টেকশহর কনটেন্ট কাউন্সিলর: অনেকেই প্রচুর গাছ কিনলেও এর পর্যাপ্ত যত্ম নিতে পারেন না। এ অবস্থায় ইনডোর প্ল্যান্টের দেখাশোনার জন্য একটি আধুনিক প্রযুক্তির সেন্সর ব্যবহৃত হচ্ছে। এই ডিভাইসটি গাছের সার্বিক অবস্থা সম্পর্কে ধারণা দেয়।
এই সেন্সরগুলি মূলত সৌরবিদ্যুতের মাধ্যমে চলে। ব্যবহারকারীর ল্যাপটপ ও স্মার্টফোনের সাথে ব্লুটুথ অথবা ওয়াই-ফাইয়ের সঙ্গে এই সেন্সর সংযুক্ত থাকে।একটি গাছ পর্যাপ্ত সূর্য্যের আলো, পানি এবং সঠিক তাপ পাচ্ছে কিনা তা সেন্সরের সাহায্যে এসব ডিভাইসে প্রদর্শন করে।
গাছের স্বাস্থ্য কেমন আছে তা বোঝাতে অ্যাপটিতে একটি ইমুজি ট্রাফিক লাইট ব্যবস্থা ব্যবহৃত হয়। গাছের অবস্থা অনুযায়ী লাল এবং সবুজ রংয়ের হাসিমুখ দেখায়। সেন্সরটিতে লাল রং দেখালে বোঝতে হবে গাছটি শুকিয়ে যাচ্ছে এবং মৃতপ্রায়, হলুদ মানে ঠিক আছে আর সবুজ রং মানে গাছটি খুবই ভালো আছে।
জেসমিন মোয়েলার তার ইনডোর প্লান্টের দেখাশোনার জন্য এধরনের সেন্সর ব্যবহার করছেন। তিনি জার্মানির কোম্পানি গ্রিনসেনসের তৈরি সেন্সর কিনেছেন। অ্যাপটির ডাটাবেজে পাঁচ হাজারের বেশি প্রজাতির গাছের তথ্য রয়েছে। সেন্সর ব্যবহারের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে মোয়েলার বলেন, ‘গাছগুলোকে চমৎকারভাবে দেখাশোনা করতে পারছি আমি। এখন আমার গাছগুলোকে খুব স্বাস্থ্যবান দেখায়।’ তিনি আরো জানান, গাছগুলো কেমন আছে সে সম্পর্কে সেন্সরটি আমাকে নিয়মিত নোটিফিকেশন পাঠায়।
গ্রিনসেন্সের ধারণাটি এর প্রতিষ্ঠাতা স্তানিসস্লাভ শাল্টসের । তিনি বলেছেন, ‘ঘরে গাছ থাকা পোষা প্রাণীর মতই। গাছগুলো পরিচর্চার জন্য এগুলো সম্পর্কে আপনার কিছুটা হলেও জানতে হবে।’
প্রথম বছরেই (২০২০) গ্রিনসেন্স ১৭ হাজার ডলার বা ১৫ হাজার ইউরো মূল্যমানের সেন্সর বিক্রি করেন। এরপর থেকে বিক্রি তিনগুন বেড়েছে। গত বছর কোম্পানিটির বিক্রির পরিমান ছিলো ৪৬ হাজার পাউন্ড।
আরো অনেকেই এ ধরনের সেন্সর বাজারে নিয়ে আসতে কাজ করছে। এরমধ্যে জার্মানির ফিয়েতা একটি। কিছুদিন আগেই তারা বাজারে একটি সেন্সর ছেড়েছে। তাদের এই অ্যাপটিতে টিউটরিয়ালের মতো অতিরিক্ত কনটেন্ট রয়েছে; যার মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা গাছ সম্পর্কে আরো অনেক কিছু জানতে পারবে। এছাড়া অ্যাপটির সাহায্য নিয়ে ক্যামেরার মাধ্যমে গাছ সম্পর্কে জানা যাবে। অর্থাৎ এর মাধ্যমে গাছের ছবি উঠালেই বলে দিবে এটি কোন ধরনের গাছ।
তবে বাগান বিষয়ে অভিজ্ঞরা এই সেন্সর ব্যবহারের বিষয়টি ভালোভাবে নিচ্ছেন না। অনলাইনে প্লান্ট রিটেইলার ফ্রেন্ডস অর ফ্রেন্ডসের প্রধান নির্বাহি বোটানিস্ট সিলভার স্পেন্স বলেন এই সেন্সর ব্যবহারের কারণে মানুষের মধ্যে বাগান তৈরির দক্ষতা সৃষ্টি হবে না। এছাড়া এই সেন্সরগুলো যেহেতু সৌরতাপে চলবে তাই শীতের দেশগুলোতে তুষারপাতের সময় কিভাবে এগুলো সচল থাকবে তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।
বিবিসি/আরএপি