সুন্দরবন ডেক্স : বাগেরহাটের শরণখোলায় ধানসাগর রাধালক্ষী মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে সরকারি বিধি ও নীতিমালা উপেক্ষা করে ম্যানেজিং কমিটি গঠনের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বিদ্যালয়ের ছাত্রী নয়, এমন অনেকের অভিভাবককে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করেছেন প্রধান শিক্ষক নরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস। সেই ভুয়া খসড়া ভোটার তালিকা কমিটির অনমোদন না নিয়েই তফসিলে উল্লেখিত তারিখের ৯দিন আগে নির্বাচন সম্পন্ন করেন।
প্রধান শিক্ষকের এমন জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে গঠিত কমিটি বাতিল এবং পুরনরায় বৈধ ভোটর তালিকা প্রস্তুতির মাধ্যমে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবিতে চলমান কমিটির সভাপতি পঙ্কজ কুমার মিস্ত্রি বাদী হয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন।
মামলায় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, জেলা শিক্ষা অফিসার, জেলা প্রশাসক, যশোর বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শকসহ ছয় জনকে বিবাদী করা হয়েছে।
বাদীর অভিযোগে জানা যায়, নিম্ন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়টিতে ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদান করা হয়। এই তিন শ্রেণিতে বর্তমানে ছাত্রীসংখ্যা মাত্র ৩৫ জন। কিন্তু প্রধান শিক্ষক অবৈধভাবে ১২০ জন ভুয়া ছাত্রী ভর্তি দেখিয়ে একটি ভোটার তালিকা তৈরী করেন।
সেই খসড়া ভোটার তালিকায় সভাপতির স্বাক্ষর না নিয়ে নির্বাচনী তফসিল ঘোষনা করেন তিনি। তফসিলে ১২/০৪/২০২২ তারিখ সকাল ১০টা থেকে বকেল ৪টা পর্যন্ত মেনানয়ন পত্র প্রত্যাহার এবং ২৬/০৪/২০২২ তারিখ সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত নির্বাচন অনুষ্ঠানের দিন ধার্য করা হয়। অথচ প্রধান শিক্ষক তার পছন্দের চার জন অভিভাবক সদস্য ও তিন জন্য শিক্ষক প্রতিনিধি নির্ধারণ করেন।
পরবর্তীতে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও প্রিজাইডিং অফিসার মো. নূরুজ্জামান খানের মাধ্যমে তফসিলে উল্লেখিত তারিখের ৯দিন আগে ১৭/০৪/ ২০২২ তারিখ গোপনে তড়িঘড়ি করে প্রদীপ কুমার মিস্ত্রি নামে এক ব্যক্তিকে সভাপতি মনোনিত করেন। এতে অভিভাবক ও এলাকাবাসী মধ্যে চরম ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।
খসড়া ভোটার তালিকার ২২নম্বর ভোটার সঞ্জয় সরকার বলেন, আমি নিজেই জানিনা আমার মেয়ে রাধাল²ী বিদ্যালয়ের ছাত্রী। আমার মেয়ে শতাব্দি সরকার পড়ে ডক্টর মাসুম বিল্লাহ ডিএন কারিগরি কলেজে। কিন্তু তাকে ওই বিদ্যালয়ে ছাত্রী দেখিয়ে আমাকে ভোটার করেছেন প্রধান শিক্ষক। ৮৫ নম্বর ভোটার মো. আলাউদ্দিন বলেন, আমার মেয়ের বয়স মাত্র ৬বছর।
আমার মেয়েকে সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী দেখিয়ে আমাকে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছেন দুর্নীতিবাজ প্রধান শিক্ষক। ১০৫ নম্বর ভোটার মো. বাচ্চা তালুকদার বলেন, আমার কোনো মেয়েই নাই। আমার দুই ছেলে। অথচ ভোটার তালিকায় আমার নাম রয়েছে। রাধাল²ী স্কুলটি আমার বাড়ির কাছে। এখানে ১২০ জন ছাত্রী থাকার তো প্রশ্নই আসে না। প্রধান শিক্ষক নিজের সার্থ হাসিলের জন্য অনৈতিকভাবে এসব করেছেন।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নূরুজ্জামান খান বলেন, ভোটার তালিকা তৈরী বা সংযোজন-বিয়োজনে আমাদের কোনো এখতিয়ার নেই। ওটা সম্পূর্ণ প্রধান শিক্ষক এবং ম্যানেজিং কমিটির হাতে। তবে, নির্বাচন নিয়ম মাফিক হয়েছে। অতিরিক্ত প্রার্থী না থাকায় মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহারের পর নির্বাচিত সদস্য ও শিক্ষক প্রতিনিধিরা আলোচনার মাধ্যমে সভাপতি মনোনিত করেছেন।
যেহেতু এব্যাপারে মামলা হয়েছে। এখন কমিটি বহাল থাকবে কিনা সেটা আদালতই সিদ্ধান্ত দেবেন।
এব্যাপারে জানার জন্য বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।