নাটোরে মটরশুঁটি চাষে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। ধান রোপনের আগ পর্যন্ত নাটোর জেলায় প্রায় ৩০ হাজার হেক্টর জমি পতিত থাকতো। নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি রোপা আমন কাটার পর জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি বোরো ধান রোপনের আগে কোনো ফসলের আবাদ করা হতো না। তবে বর্তমানে পতিত জমিতে চাষ হচ্ছে মটরশুঁটি। ফলে কৃষকরা আর্থিকভাবে অধিক লাভবান হচ্ছেন।
জানা যায়, নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি রোপা আমন কাটা হয়। এরপর জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময়ে বোরো রোপন শুরু হয়। কৃষকরা জমিতে মটরশুঁটি চাষ করে অনায়াসে বোরো ধান চাষ করতে পারেন। রোপা ধান কাটার ১০ থেকে ১৫ দিন আগে কাদাযুক্ত জমিতে মটরশুঁটি ছিটিয়ে দিলেই ধান কাটার পর জমিতে মটরশুঁটির গাছে ভরে যায়। মটরশুঁটি আবাদে তেমন কোনো খরচ নেই এবং বাজারদর ভাল পাওয়া যায়।
নাটোর সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. মেহে-দুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘রোপা আমন কাটার পর প্রায় ৬০ দিন পরে ওই জমিতে বোরো ধান রোপনের সময় চলে আসে। রোপা আমনের পর জমিতে সরিষা, রাই, এবং খেসারি জাতীয় ফসল আবাদ করলে বোরো ধান দেরি হতো। কেননা এসব ফসলের জীবনচক্র প্রায় ১০০-১২০ দিনের মতো। ফলে আমন এবং বোরো ধানের মাঝখানে নাটোরের বেশিরভাগ কৃষক জমি পতিত রাখতেন।
মটরশুঁটি চাষি বেলাল হোসেন বলেন, এ বছর ৪ হাজার টাকা খরচ করে আমার পতিত ২ বিঘা জমিতে মটরশুঁটি চাষ করে ২৫ হাজার টাকার মটরশুঁটি বিক্রি করেছি। মটরশুঁটি একটা বাড়তি ফসল তাই সব খরচ বাদ দিয়ে ২০ হাজার টাকা লাভ হয়েছে। আমাদের এলাকার অনেকেই এখন মটরশুঁটি চাষ করছেন।
আরেক কৃষক কালাম উদ্দিন জানান, রোপা ধান পাকার আগে জমিতে মটরশুঁটি ছিটিয়ে দিলেই আর কিছু করতে হয়না। মটরশুঁটি চাষে কোনো বাড়তি খরচ নেই। এমনকি নিড়ানি বা সার, সেচ কিছুই লাগেনা। তাই মটরশুঁটির চাষ করেছেন তিনি।
জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ মাহমুদুল ফারুক বলেন, ডাল জাতীয় ফসল মটরশুঁটির চাষ করলে জমির উর্বরতা বাড়ে। অন্যদিকে মটরশুঁটি মানুষের জন্য খুব পুষ্টিকর খাদ্য। মটরশুঁটি চাষ করে কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন।