ওবায়দুল কাদের—বাংলাদেশের সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীর পাশাপাশি তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেরও এক ফ্যাশন আইকনের নাম। ফেসবুকে তার ভক্ত ও অনুসারীর সংখ্যা সতেরো লাখ চৌদ্দ হাজার। কিন্তু দুশ্চিন্তার ব্যাপার হলো, প্রায় দু’মাস যাবত ফেসবুকে কোনো সরব উপস্থিতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে না আমাদের সবার প্রিয় সেতুমন্ত্রীর। তাঁকে নিয়ে জনসাধারণের এ দুশ্চিন্তা ক্রমেই মাত্রা ছাড়িয়ে যাচ্ছে।
রবিউল (২৮) নামের এক তরুণ জানান, ‘স্যারের রিসেন্টলি কী যেন হয়েছে, প্রায়ই ফেসবুকে ছবি আপলোড দেওয়ার ব্যাপারে তাকে উদাসীন দেখা যায়। জানি না স্যারের ব্যক্তিজীবন কিংবা কর্মজীবনে কোনো টানাপোড়েন চলছে কি-না,কিন্তু তাই বলে আমাদের আঠারো লাখ মানুষকে কষ্ট দেবার অধিকার কি তাঁর আছে? স্যার সম্ভবত আমাদের ভালোবাসাটুকু টের পান না। পেলে নিশ্চয়ই বারো ঘণ্টা অন্তর অন্তর ছবি আপলোড করতেন….’ কথা বলতে বলতে তরুণ এক পর্যায়ে টিস্যু দিয়ে চোখের পানি মোছেন৷
এক সম্পূর্ণ উড়ো খবর থেকে জানা গেছে, স্যারের ফটোগ্রাফারের শরীর ভালো নেই। সম্ভবত এ কারণেই ছবি তোলা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন ওবায়দুল কাদের। ‘কী হয়েছে ফটোগ্রাফারের?’—এমন উৎকণ্ঠা প্রকাশ করেছেন ফেসবুকীয় নেটিজেনরা। তারনিমা হক (২৯) নামের এক সরকারি কর্মকর্তা বলেন, ‘এ সময়টা বেশ খারাপ। ঢাকায় কলেরার প্রকোপ বেড়েছে, জানি না ফটোগ্রাফার সুস্থ আছেন কি-না। তবে তার চেয়েও বেশি চিন্তা হচ্ছে, এ ফটোগ্রাফার যদি ফেরত না আসেন, স্যার কি নতুন ফটোগ্রাফারকে মেনে নিতে পারবেন? আগের ফটোগ্রাফার যেমন স্যারকে গড়ে তুলেছিলেন নিজের ফটোগ্রাফি স্কিলের আদলে, যার ফ্রেমে বাঁধা পড়তো প্রকৃতি সাথে স্যারের আত্মিকতা, স্যারের মনের তারুণ্য ফুটিয়ে তোলা ছিলো যার নিত্য-নৈমিত্তিক ব্যাপার, নতুন ফটোগ্রাফার কি পারবে তেমনটা করতে?’
এছাড়া ওবায়দুল কাদেরের এমন হঠাৎ অনুপস্থিতিতে বিপাকে পড়েছেন বেশ কিছু জেন্টস শপ এবং টেইলার্স। এক গোপন সরেজমিনে জানা যায়, তারা ফেসবুক থেকে স্যারের ছবি ডাউনলোড করে একই রকম ব্লেজার বানানোর চেষ্টা করতেন। ‘কাদের টেইলার্স’ এর মালিক রমিজউদ্দীন বলেন, ‘স্যার তো খুব হিট আছিলো। যেই বেলেজার পইড়া ছবি দিতো, হেই রকমই বানানোর চেষ্টা করতাম। রেপ্লিকার জিনিস তো আসল জিনিসের মতো অইরকম হইবো না, কাছাকাছি গেলেও লোকে হেব্বি পছন্দ করতো। খুব চলতো… আল্লাহর রহমতে কয়দিন খুব চলছিলো টেইলার্সডা। স্যার কই জানি হারায়া গেলো, আমার এখন পথে বসার অবস্থা…স্যার আপনি কই? নতুন ছবি নিয়া তাড়াতাড়ি আসেন পিলিজ…পেটে লাত্থি খাইতে চাই না, গরীব মানুষ আমরা….’
তবে সকল সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দিয়ে নিখিল বাংলা মুরুব্বি সমিতি বলছেন ভিন্ন কথা। আব্দুর রহমান (৬৯) নামের এক মুরুব্বি বলেন, ‘রোজা রমজানের মাস, সবাই জায়নামাজে বইসা আছে। তাছাড়া পুরুষের পর্দা বইলাও তো একটা ব্যাপার আছে। কাদের সাহেব বিরাট পরহেজগালোক। এজন্যই সে এই মাসে ছবি টবি দিবে না। এছাড়া তোমাদের মতো তাঁরও খায়া দায়া কাজ নাই নাকি… সে নিশ্চয়ই ফেরত আসবে, তবে কয়দিন পরে। তোমরা আল্লার কাছে বেশি বেশি দোয়া করো।’