বুধবার, ২২ মার্চ ২০২৩, ১০:৩৩ অপরাহ্ন
শিরোনাম
রামপালে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পেল ২০টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পেল শরণখোলার ৭৫ ভূমিহীন পরিবার শরণখোলায় জমিসহ ঘর পাচ্ছেন আরো ৭৫ ভূমিহীন পরিবার সার্ক মানবাধিকার ফাউন্ডেশন খুলনা মহানগর শাখার সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত রামপালে যথাযোগ্য মর্যাদায় বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উদযাপন শরণখোলায় বিআরডিবির নবনির্বাচিত পরিষদের শপথ ও দায়িত্ব গ্রহন শরণখোলায় দিনব্যাপী উদ্যোক্তা সমাবেশ ও প্রদর্শনী মেলা অনুষ্ঠিত শরণখোলায় শ্রেণীকক্ষ থেকে ২০০ এ্যান্ড্রয়েড ফোন উদ্ধার! মোরেলগঞ্জে নিখোঁজ ড্রেজার শ্রমিকের লাশ উদ্ধার মোরেলগঞ্জে খালে পড়ে ড্রেজার শ্রমিক নিখোঁজ

বিজ্ঞাপন ‘হিট’ হবে কী-না আগাম জানাতে আধুনিক প্রযুক্তি

  • Update Time : শুক্রবার, ১১ মার্চ, ২০২২
বিজ্ঞাপন 'হিট' হবে কী-না আগাম জানাতে আধুনিক প্রযুক্তি

কেরি কলিং

টেকশহর কনটেন্ট কাউন্সিলর: ২০০৭ সালের ঘটনা। কেরি কলিং মার্কেটিংয়ের কাজ করার সময় একটি অদ্ভুত কাজ পান। এটি ছিলো ক্যাডবেরি ডেইরি মিল্কের একটি টিভি বিজ্ঞাপন; যেখানে দেখা যাবে একটি গরিলা ফিল কলিনসের গান ‘ইন দ্য এয়ার টুনাইট’-র সুরে ড্রাম বাজাচ্ছে।

বিজ্ঞাপনটি প্রচারের সাথে সাথেই ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়, চকোলেটের বিক্রি তুমুল গতিতে বেড়ে যায় এবং বিজ্ঞাপনটি যুক্তরাজ্যেও জনপ্রিয় হিসেবে ভোট পায়। বিজ্ঞাপনটি যখন তৈরি করা হয় তখন কলিং ছিলেন ক্যাডবেরির মার্কেটিং টিমের একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা।

কিন্তু মজার ব্যাপার হলো বিজ্ঞাপনটি প্রচারের আগে প্রাথমিক বাজার গবেষণায় বলা হয়েছিলো এটি ক্রেতারা ভালোভাবে গ্রহন করবেন না। কারন একটি ড্রাম বাজানো গরিলার সঙ্গে চকোলেটের কোন সম্পর্ক তারা খোঁজে পাবে না। কিন্তু এরপরেও কলিং এবং তার সহকর্মীরা নিশ্চিত ছিলেন বিজ্ঞাপনটি জনপ্রিয় হবেই। এ অবস্থায় তারা লন্ডনভিত্তিক একটি উচ্চ প্রযুক্তির কোম্পানি সিস্টেমওয়ানের দ্বারস্থ হন দ্বিতীয় মতামতের জন্য। এই কোম্পানিটি মূলত তাদের অনলাইন-ভিত্তিক সিস্টেমের মাধ্যমে যাচাই করে দেখে একটি বিজ্ঞাপন প্রচারের পর জনপ্রিয় হবে কিনা। তবে এখানে জরিপে অংশগ্রহনকারীদের কাছে কোন নির্দিষ্ট একটি বিজ্ঞাপন তারা পছন্দ করছে কি না সে বিষয়ে জানতে চাওয়া হয় না। বরং কমপক্ষে ১৫০ জন ব্যাক্তিকে তারা বিজ্ঞাপনটি দেখতে দেয় এবং এসময় তাদের আবেগীয় প্রতিক্রিয়াগুলো রেকর্ড করে।

Techshohor Youtube

গরিলার বিজ্ঞাপনটি সিস্টেমওয়ানে ব্যাপক ইতিবাচক স্কোর অর্জন করে। পরবর্তীতে কলিং এটি তার বসকে জানান এবং বিজ্ঞাপনটি ব্যাপক প্রশংসিত হয়। এ প্রসঙ্গে কলিং বলেন, এই টেস্টটি করার ফলে ক্যাডবেরি অনেক আত্মবিশ্বাস নিয়ে বিজ্ঞাপনটি প্রচার করে।’

ক্যাডবেরির মতো বিভিন্ন পণ্যের কোম্পানিগুলো বিজ্ঞাপন তৈরিতে প্রচুর অর্থ ব্যয় করে। কিন্তু সেসব বিজ্ঞাপন আদৌ ক্রেতাদের আকৃষ্ট করবে কি না তা প্রচারের আগে বোঝতে পারে না তারা। এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, চলতি বছর বিজ্ঞাপন তৈরিতে ৭০৬ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করা হবে; ২০১৯ সালে ৬৩৪ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করা হয়েছিলো। আর এই সার্বিক ব্যায়ের ৬২ শতাংশ যাবে ডিজিটাল বিজ্ঞাপনে (যা আপনার মোবাইল ও কম্পিউটারে দেখতে পান)।

তবে এসব বিজ্ঞাপনের কার্যকারীতা নিয়ে ব্রান্ডের কোম্পানিগুলো প্রায়ই সমস্যার সম্মুখিন হয়। যুক্তরাষ্ট্রের গাড়ি শিল্পের অগ্রদূত ফোর্ড পায়োনিয়ার বলেছেন, ‘বিজ্ঞাপনের পেছনে যে অর্থ ব্যয় করেছি তার অর্ধেকেই জলে গিয়েছে। ’

এ অবস্থায় একটি বিজ্ঞাপন প্রচারের পর সফল হবে কিনা তা বোঝতে কোম্পানিগুলো এখন উচ্চ প্রযুক্তি অ্যাড টেস্টিং প্রতিষ্ঠানের দ্বারস্থ হচ্ছে। যেমন যুক্তরাজ্যভিত্তিক কোম্পানি কান্তার এধরনের কাজ করে থাকে। কোম্পানিটির অনলাইন টেস্টিং সিস্টেম একজন ব্যক্তির ইমোশনাল প্রতিক্রিয়ার ওপর গুরুত্ব দিয়ে একটি বিজ্ঞাপনের সম্ভাবনা যাচাই করে। এই যাচাইকরনের পদ্ধতি হলো পরীক্ষকের ল্যাপটপ অথবা ওয়েবক্যামের সঙ্গে সংযোগ তৈরি করে ফেসিয়াল ম্যাপিং সফটওয়্যার ব্যবহারের মাধ্যমে তাদের প্রতিক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করা।

কান্তারের ক্রিয়েটিভ অ্যান্ড মিডিয়া প্রোডাক্টসের নির্বাহি ব্যবস্থাপনা পরিচালক জেন ওস্টলার বলেছেন, এধরনের অত্যাধুনিক পরীক্ষার চাহিদা ক্রমে বাড়ছে।

এই পরিবর্তনের অন্যতম কারন হচ্ছে কোম্পানিগুলো চায় তাদের বিজ্ঞাপন প্রিন্ট, টিভি এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সবকটি প্লাটফর্মেই প্রচার হোক। ফলে বিভিন্ন মাধ্যমে একই পণ্যের একাধিক বিজ্ঞাপন হতে পারে। এ প্রসেঙ্গ ওস্টলার বলেছেন, ‘আমি মনে করি ক্লায়েন্টদের জন্য এটি সত্যিই একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এটি শুধুমাত্র সবার জন্য বিজ্ঞাপন প্রচার  এবং একই ক্যাম্পেইনের একটি সমন্বিত অংশ হিসেবে তৈরি করাই প্রধান চ্যালেঞ্জ নয় বরং বিজ্ঞাপনটি দর্শকরা কিভাবে গ্রহন করবে এটিই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। ’

ফলে বিভিন্ন কোম্পানি এখন কোন বিজ্ঞাপন প্রচারের আগে এর সম্ভাবনা যাচাইয়ে বিভিন্ন প্রযুক্তি কোম্পানির সহায়তা নিচ্ছে। এক্ষেত্রে সিস্টেমওয়ান একটি বিজ্ঞাপন নিয়ে অংশগ্রহনকারীদের অনুভূতি যাচাইয়ের জন্য স্ক্রিনে ভাসতে থাকা মানুষের বিভিন্ন আবেগীয় প্রতিক্রিয়াযুক্ত মুখায়বে ক্লিক করতে বলা হয়। প্রতিটি মুখের ছবির নিচে অবজ্ঞা, বিস্ময়, রাগ, ঘৃনা,ভয়,সুখ,দুঃখ এবং নিরপেক্ষ এই শব্দগুলো লেখা থাকে।

এই অভিব্যক্তিগুলো যাচাই করে বোঝার চেষ্টা করা হয় বিজ্ঞাপনটি প্রচারের পর তা কতোটা ক্রেতা টানতে পারবে।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠান মোমেনটিভের প্রধান পরিচালনা কর্মকর্তা প্রিয়াংকা কর জানিয়েছেন, ব্যাক্তিদের ওপর জরিপ অথবা বাজার জরিপের তুলনায় অনলাইন-অ্যাড টেস্টিংয়ে তুলনামূলক কম খরচ হয়।

সিস্টেমওয়ান জানিয়েছে ,বিজ্ঞাপন অনলাইন টেস্টিংয়ের জন্য তাদের চার্জ দুই হাজার ডলার থেকে শুরু হয়। অ্যাড-টেস্টার টুলোনা জানিয়েছে, বিজ্ঞাপনের ক্যাম্পেইন বাজেটের তুলনায় ৫ শতাংশ কম ব্যয় হয় এতে।

মনোবিজ্ঞানী স্টুয়ার্ট ডাফ বলেছেন, কোম্পানিগুলো যদি ক্রেতাদের কাছে পৌঁছুতে চায় তাহলে তাদের অনুভূতি বোঝতে হবে। তিনি এর ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, ‘আমাদের স্মৃতির গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে আবেগ। আমরা সহজে বাস্তবিক অথবা নির্মল তথ্য মনে রাখি না কিন্তু চলমান বা অস্বস্তিকর তথ্য মুছে যায় না। ভয়, অনুশোচনা এবং আশবাদ হচ্ছে সবচেয়ে শক্তিশালী আবেগ। আশাবাদ হচ্ছে আনন্দ ও স্বস্তির সঙ্গে যুক্ত এবং এটি ভয় ও অনুশোচনাবোধ দূর করে। এটি আমাদের এগিয়ে নিয়ে যায় এবং পণ্যের প্রতি আস্থা জাগিয়ে তোলে।’

বিবিসি/আরএপি




Source by [author_name]

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Recent Posts

© 2022 sundarbon24.com|| All rights reserved.
Designer:Shimul Hossain
themesba-lates1749691102