টেকশহর কনটেন্ট কাউন্সিলর: নিজের একটি কার্টুনকে (অ্যাভাটার) পোশাক পড়াতে হাত নাড়লেন মার্ক জাকারবার্গ। সুইচ চেপে সেই কার্টুনকে মহাকাশচারীদের মতো পোশাক পড়িয়ে দিলেন। এরপর জাকারবার্গের অ্যাভাটার একটি ভার্চুয়াল স্পেসশিপে চেপে তার বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করতে রওনা হলেন। এখানে বন্ধুদের একজন ভাসছেন, অন্যজন একটি বড় রোবট হিসেবে আবির্ভূত হলেন।
বর্ননাটি একটি ভিডিও ক্লিপের। ফেসবুক তার নাম পরিবর্তন করে মেটা কেন হলো এবং মেটাভার্স ব্যবসার দিকনির্দেশনা বোঝাতে এই ভিডিওটি গত অক্টোবরে প্রকাশ করা হয় ।
ভিডিওটিতে একটি ভার্চুয়াল জগতে নিজের প্রতিকৃতি তৈরি করার সক্ষমতাকে বোঝানোর চেষ্টা করা হয়েছে। তবে এখানে বেশ বড়সড় সমস্যা রয়েছে। ভিডিওতে যেভাবে দেখানো হয়েছে মেটার বর্তমান সক্ষমতা ততোটা নয়। আজ আপনি যদি মেটার ফ্লাগশিপ সোশ্যাল ভিআর অ্যাপ হরাইজন ওয়ার্ল্ডস ব্যবহার করেন তাহলে সেখানে আপনাকে পা ছাড়াই প্রতিকৃতি তৈরি করতে হবে। পা-বিহীন মাথা, বাহু এবং হাত ওয়ালা ভাসতে থাকা এই অ্যাভাটার দেখতে রীতিমতো ভৌতিক মনে হয়।
জাকারবার্গের সম্পূর্ণ শরীরের সক্রিয় অ্যাভাটারের সঙ্গে বর্তমানে ভিআর অ্যাপের মাধ্যমে তৈরি অ্যাভাটারের মধ্যে পার্থক্য শুধুমাত্র নান্দনিকতার নয়। বাস্তব জীবনের সব গতিবিধি ভালোভাবে অনুকরন না করে ভিআর ব্যবহার করলে এর সেবা পুরোপুরি উপভোগ করা যাবে না। এটি একটি বিশাল ভার্চুয়াল জগত যেখানে মানুষ ডিজিটাল অ্যাভাটারের মাধ্যমে চষে বেড়াতে পারে। কিন্তু ফেসবুকের সুপার বোল বিজ্ঞাপনে যেভাবে পা-বিহীন অ্যাভাটার দেখানো হলো তা একটি বড় চ্যালেঞ্জ।
মেটা সিইও জাকারবার্গ ভার্চুয়াল বাস্তবতা বোঝাতে নিজের পুরো শরীরের কার্টুন অ্যাভাটার তৈরি করেছিলেন ডেমো ভিডিওর জন্য। কিন্তু মেটার হরাইজন ওয়ার্ল্ডস ভিআর অ্যাপে অ্যাভাটারদের শুধুমাত্র কোমড় থেকে উপরের অংশ দেখা যাচ্ছে। এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হন নি মেটা কর্তৃপক্ষ; ধারণা করা হচ্ছে অ্যাভাটারগুলোকে বাস্তবসম্মত দেখাতে বছরের পর বছর কাজ করতে হবে। গত সপ্তাহের শুরুতে ইনস্টাগ্রামে এএমএ (আস্ক মি এনিথিং) সেশনে মেটার রিয়েলিটি ল্যাব বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড্রু বসওর্থ এই সমস্যার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। কাজটি কঠিন উল্লেখ করে তিনি জানান সমস্যা কিভাবে সমাধান করা যায় তা নিয়ে তার কোম্পানি ভাবছে।
তিনি বলেন, ‘আপনার নিজের পা সঠিকভাবে ট্র্যাক করা খুব কঠিন।’
এই মুহুর্তে মেটাভার্স নিয়ে কাজ করা কোম্পানিগুলোর অ্যাপ একজন মানুষের শরীরের উপরের অংশ খুব ভালোভাবে ট্র্যাক করতে পারে কিন্তু এই মুহুর্তে পা ট্র্যাক করতে পারছে না তারা। ভিআরের ক্ষেত্রে এটি বসার ঘরে ব্যবহার করা যায়। এছাড়া ভিআরচ্যাটের মতো কিছু অ্যাপের মাধ্যমে একজন মানুষের পুরো আবয়ব তৈরি করা যায় কিন্তু সেখানে শরীরের নিচের অংশের গতিবিধি বোঝার জন্য সফটওয়্যার ব্যবহারের প্রবনতা দেখা যায়। এর মাধ্যমে তৈরি অ্যাভাটার সবচেয়ে ভালো দেখতে হলেও বোকা বোকা লাগবে।
বিগত বছরগুলোয় ভিআরের পেছনের প্রযুক্তি নিখুঁত করার বিষয়ে অগ্রগতি হলেও ব্যবহারকারীর পা ট্র্যাক করতে পারছে না এই অ্যাপ। ভিআর বিষয়ক বেশ কয়েকজন বিশেষজ্ঞ জানিয়েছেন, ভার্চুয়াল জগতের অ্যাভাটারদের মধ্যে পা যুক্ত করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
সিএনএন/আরএপি