সূর্যমুখীর ফুল চাষ করে ব্যাপক সফলতা পেয়েছে চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জের চাষিরা। সূর্যমুখীর ফুলের চাষে অন্য ফসলের চেয়ে খরচ কম, অধিক লাভ হওয়ার কারণে এই ফুলের চাষে কৃষক আগ্রহী। সার, ওষুধ কম লাগে, ফলে অধিক লাভবান হওয়া যায়। সূর্যমুখীর ফুলে বীজ বপনের ৯৫ থেকে ১০০ দিনের মধ্যে ফসল তোলা সম্ভব।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ক্যান্সার ও হৃদরোগ প্রতিরোধী অধিক পুষ্টিগুণ সম্পন্ন সূর্যমুখীর তেল অন্যান্য সাধারণ তেলের চাইতে একটু আলাদা। কোলেস্টেরলমুক্ত ও প্রচুর পরিমাণে প্রাণশক্তি থাকায় সূর্যমুখী তেল শরীরের দুর্বলতা, কার্যক্ষমতা বাড়াতে অনন্য ভূমিকা রাখে। রান্নার জন্য সয়াবিন তেলের চেয়ে সূর্যমুখী তেল দশগুণ বেশি পুষ্টি সমৃদ্ধ। সূর্যমুখী তেল শরীরের হাড় সুস্থ ও মজবুত করে। শরীরের ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও কপারের চাহিদা পূরণ করে। ভিটামিন ই সমৃদ্ধ এই তেল শরীরের নানা রকম ব্যথা দূর করতে সহায়তা করে।
ফরিদগঞ্জ উপজেলার ১০ নম্বর গোবিন্দপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের কৃষক মোশারফ পাটওয়ারী বলেন, কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় সূর্যমুখী চাষ করেছি। অন্য ফসলের চেয়ে খরচ কম, অধিক লাভ হওয়ার কারণে এই ফুলের চাষ করেছি। সার, ওষুধ কম লাগে, ফলে অধিক লাভবান হতে পারি। ফুল দেখতে প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ আসছে। আশা করছি, সূর্যমুখী চাষে লাভবান হবো। আমার চাষাবাদ দেখে আশে পাশের কৃষকরাও এ ফুল চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছে।
সূর্যমুখী চাষিরা জানায়, বীজ বপনের ৯৫ থেকে ১০০ দিনের মধ্যে ফসল তোলা যায়। সামান্য পরিমাণ রাসায়নিক সার ও দুবার সেচ দিতে হয় এ ফসলে। এক একর জমিতে ৩৫ থেকে ৪০হাজার টাকা খরচ হয়। আর এক একর জমিতে প্রায় এক টন বীজ উৎপাদন হয়। এক টন বীজ ৮৫ থেকে ৯০হাজার টাকায় বিক্রি করা যায়। সূর্যমুখী গাছ জ্বালানি হিসেবেও ব্যবহার করা যায়।
ফরিদগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আশিক জামিল মাহমুদ জানান, ক্যান্সার ও হৃদরোগ প্রতিরোধী অধিক পুষ্টিগুণ সম্পন্ন সূর্যমুখী ফুল চাষ দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এ উপজেলায়। আমরা ইতোমধ্যে ১০ টি স্থানে সুর্যমূখী ফুলের প্রদর্শনী দিয়েছি। এছাড়াও অনেক চাষিরা সুর্যমুখীর চাষ করেছে বলে আমরা জেনেছি। খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় তদারকি করবো। আমরা আশা করছি, এ উপজেলায় উৎপাদিত বীজ স্থানীয় চাহিদা পুরণ করে দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা মাথায় রেখে কাজ করে যাচ্ছি।