দেশে প্রথমবারের মত ভোলায় আবাদ হলো বিলুপ্ত প্রায় ফসল ‘চীনা শস্য’। পরীক্ষামূলকভাবে আবাদ করা সফলতা পেয়েছে ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট। ১৬টি পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ দানাদার এ ফসলটি প্রথম আবাদেই কৃষকদের আগ্রহ বেড়েছে।
জানা যায়, বাংলাদেশে প্রায় জেলাতে “চীনা শস্য” আবাদ করা হতো। পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ চীনা ফসলটি তেমন জনপ্রিয়তা অর্জন করতে পারেনি। আর বিলুপ্তপ্রায় সেই ফসলটিকে সংরক্ষণ ও ধরে রাখতে উদ্যোগ নিয়েছে ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট। তারা বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মাধ্যমে দেশের কোন জেলায় ফসলটি আবাদে উপযোগী সেটি পরীক্ষার কার্যক্রম শুরু করেন। একপর্যায়ে ভোলা ও নোয়াখালী জেলায় পরীক্ষামূলক ফসলটির আবাদে কৃষকদের উৎসাহী করলেও শুধু ভোলাতেই সফলতা পেয়েছে কৃষিবিভাগ। এখানকার আবহাওয়া উপযোগী থাকায় এ বছরের শুরুর দিকে ফসলটির পরীক্ষামূলক আবাদ করা হয়।
চীনা চাষি নওয়াব মাঝি বলেন, জীবনে অনেক ধরনেধান এবং ফসল চাষ করেছি। কিন্তু এইবার প্রথম ৬ শতাংশ জমিতে চীনা ফসল আবাদ করেছি। আমাকে বীজ, সার, ওষুধ ও প্রশিক্ষণ দিয়ে সহযোগিতা করেছে উপজেলা কৃষি অফিস। অল্প পরিশ্রমে ভালো ফলন হয়েছে। আগামী ২/৩ দিনের মধ্যে ফলন মাড়াই করবো।
চীনা চাষি আবুল কালাম বলেন, এবার ৪ শতাংশ জমিতে চীনা ফসলের আবাদ করেছি। ফলন অনেক ভালো হয়েছে। কোনো রোগ বা পোকা-মাকড়ের আক্রমণ হয়নি। আশা করি আগামীতে আরও বেশি জমিতে এ ফসলের আবাদ করবো।
এ ব্যাপারে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা বিরেন চন্দ্র দে বলেন, প্রথমবার এ ফসল চাষ করে অনেক খুশি কৃষকরা। অনেকেই এই ফসলটি আবাদের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। আমি আগামীতে আরও বড় পরিসরে ফসলটি আবাদের চিন্তা করছি।
বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বরিশাল অঞ্চল) ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. ছায়েমা খাতুন বলেন, অধিক পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ চীনা ফসলটি আগে আবাদ হলেও তা বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল। দানাদার এ ফসল ভাতের পাশাপাশি পায়েস হিসেবেও বেশ সুস্বাদু। আমরা এ বছর বিলুপ্তপ্রায় এ ফসলটি আবাদে সফলতা পেয়েছি। আগামীতে সারাদেশে এর আবাদ করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।