টেকশহর কনটেন্ট কাউন্সিলর : ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, থ্যালাসেমিয়া মুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় দরকার মিডিয়া যুদ্ধের। একমাত্র সচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমেই এই রোগকে শূন্যে নামিয়ে আনা সম্ভব।
তিনি বলেন, বাঙালি কোন যুদ্ধে পরাজিত হয়নি, দেশ থেকে থ্যালাসেমিয়া নির্মূলের যুদ্ধেও আমরা হারবো না। এর কারণ ও প্রতিকারের উপায় সম্পর্কে জনসচেতনতা সৃষ্টিতে গণমাধ্যমের ব্যাপক ভূমিকার প্রয়োজন। তিনি বলেন, এই রোগ প্রতিরোধের অন্যতম উপায় হচ্ছে এই রোগের একজন বাহক আর একজন বাহককে বিয়ে করা থেকে বিরত থাকা। এই লক্ষ্যে বিয়ের আগে পাত্র-পাত্রী দু‘জনই যদি বাহক হয় তবে চিকিৎসকদের মতে তার সন্তান থ্যালাসেমিয়ায় রোগী হিসেবে জন্ম নিতে বাধ্য।
মন্ত্রী বৃহস্পতিবার ঢাকায় ইনস্টিটউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ মিলনায়তনে বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া সমিতি ও হেমাটোকেয়ারের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত থ্যালাসেমিয়া প্রতিরোধ-জাতীয় পরিকল্পনা প্রণয়নে বাহক নির্ণয়ে গুরুত্ব শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
তিনি এ সময় থ্যালাসেমিয়া রোগী শনাক্তে ঢাকা, চট্রগ্রাম ও দিনাজপুর জেলায় পরিচালিত সমিতির স্ক্রিনিং প্রকল্পের উদ্বোধন করেন।
বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ড. এম এ মতিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া সমিতির উপদেষ্টা, প্রাক্তন মন্ত্রী সৈয়দ দীদার বখত, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মোহাম্মদ এবাদুল করিম-এমপি, এমিরেটস অধ্যাপক ডা: এবিএম আব্দুল্লাহ, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘরের কিউরেটর এন আই খান, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো: এনামুল হক এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা: মোহাম্মদ টিটু মিয়া বক্তৃতা করেন।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রফেসর ডা: এম এ খান, অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের সহকারি অধ্যাপক ডা: মাফরুহা আক্তার ।
অনুষ্ঠানে থ্যালাসেমিয়া রোগ সম্পর্কে অভিব্যক্তি প্রকাশ করেন থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত রোগী নওশীন তাজনীন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী করোনার ভয়াবহতারোধে দেশের চিকিৎসক সমাজের ভূমিকায় গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন । তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের মতো উন্নত দেশে করোনায় সর্বোচ্চ মানুষ মারা গেছে । বাংলাদেশ টিকা উৎপাদন বা আবিস্কার না করেও বিপুল জনগোষ্ঠীকে টিকা প্রদানে বাাংলাদেশ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
থ্যালাসেমিয়া হাসপাতাল প্রতিষ্ঠাসহ দেশে থ্যালাসেমিয়া রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা প্রদানে ভূমিকা রাখতে থ্যালাসেমিয়া সোসাইটির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সাবেক মন্ত্রী সৈয়দ দীদার বখতের প্রশংসা করেন।
তিনি বলেন , এই রোগ সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টিতে গণমাধ্যমের পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও সচেতনতা তৈরি করতে হবে । আগামী প্রজন্মের জন্য একটি সুন্দর বাংলাদেশ গড়ার জন্য আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছি। তিনি এসএমএস প্রদানের মাধ্যেম সচেতনতা সৃষ্টির ক্ষেত্রে সহযোগিতা করার আশ্বাস প্রদান করেন।
সৈয়দ দীদার বখত বলেন, বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া রোগের সহজলভ্য কোন ঔষধ আবিস্কার হয়নি , বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট একমাত্র চিকিৎসা। একটু সচেতন হলেই এই রোগ থেকে পরের প্রজন্মকে রক্ষা করা সম্ভব। তিনি থ্যালাসেমিয়া চিকিৎসায় গবেষণার পাশাপাশি এ ক্ষেত্রে সরকারের ব্যাপক সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
মোহাম্মদ এবাদুল করিম বলেন, এ রোগ প্রতিকারের জন্য ইন্ডাস্ট্রি ও একাডেমিয়াকে এক সাথে কাজ করতে হবে।
ডা: এবিএম আবদুল্লাহ বলেন, সকলের সম্মিলিত সহযোগিতায় এ সুন্দর পৃথিবীতে এই রোগীদের দীর্ঘকাল বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব। তিনি এ ব্যাপারে সচেতনতার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
সূত্র – প্রেস বিজ্ঞপ্তি