বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্ক (বিডিওএসএন) এবং বাংলাদেশ ওমেন ইন আইটি (বিডব্লিউআইটি)-র উদ্যোগে ২২ এপ্রিল থেকে শুরু হয়েছে সপ্তাহব্যাপী ‘লুনা শামসুদ্দোহা গার্লস ইন আইসিটি উইক ২০২২’ শীর্ষক একটি আয়োজন। ২২-২৮ এপ্রিল নানা আয়োজন অনুষ্ঠিত হচ্ছে এবং প্রতিদিন একজন সফল নারীকে নিয়ে বিশেষ ফিচার প্রচারিত হবে। এ আয়োজনের অন্যতম সহযোগী টেকশহরডটকম। আজ আয়োজনের শেষ দিনে থাকছে সুপারটেলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরানা খান’র কথা।
নারীরা যখন কোন প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ পদে থাকেন, তখন প্রতিষ্ঠানটি সহজেই নারীবান্ধব হয়ে ওঠে বলে মনে করেন সুপারটেলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইমরানা খান। আর সেটি নিজের দায়িত্ব নিয়েই করোনা পরবর্তী পরিস্থিতিতে নারী কর্মীর অনুপাত বৃদ্ধির বিষয়ে কাজ করছেন তিনি। তিন বলেন, ‘করোনায় পুরুষের তুলনায় নারীরা বেশি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় কাটিয়েছে। কর্মক্ষত্রগুলো সীমিত হওয়ার সময় প্রথম ধাক্কাটা এসেছে নারীর উপর। এই জায়গা থেকে নারীকে ফিরে আসতে সহয়তা করবে নারীর জন্য নতুন কর্মক্ষেত্র তৈরি এবং কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ বাড়ানো।’
সুপারটেল বাংলাদেশে ২০০৮ সাল থেকে সিইও হিসেবে কাজ করছেন ইমরানা খান। দেশিও এবং আন্তর্জাতিক বাজারে কল সেন্টার হিসেবে কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটি। কল সেন্টারের কাজগুলো সাধারণত ২৪ ঘন্টা ধরেই চলে। দিনে ও রাতে অফিস পরিচালনা করতে হয়। শিফট অনুযায়ী কর্মীরা কাজ করলেও, শীর্ষ পদে ইমরানা খানের মতো যারা কাজ করেন, তাদেরকে প্রতিষ্ঠানের প্রতি খেয়াল রাখতে হয় সবসময়। জানালেন, ‘তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক উদ্যোগে নারীর অংশগ্রহণ খুব কম। আর শীর্ষ পদে নারীর সংখ্যা সামান্য। তবে এখন ধীরে ধীরে পরিবর্তন আসছে।’ সিইও পদের জন্য কঠোর পরিশ্রম ও প্রচুর ত্যাগ স্বীকার করেছেন উল্লেখ করে বলেন, ‘শুরুর দিকে পরিবারকে সময় দিয়ে সমান তালে সামলে রাখা কঠিন মনে হলেও দীর্ঘদিন সুপারটেলে কাজ করে রুটিনের মধ্যে কাজগুলো করেছি।’
কাস্টমার সার্ভিস রিপ্রেজেন্টেটিভ হিসাবে পুরুষদের তুলনায় নারীদের বেশি নিয়োগ করেছেন উল্লেখ করে ইমরানা খান বলেন, ‘দিনে ও রাতের শিফটে নিরাপদ কর্মপরিবেশ তৈরির জন্যও অনেক ভালো লাগে।’ তিনি মনে করেন, কর্মক্ষেত্র থেকে গৃহস্থালি পর্যন্ত নারীরা সমাজের কাঠামো গঠন করে। নারীর ক্ষমতায়নের মাধ্যমে সমাজের উন্নতি হয়। সুপারটেল বাংলাদেশে আইটি/বিপিও সেক্টরে ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড সেন্টারের অধীনে কমনওয়েলথ উদ্যোগ ‘শি ট্রেডস’এর প্রথম সদস্য। বিশ্ব বাজারে আরও ভালভাবে অংশগ্রহণ করতে এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে ব্যবসার সুযোগ তৈরি করতে নারীদের মালিকানাধীন ব্যবসাকে এগিয়ে নিতে ঋণ দেয় প্রতিষ্ঠানটি। ইমরানা খান শি ট্রেডসের একাধিক উদ্যোগ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন।
পরিবার থেকে এক দশকের বেশি সময় ধরে সমর্থন পেয়ে আসছেন উল্লেখ করে ইমরানা খান বলেন, ‘নারীদের কর্ম পরিবেশ দিলেই তারা ভালো কাজ করে এমন না, পরিবার ও কর্মজীবনের ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য পরিবারের ব্যপক সমর্থনের প্রয়োজন হয়।’ সুপারটেলে তিনি কর্মীদের লকডাউনের সময় হোম অফিস করা কর্মীদের বেতন পরিশোধ করেছেন। পাশাপাশি সুপারটেল এই কঠিন সময়ে স্থানীয় কমিউনিটিভিত্তিক সহায়তা চালিয়ে গেছেন তিনি।
সামাজিক দায়িত্বের অংশ হিসাবে সুপারটেল নারীদের জন্য একটি বৃদ্ধাশ্রম এবং অল্পবয়সী মেয়েদের জন্য একটি এতিমখানায় সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে উল্লেখ করে ইমরানা জানালেন, ‘ব্যক্তিগতভাবে জাগো ফাউন্ডেশনের একটি মেয়ের শিক্ষার একজন গর্বিত পৃষ্ঠপোষক হিসেবে ভালো লাগা কাজ করে।’
/জিপিডাব্লিউ/জেএ/এনসি