চলতি বছর রাঙামটির পাহাড়গুলোতে চাঁপা, বাংলা, সাগর, সূর্যমুখী জাতীয় দেশি কলাসহ অন্যান্য কলার বাম্পার ফলন হয়েছে। দেশের অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় পাহাড়ি কলার স্বাদ অনেক বেশী। তাই পাহাড়ি কলার বিশেষ চাহিদা রয়েছে। আর এই স্বাদের কারণে ‘পাহাড়ি কলা’ যাচ্ছে দেশের নানা প্রান্তে। এ থেকেই বছরে আয় হচ্ছে ৩৫০-৪৫০ কোটি টাকা। তবে প্রত্যাশামত দাম না পাওয়ায় খুশি নয় প্রান্তিক চাষিরা।
জানা যায়, রাঙামাটি জেলায় ২০২০-২১ অর্থবছরে ১১ হাজার ৮৪৫ হেক্টর জমিতে কলা চাষ হয়েছে। উৎপাদন হয়েছে ২ লাখ ৪২ হাজার ৮২৩ মেট্রিক টন। পাহাড়ের মাটির গুণাগুণ ও আবহাওয়া কলা চাষের জন্য বেশ উপযোগী। এখানকার কলার চাহিদার পাশাপাশি প্রত্যাশামত ফলন হয় বিধায় কলা চাষে ঝুঁকছেন পাহাড়ের অনেক চাষি। প্রতি হাটের দিন ভিড় আরো বাড়ে। দাম হাতের নাগালে থাকায় পাইকারি ব্যবসায়ীরা প্রতিদিন ট্রাকভর্তি করে বিভিন্ন জেলায় বাজারজাত করছেন। তবে জেলায় কলা সংরক্ষণের কোন হিমাগার না থাকায় স্বল্পমূল্যে এসব কলা বিক্রি করতে হয়। এতে ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন কলা চাষি ও ব্যবসায়ীরা।
চাষিরা বলছেন, শীতকাল হওয়ায় কলার চাহিদা কিছুটা কমে গেছে তবে গরম কালে কলার চাহিদা বেশি থাকে। ঐ সময় ভালো লাভ করা যায়। বর্তমানে প্রতি কাঁধি কলা ১৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এতে করে লাভ করা যাচ্ছেনা। কলা সংরক্ষণের কোন ব্যবস্থা না থাকায় পাইকাররা যে দাম বলে সেই দামই বিক্রি করতে বাধ্য হতে হয়। কলা সময় মতো বিক্রি করতে না পারলে পেকে নষ্ট হয়ে যায়। প্রতি কাধি কলা ৩০০-৪০০ টাকা দরে বিক্রি হলে তারা একটু লাভবান হতে পারতো । কলা সংরক্ষণের জন্য হিমাগার স্থাপনের জন্য সরকারের সুদৃষ্টিও কামনা করেন তারা।
বনরূপা এলাকার সমতা ঘাটে কলা বিক্রি করতে আসা চাষী রবি মোহন চাকমা ও রিতিশ চাকমা বলেন, পাহাড়ে উৎপাদিত কলা বাজারে আনা কষ্টসাধ্য এবং খরচও বেশি। করোনার পর থেকে আগের বছরগুলোর মতো ভালো দাম পাচ্ছি না। জেলায় কোনো হিমাগার না থাকায় কলা স্বল্পমূল্যে বিক্রি করে দিতে হয়। এতে ন্যায্য দাম পাই না।
রাঙ্গামাটি জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক তপন কুমার পাল জানান, কলা চাষিদের অধিদপ্তর থেকে বিভিন্ন পরামর্শ এবং কারিগরি প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। বর্তমানে রাঙামাটিতে বিভিন্ন মৌসুমে কলা, আনারস, কাঁঠাল, আমসহ নানা ফলের ভালো উৎপাদন হয়। এসব ফলমূল সংরক্ষণে জেলায় একটি হিমাগার নির্মাণ করলে চাষিরা ন্যায্য দাম পাবেন।