গরুর খামারের জন্য সাইলেজ তৈরি ও সংরক্ষণে সতর্কতাসমূহ কি কি তা খামারিদের সঠিকভাবে জেনেই সাইলেজ তৈরি করতে হবে। আমাদের দেশে গবাদিপশু পালনের অন্যতম চ্যালেঞ্জ হল খাদ্যের জোগান। খামারে পালন করা গরুকে সময়মতো পুষ্টিকর খাদ্য প্রদান করলে গরুর বৃদ্ধি ও উৎপাদন ঠিক থাকবে। এতে করে খামারিরা লাভবান হতে পারবেন। আসুন আজকে জেনে নিব গরুর খামারের জন্য সাইলেজ তৈরি ও সংরক্ষণে সতর্কতা সম্পর্কে-
গরুর খামারের জন্য সাইলেজ তৈরি ও সংরক্ষণে সতর্কতাঃ
কাঁচা ঘাসের সাইলেজ তৈরী পদ্ধতিঃ
বর্ষা মৌসুমের সবুজ ঘাসে প্রচুর পরিমাণে জলীয়াংশ বা পানি থাকে। এ ধরনের ঘাসে তেমন ভাল হয় না। এ সকল সবুজ ঘাস বা কলাগাছ-কুচির সঙ্গে শতকরা ১৫ – ২০ ভাগ শুকনো খড়ের স্তর দিতে হবে। এতে গুণাগুণ ভাল থাকবে এবং সাইলেজের নির্যাস চুইয়ে খড়ের খাদ্যমানও বৃদ্ধি করবে।
গর্ত তৈরিঃ
কাঁচা ঘাসের সাইলেজ তৈরি করতে প্রথমে ঘাসের পরিমানের উপর নির্ভর করে একটি গর্ত খুরতে হবে। গর্তটি অবশ্যই উঁচু জায়গায় ( যেখানে পানি ঢুকতে না পারে) হতে হবে। গর্তের গভীরতা ৩ ফুট, প্রস্থের তলায় ৩ ফুট, মাঝে ৮ ফুট ও উপরে ১০ ফুট হবে। দৈর্ঘ্যের মাপ নির্ভর করবে ঘাসের পরিমাণের উপর। গর্তটির তলা পাতিলের মত সমভাবে বক্র থাকলে ঘাস চাপানো সহজ হবে।
পলিথিন ছড়ানোঃ
মাটির সাইলোর চারদিকে পলিথিন মুড়ে করলে অবশ্যই নিশ্চিন্তে থাকা যায়। পলিথিন একদিকে বায়ুরোধী করে অন্যদিকে এর ময়েস্জার ঠিক রাখে। দুই গজ চওড়া ডাবল পলিথিনের ৮ – ৯ গজ হলেই ২০ ফুটের একটি সাইলো পিটের শুধু উপরের দিক বন্ধ করা যায়।
সাইলেজ তৈরি পদ্ধতিঃ
- প্রথমে সবুজ ঘাসের শতকরা ৩ – ৪ ভাগ চিটগুড় মেপে একটি পাত্রে নিতে হবে। ঘন চিটাগুড়ের মধ্যে ১ঃ১ অথবা ৪ঃ৩ পরিমানে পানি মেশালে তবে ঘাসের উপর ছিটানো উপযোগী হবে।
- এরপর পরতে পরতে সবুজ ঘাস এবং শুকনো খড় দিতে হবে। প্রতি পরতে ৩০০ কেজি সবুজ ঘাস এবং ১৫ কেজি শুকনো খড় দিতে হবে।
- ৩০০ কেজি ঘাসের পরতে পূর্বের হিসাবে চিটাগুড় ও পানির মিশ্রণ ঝরনা বা হাত দিয়ে সমভাবে ছিটিয়ে দিতে হবে। খড়ের মধ্যে কোন চিটাগুড় দিতে হবে না।
- এভাবে পরতে পরতে ঘাস ও খড় আলাদা সাজাতে হবে। যত এঁটে ঘাস সাজানো হবে তত ভালো মানের তৈরী হবে।
- এভাবে সাইলো ভর্তি করে মাটির উপরে ৪ – ৫ ফুট পর্যন্ত ঘাস সাজাতে হবে। ঘাস সাজানো শেষ হলে খড় দ্বারা পুরু করে আস্তরন দিয়ে সুন্দর করে পলিথিন দিয়ে ঢেকে দিতে হবে।
- সর্বশেষে ৩ – ৪ ইঞ্চি পুরু করে সমানভাবে সাইলোর উপরে মাটি দিতে হবে।
সতর্কতাঃ
- পানি জমে না এমন উঁচু স্থানে সাইলো বানাতে হবে। তা নাহলে পানি জমে নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
- উপরের পলিথিন খুব ভালো ভাবে এঁটে দিতে হবে এতে কোন পানি সাইলোর মধ্যে ঢুকবে না।
- চিটাগুড় ও পানির এমনভাবে দ্রবন তৈরী করতে হবে যাতে আঠার মত ঘাসের গায়ে লেগে থাকে।
- ঘাস এবং খড় স্তরে স্তরে সাজাতে হবে এবং ফাঁকা জায়গাগুলো যথাসম্ভব বন্ধ করতে হবে।
- ঘাসের সাথে খুব বেশী পানি থাকালে ভালো মানের হবে না।
আরও পড়ুনঃ উন্নত জাতের বাছুরের খাবার তালিকা
ডেইরি প্রতিবেদন / আধুনিক কৃষি খামার