চাঁদের মাটিতে সবজি চাষে সফল হয়েছেন ইউনিভার্সিটি অফ ফ্লোরিডার গবেষকরা। অর্ধ শতক আগের তিনটি আলাদা অ্যাপলো মিশন থেকে সংগৃহিত চাঁদের মাটিতে ‘মাস্টার্ড গ্রিন’ চাষে সফল হয়েছেন গবেষকরা।
প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট সিনেট জানিয়েছে, প্রাথমিক অবস্থায় চাঁদের মাটিতে রোপন করা বীজ থেকে আসা অঙ্কুর বড় হলেও পৃথিবীর মাটিতে বড় হওয়া গাছের মতো সবল ছিল না চাঁদের মাটিতে বড় হওয়া চারা।
ইউনিভার্সিটি অফ ফ্লোরিডার গবেষক স্টিফের এলার্ডোর নেতৃত্বে গবেষণা দলে ছিলেন অ্যানা-লিসা পল এবং রবার্ট ফার্ল।
এর ব্যাখ্যা দিয়ে ইউনিভার্সিটি অফ ফ্লোরিডার গবেষক স্টিফের এলার্ডো বলেন, চাঁদের মাটিতে খুব বেশি পুষ্টিগুণ নেই যা উদ্বিদের বৃদ্ধির জন্য অতি প্রয়োজন।
চাঁদের মাটিতে সর্ষে গাছগুলো বড় হওয়ার শুরু থেকেই উদ্ভিদগুলো যে প্রতিকূল পরিবেশে বড় হচ্ছে তার পরিষ্কার ইঙ্গিত মিলছিলো বলে জানিয়েছে সিনেট। গাছগুলোতে সহযোগিতা করতে পর্যাপ্ত আলো, পানি আর পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করতে শুরু করেন গবেষকরা। দুই দিন পরেই বীজ থেকে অঙ্কুর আসা শুরু করে।
ইউনিভার্সিটি অফ ফ্লোরিডার অধ্যাপক পল বলেন, সবগুলোতে অঙ্কুর এসেছিল। আমি বোঝাতে পারবো না যে আমরা কতোটা অবাক হয়েছিলাম। চাঁদের মাটি আর পৃথিবীর মাটিতে বড় হওয়া সবগুলো গাছও দেখতে একই রকমের ছিল– অন্তত ষষ্ঠ দিন পর্যন্ত। প্রথম সাত দিনের শেষেই গাছগুলোর বড় হওয়ার গতি কমে আসার লক্ষণ পরিষ্কার ছিল বলে জানিয়েছেন তিনি। গাছগুলোর শেকড় ও পাতাও প্রত্যাশা অনুযায়ী বড় হচ্ছিল না। পরবর্তীতে সর্ষে গাছগুলোর জিন বিশ্লেষণ করে গবেষকরা দেখেন, প্রতিকূল পরিবেশে বড় হওয়ার পরিষ্কার চিহ্ন রয়েছে গাছগুলোতে।
তিনি আরও বলেন, পৃথিবীর মাটির সঙ্গে ‘রেগোলিথ’ নামে পরিচিতি চাঁদের মাটির বেশ কিছু পার্থক্য রয়েছে। রেগোলিথ সূক্ষ্ম দানাদার এবং পাউডারের মতো, সূক্ষ্ম হলেও আছে ধারালো কণা। নিশ্বাসের সঙ্গে টেনে নিলে ফুসফুসের বড় ক্ষতি করতে পারে ধারালো কণাগুলো, উদ্ভিদ চাষের জন্যও ঠিক উপযোগী নয় এই মাটি।
আরেক গবেষক ফার্লের মতে, চাঁদে নভোচারীদের দীর্ঘ দিন থাকার চাবিকাঠি হচ্ছে চন্দ্র পৃষ্টে চাষাবাদের উপায় খুঁজে বের করা। এতে শুধু খাবারের জোগান মিটবে না, নিশ্বাস নেওয়ার মতো পরিষ্কার বাতাস আর পানির চাহিদা মেটাতেও ভূমিকা রাখবে গাছগুলো। আমরা মহাকাশের যেখানেই যাই না কেন, আমাদের কৃষি আমাদের সঙ্গেই থাকে। চাঁদের মাটিতে উদ্ভিদ বড় করতে পারা সে দিকে একটি বড় পদক্ষেপ।