টেক শহর কনটেন্ট কাউন্সিলর : কারিগরি সব কাজ শেষ, শিগগিরই অনলাইনেই লাইসেন্স নবায়ন করতে পারবেন ইন্টারনেট সেবাদাতারা। নতুন প্রণিতব্য আইএলডিটিএস পলিসি অনুযায়ী যে ইউনিফাইড লাইসেন্সে প্রবর্তন হবে তাতে আইএসপিদের স্বার্থ রক্ষাও ব্যবসা সুরক্ষিত করা হবে।
জুনিপার ও মাইক্রোটিক নিয়ে আইএসপিএবির ৪ দিনের কর্মশালার সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এসব কথা বলেন বিটিআরসির চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার।
তিনি বলেন, ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারদের সংগঠনের (আইএসপিএবি) দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ‘অ্যাকটিভ শেয়ারিং’ নীতিমালা পাশ চূড়ান্ত করা হবে। একইসঙ্গে কোনো লাইসেন্সির স্বার্থ যেনো বিঘ্নিত না হয় সে জন্য সর্বোচ্চ সতর্ক রয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক কমিশন (বিটিআরসি)।
কক্সবাজারে গত ৩০ মে , সোমবার ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আইএসপিএবি) এর আয়োজনে ও আইসিটি বিজনেস প্রমোশন কাউন্সিলের আর্থিক সহযোগিতায় আন্তর্জাতিক মানের প্রশিক্ষণ নেটওর্য়াক ল্যাব উদ্বোধন ও ৪ দিন ব্যাপি সেমিনার ও কর্মশালা সম্পন্ন হয়েছে।
শ্যামসুন্দর সিকদার বলেন , লাস্টমাইল কানেক্টিভিটির যে অংশটুকু ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে প্রতিষ্ঠানগুলোর অধীনে রয়েছে তা কাটা পড়লে বিটিআরসি সে বিষয়ে চিন্তিত নয় তবে আইএসপি’র অংশ কাটা গেলে সেটা উদ্বেগের । তিনি বলেন, কাটা যাওয়া লাস্টমাইল কানেক্টিভিটি যদি এনটিটিএন এর ভাগে পড়ে তাহলে তার কাটা যাবে; আপনাদের ক্যাবল কাটা পড়ার কথা না। আর আপনাদের ভাগে যদি পড়ে তাহলে সেটা অবশ্যই আমাদের চিন্তার বিষয়। সেটা কি করে আপনাদের আমি ফ্যাসিলিটেড করতে পারি, অবশ্যই আমি সেটা দেখবো।
বৈধ লাইসেন্সধারীদের পেশীশক্তিমুক্ত ব্যবসায় করার পরিবেশ নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিটিআরসি চেয়ারম্যান আরো বলেন, বিটিআরসি ও আইএসপি কেউ কারো প্রতিপক্ষ নয়। আমরা একটা জয়েন্ট ফ্যামিলি। আমাকে যদি গার্ডিয়ান মনেই করেন তাহলে সুখ-দুঃখের সব কথা আমাকে বলতে হবে। আমি শুধু গার্ডিয়ান না, ডাক্তারও। চিকিৎসার জন্য সব কিছু খুলে বলতে হবে। আমার দরজা সব সময় খোলা।
আরো বেশি বেশি প্রশিক্ষণ কর্মসূচি আয়োজেনের তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, প্রশিক্ষণ হলো পেশাগত জ্ঞান, প্রশিক্ষণের মাধ্যমে স্কিল তৈরী হয় এবং ল্যাব এর মাধ্যমে নেটওর্য়াক এর হাতে কলমে জ্ঞান দেওয়া হয় । বিভাগীয় এবং জেলা পর্যায়ে আপনারা আরো প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নিন। এতে বিটিআরসি সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে। কারিগরির পাশাপাশি আচরণগত প্রশিক্ষণও আপনারা করাবেন বলে আশা করি।
আইএসপিএবি পরিচালক জাকির হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিটিআরসি মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাসিম পারভেজ। তিনি বলেন, আপনাদের যত সমস্যাই থাকুক তার সমাধান বিটিআরসি’র হাতেই আছে। কিন্তু এ জন্য
আমাদের সময় দিতে হবে। মোবাইল অপারেটরদের চেয়ে আইএসপিরা সাধারণ মানুষের বেশি কাছাকাছি থাকে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ডেটা নিয়ে যখন কাজ করতে হয় তখন ফিক্সড ইন্টারনেটের বিকল্প নেই। আপনাদের অবস্থান খুবই সুসংহত। তাই আপনাদের কেউ ধাক্কা দিয়ে
ফেলতে পারবে না। আপনারা আমাদের কাছে খুবই ইমর্পোটেন্ট। এসময় দেশে এক দেশ এক রেট বাস্তবায়নে আইএসপিএবি’র প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন বিটিআরসি মহাপরিচালক।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আইএসপিএবির সভাপতি মো. ইমদাদুল হক, তিনি বলেন, আজ দাবী দাওয়ার দিন নয় আজ সৌভাগ্যের দিন। করোনার দুই বছর যুদ্ধ করে বেঁচে থাকতে হয়েছে। গাইডলাইন পলিসি আমাদের আইএসপিগুলোর বিরুদ্ধে গিয়েছে। আমরা মেনে নিয়েছি, ক্যাশ সার্ভার ফেরত দেওয়া ও মেনে নিয়েছি, দেশে এক দেশ এক রেট নির্দেশ মেনে বাস্তবায়ন করেছি। বিটিআরসি যা চেয়েছে তা আমরা বাস্তবায়ন করব তবে শহরের ও গ্রামের ইনফাস্টট্রকচার যেন এক হয় তা পলিসির মধ্যে যেন সুরক্ষিত থাকে। আমাদের মধ্যে যেন কোন গ্যাপ না থাকে সে জন্য ডিভিশনাল আইএসপিদের সাথে বসে আলোচনা করার কথা বলেন তিনি ।
আইএসপিএবি মহাসচিব নাজমুল করিম ভূঁইয়া তার বক্তব্যে, ল্যাব স্থাপনে বিপিসিকে ধন্যবাদ জানান এবং একটিভ শেয়ারিং অনুমোদন ও আপিবিসিক্স ট্রেনিং এ ফান্ডিং প্রদান করা এবং থানা পর্যায়ে অনলাইনে এপ্লিকেশন জমা দেওয়ার বিষয়টি চেয়ারম্যান মহোদয়কে অবহিত করেন।
সমাপনী অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন মো: আব্দুল কাইউম রাশেদ, যুগ্ম-মহাসচিব, আইএসপিএবি, আইএসপিএবি, মো: আসাদুজ্জামান, কোষাধ্যক্ষ, আইএসপিএবি, সাকিফ আহমেদ, পরিচালক, আইএসপিএবি।
চার দিন ব্যপী এই প্রশিক্ষণ কর্মশালায় প্রশিক্ষণ দিয়েছেন সৈয়দ আবু সালেহ, উজ্জল কুমার কর্মকার, শামছুজ্জামান ফরিদ ও মিঠু হাওলাদার। ১৩০ জনের নেটওয়ার্ক ইঞ্জিনিয়ার প্রশিক্ষণার্থীদের জুনিপার ও মাইক্রোটিক নিয়ে হাতে কলমে শিক্ষা প্রদান করে।
সূত্র – প্রেস বিজ্ঞপ্তি