পঞ্চগড়ে প্রতি কেজি শসা বিক্রি হচ্ছে ৫০ পয়সা ধরে। চলতি মৌসুমে শসার বাম্পার ফলন হলেও ন্যায দাম পাচ্ছে না চাষিরা। যায ফলে বিরাট অঙ্কের লোকসান গুনতে হচ্ছে তাদের। এমতাবস্থায় চরম হতাশ হয়ে পড়ছেন শসা চাষিদের।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, চলতি মৌসুমে জেলায় ২১০ হেক্টর জমিতে শসার চাষাবাদ হয়েছে। ফলনও হয়েছে ভালো। রমজানের আগেও চাষিরা শসা বিক্রি করেছেন ৩৫ থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে। রমজানের কয়েকদিন যাওয়ার পরেই হঠাৎ শসার বাজার মাত্রাতিরিক্তহারে কমতে থাকে। বর্তমানে শসা বিক্রি হচ্ছে ৫০ পয়সা কেজি দরে।
ক্ষতিগ্রস্ত চাষিরা জানান, এক বিঘা জমিতে শসা চাষ করে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে তাঁদের। এক বিঘা জমিতে শসা পাওয়া যায় ২৫০ থেকে ৩০০ মণ। ৫০ পয়সা কেজি দরে বিক্রি করে তারা পাচ্ছেন ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা। বাকি টাকা তাঁদের লোকসান গুনতে হচ্ছে। এমনকি বর্তমানে মজুরি খরচও ওঠাতে পারছেন না তাঁরা। তাই অনেকে ক্ষোভে শসা ক্ষেতের পরিচর্যাও বাদ দিয়ে দিয়েছেন।
পঞ্চগড় সদর উপজেলার বামনপাড়া এলাকার কৃষক তজমল হক বলেন, কৃষকের এই অবস্থা দেখার কেউ নেই। কৃষি কর্মকর্তারা কখনো মাঠে আসেন না। ধারদেনা করে বেশি দরে সার-কীটনাশক কিনে শসা চাষাবাদ করেছি। এখন আমাদের শসা বিক্রি করতে হচ্ছে ৫০ পয়সা কেজিতে। একদিনের শসা বিক্রি করে একটা কামলার দাম ওঠে না। ১৩০০ কেজি শসা বিক্রি করে মাত্র ১ কেজি গরুর মাংস কেনা যায়। আমরা কৃষকরা মাঠে মারা গেলেও সরকার বিষয়টি দেখছে না।
পঞ্চগড় বাজারের ব্যবসায়ী হারুন অর রশিদ বলেন, এখন কৃষকের বেশির ভাগ শসা প্রাপ্ত বয়স্ক। বাজারে পাইকারদের কাছে ৪/৫ টাকা কেজি দরে কিনে সতেজ শসা আলাদা করে বিক্রি করতে হয়। বাকি শসা ফেলে দিতে হয়। তখন আমাদের ক্রয়মূল্য বেশি পড়ে যায়। তাই ৮/১০ টাকা দরে বিক্রি করতে হয়।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক শাহ মো. শাখাওয়াত হোসেন বলেন, রমজানে ভালো দামে বিক্রি করার জন্যই মূলত পঞ্চগড়ের চাষিরা শসা চাষাবাদ করে থাকেন। শুরুতে তারা ভলো দামেই বিক্রি করেছেন। পরে ঠাণ্ডা আবহাওয়ার কারণে দাম অনেকটাই কমে গেছে। এখন আবার গরম বাড়তে শুরু করেছে। এ ছাড়াও সামনে ঈদ। তাই দাম সামনে বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।