাইকেলের উপর ভিত্তি করে ৬,০০,০০০ টাকা প্রতি মাসে আয় করা সম্ভব।
প্লাস্টিক রিসাইক্লিনিংয়ের ক্ষেত্রে আপনার টার্গেট কাস্টমার যারা হওয়া উচিত তারা হল:
প্লাস্টিক রিসাইক্লিংয়ের জন্য মূলত ২০০ থেকে ৩০০ স্কয়ারফিট স্থান নির্বাচন করাই শ্রেয়।
৫. যেসব উপাদানসমূহ প্রয়োজন:
৬. যে ধরণের যন্ত্রপাতি প্রয়োজন:
৭. যে কোন ধরণের প্লাস্টিক রি-সাইকেল ব্যবসার ক্ষেত্রে যে ধরেনর মনোবল প্রয়োজন –
অন্যথায় এই কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গের জন্য যে সকল প্রতিষ্ঠান সপর্কে ধারণা অর্জন করা প্রয়োজন তা হল :
আপনাকে প্লাস্টিক রি-সাইকেল ক্ষেত্রে দুইটি বিষয় খুব জোরাল ভাবে মাথায় রাখতে হবে। তা হল –
এই ব্যবসা ভালোভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে চাইলে আপনাকে অবশ্যই টার্গেট কাস্টমার নির্ধারণ করতে হবে। এই ব্যবসার ক্ষেত্রে টার্গেট কাস্টমার হল
যেকোনো ধরণের ব্যবসাকে এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই কম্পিটিটর প্রতিষ্ঠানের রিভিউ বা অবস্থান দেখে নিতে হবে। যেসকল কম্পিটিটরই প্রতিষ্ঠানের দিকে নজর দিতে হবে তা হল
যেকোনো ব্যবসার ক্ষেত্রে মার্কেটিং পরিকল্পনা খুব একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। মার্কেটিং পরিকল্পনার ক্ষেত্রে কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক রয়েছে। তা হল –
১. প্লাস্টিক রিসাইকলীর বাজার মূল্য মূলত ৪১.৭৬ মিলিয়ন ধরা হয় ২০১৮ সালের প্রাপ্ত এক জরিপের মাধ্যমে যে তথ্য বেরিয়ে আসে। এবং সিএজিআর এর মতে ৬.৬ ধারণা করা হয়।
২. এছাড়াও সময়ের সাথেই সাথে আপনি চাইলে আপনার এই ব্যবসায়ের পাশাপাশি অন্যান্য পরিকল্পনা যুক্ত করে আপনার প্রতিষ্ঠানকে বড় প্রতিষ্ঠান আকারে গড়ে তুলতে পারেন। যেমন:অটোমোটিভ ,ব্যক্তিগত ,টেক্সটাইল,এবং নানান ইলেক্ট্রনিক কাজে এই ব্যবসার প্রসার করতে পারেন।
মার্কেটিং সম্পর্কে আরও জানতে পড়ুন:
মূলত প্লাস্টিক ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে প্র-ফিট খুব গুরুত্বপূর্ণ জিনিস। তাই এ ক্ষেত্রে লাভের পরিমাণ জেনেই ব্যবসায় নামা বুদ্ধিমানের কাজ।
১.প্লাস্টিক রি-সাইকেল বাজার মূল্য ২০০৮ সালের ধরা হয় ৪১.৭৩ বিলিয়ন। কিন্তু সিএজিআর এর মতে তা ৬.৬ বিলিয়ন। ধীরে এই খাত বিভিন্ন নতুন নতুন সেক্টরকে প্রলুব্ধ করবে তাদের পণ্যসমূহ রি-সাইক্লিং করার ক্ষেত্রে। হিসেবে মতে প্রায় ২০% থেকে ৬০ প্রফিট আপনি এই ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে পেয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
কিন্তু যখন আপনি পুরো প্লাস্টিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে কাজ করবেন, তখন আপনাকে ব্যবসা পরিকল্পনার ক্ষেত্রে মূলত কিছু বিশেষ দিকে নির্দিষ্ট পরিমাণে ফোকাস রাখতে হবে।
প্রথমত এই ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে মূলত বিভিন্ন ধরণের র-ম্যাটে-রিয়াল বিশাল পরিমাণে বাজারে রয়েছে। আপনি চাইলে খুব সহজেই এই সকল ম্যাটে-রিয়াল সংগ্রহ করে তৈরি করতে পারবেন।
দ্বিতীয়ত মানুষ এখন প্লাস্টিকের ঝুঁকির কারণে রি-সাইকেল পণ্যের দিকে আকৃষ্ট রয়েছে।
বিভিন্ন বড় বড় প্রতিষ্ঠান প্লাস্টিক ব্যবসার পরিহার করে, গ্রিন কার্যক্রমের অংশীদার হতে চাচ্ছে। সেই সাথে দেশ থেকে বিদেশ সকল স্থানে এর পরিপূর্ণ চাহিদা রয়েছে।
এই ছিল আজকে প্লাস্টিক রিসাইক্লিং ব্যবসায় নিয়ে সংক্ষিপ্ত আইডিয়া। আপনি যদি কোন ভিন্ন ধারায় ব্যবসা নিজের একটি পরিচিতির পাশাপাশি ব্যবসা করতে চান শুরু করতে পারেন প্লাস্টিক রি-সাইকেল ব্যবসা।