শুক্রবার, ০২ জুন ২০২৩, ১১:১৬ পূর্বাহ্ন

শিং ও মাগুর মাছের পোনা পরিবহণ ও শোধনে করণীয় | Adhunik Krishi Khamar

  • Update Time : রবিবার, ২৭ মার্চ, ২০২২
মাছ


শিং ও মাগুর মাছের পোনা পরিবহণ ও শোধনে করণীয় কি তা আমাদের দেশের বেশিরভাগ মাছ চাষিরাই জানেন না। বর্তমানে বাণিজ্যিকভাবে পুকুরে মাছ চাষ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন অনেকেই তাদের পুকুরে শিং ও মাগুরের চাষ করে থাকেন। পুকুরে শিং ও মাগুর মাছের পোনা পুকুরে ছাড়ার পূর্বে পোনা পরিবহণ ও শোধনে বেশ কিছু কাজ করতে হয়। আজ আমরা জানবো শিং ও মাগুর মাছের পোনা পরিবহণ ও শোধনে করণীয় সম্পর্কে-

শিং ও মাগুর মাছের পোনা পরিবহণ ও শোধনে করণীয়ঃ


শিং মাছের পোনার বয়স নার্সারি পুকুরে ৩০ থেকে ৪০ দিন হলে তা মজুদ পুকুরে স্থানান্তরের যোগ্য হয়। অন্যদিকে মাগুর মাছের পোনার বয়স ২৫ থেকে ৩০ দিন হলে এদের মজুদ পুকুরে স্থানান্তর করতে হবে। যে কোন উৎস থেকে সংগ্রহ ও পরিবহণের ক্ষেত্রে বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করা যায়। পদ্ধতিসমূহ নিম্নরূপ দেওয়া হল-

সনাতন পদ্ধতিঃ


এ পদ্ধতিটি সনাতন হলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই পোনা পরিহণের ক্ষেত্রে এই পদ্ধতি অনুসরণ করা  হয়। তবে রেণু পরিবহণের ক্ষেত্রে এ পদ্ধতির ব্যবহার খুবই কম। এ পদ্ধতিতে এ্যালুমিনিয়ামের পাতিল বা ড্রামের মাধ্যমে পোনা পরিবহণ করতে হয়। পোনা পরিবহণের পূর্বে অবশ্যই পোনা টেকসই করে নিতে হবে। টেকসই করণের পর পোনা পরিবহণ উপযোগী হলে পরিমাণ মত নলকুপ/নদী/পুকুরের পরিস্কার ঠাণ্ডা পানি নিতে হবে। এ পদ্ধতিতে সাধারণতঃ ২০-৩০টি পোনা/লিটার ঘনত্বে পরিবহণ করা যায়।

মাঠ পর্যায়ে এ পদ্ধতিতে পোনা পরিবহণের হার নিম্নরুপ-

পাতিলের মাধ্যমেঃ


শিং ও মাগুর    –    ১০০০-২০০০টি (৮-১২ লি. পানি)

ড্রামের মাধ্যমেঃ

শিং এবং মাগুর    –    ৪০০০- ৬০০০ টি প্রতি ড্রামে।

উল্লেখযোগ্য যে শিং এবং মাগুর মাছের পোনা ড্রামে/পাতিলে পরিবহণ না করাই ভাল। কারণ দুটি মাছই তলদেশী। ফলে বুকে ঘসা লেগে ত সৃষ্টিহয় এবং পরে পোনা ইনজেকশন হওয়ার কারণে মারা যায়। এ পদ্ধতিতে পোনা পরিবহণ কালে পাতিল বা ড্রামে মুখ ভেজা পাতলা কাপড় বা মশারীর জাল দিয়ে ঢেকে রাখতে হয়। ক্ষেত্রে পাতিল/ড্রামের  পানিতে হাত দিয়ে বা ঝাকিয়ে বাতাসের অক্সিজেন মিশাতে হয় এবং ৪/৫ঘন্টা পর পর পানি বদলাতেহয়। পোনা পরিবহণকালে ল্য রাখতে  হবে যেন ড্রাম/পাতিলের পানি অত্যাধিক গরম না হয়।

আধুনিক পদ্ধতিঃ


এ পদ্ধতিতে পলিথিন ব্যাগে পানি এবং অক্সিজেন সহ পোনাকে প্যাকেট করে পরিবহণ করা হয়্ সাধারণতঃ বর্তমানে মাঠ পর্যায়ে ৬৬ সেমি.x ৪৬ সেমি. আকারের পলিথিন ব্যাগে পোনা পরিবহণ করা হয়। প্রতিটি প্যাকেটে ২টি করে পলিথিন ব্যাগ ব্যবহার করাই উত্তম। কোন কারণে যদি একটি ব্যাগ ছিদ্র হয়ে যায় তবে দ্বিতীয়টি পানি, অক্সিজেন ও পোনা রক্ষা করতে সাহায্য করবে।

পোনা প্যাকিং করার সময় সমান আকারের দুটি পলিথিন ব্যাগ নিয়ে একটি অন্যটির ভিতর ঢুকিয়ে তার ১/৩ অংশ পানি দ্বারা ভর্তি করতে হবে এবং ব্যাগের উপরের অংশ এক হাত দিয়ে আটকিয়ে এবং অন্য হাত দিয়ে ব্যাগটিকে উল্টিয়ে পাল্টিয়ে দেখতে হবে কোন ছিদ্র পথে পানি বেরিয়ে যায় কিনা। ছিদ্রযুক্ত পলিথিন ব্যাগ পাওয়া গেলে তা পরিবর্তন  করতে হবে।

ব্যাগের সাইজ ৬৬ সেমি. ৪৬ সেমি. আকারের হলে ২০/২১ দিনের কৈ-এর পোনা ২৫০ গ্রাম – ৩০০ গ্রাম  এবং ৩০/৪০ দিনের শিং ও  ২৫/৩০ দিনের মাগুর ৩০০-৪০০ গ্রাম (১৫/১৬ শত) পোনা ১৫-১৮ ঘন্টার দুরত্বের রাস্তা পরিবহণ করা যায়।

কৈ, শিং ও মাগুর পোনা ৪-৬ ঘন্টার ভ্রমনে ১ কেজি- ১.৫ কেজি পর্যন্ত প্রতি ব্যাগে পরিবহণ করা যায়। প্রয়োজনীয় পোনা পানিসহ পলিথিন ব্যাগে রেখে পলিথিনের বাকী অংশ অক্সিজেন দ্বারা পূর্ণ করে সুতলি/রাবার ব্যাণ্ড দিয়ে ভাল ভাবে বেঁধে নিতে হবে যাতে অক্সিজেন বেরিয়ে যেতে না পারে। পোনা পরিবহণের জন্য পানির তাপমাত্রা ২২-২৭০ সেলসিয়াস এর মধ্যে রাখা উচিত। পানির তাপমাত্রা বেশি হলে অক্সিজেন ধারণ মতা কমে যায়।

পরিবহণকালে পলিথিন ব্যাগ যাতে ছিদ্র হতে না পারে সে দিকে বিশেষ দৃষ্টি রাখতে হবে। সম্ভব হলে পলিথিন ব্যাগ বস্তায় ভরে পরিবহণ করতে হবে।


আরও পড়ুনঃ কাপ্তাই হ্রদে মাছ আহরণে ধাক্কা, অবতরণ কমেছে…


মৎস্য প্রতিবেদন / আধুনিক কৃষি খামার



Source by [সুন্দরবন]]

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Recent Posts

© 2023 sundarbon24.com|| All rights reserved.
Designer:Shimul Hossain
themesba-lates1749691102