শুক্রবার, ০৯ জুন ২০২৩, ১১:১৬ পূর্বাহ্ন

শিক্ষাক্রমের রূপরেখা চূড়ান্ত অনুমোদন থাকছে না যেসব পরীক্ষা

  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ২ জুন, ২০২২

কেবল দশম শ্রেণির লেখাপড়ার ওপর এসএসসি ও এইচএসসিতে দু’টি বোর্ড পরীক্ষা রেখে শিক্ষাক্রমের রূপরেখার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে আন্তঃমন্ত্রণালয়।

সোমবার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে (আমাই) প্রায় ৪ ঘন্টাব্যাপী এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে পিইসি ও জেএসসি পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে। অর্থাৎ, দশম শ্রেণির আগে কোনো কেন্দ্রীয় বা পাবলিক পরীক্ষা নেই। তৃতীয় পর্যন্তও কোনো পরীক্ষা থাকবে না। ধারাবাহিক মূল্যায়নের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের শিখন অগ্রগতি নিরূপন করা হবে। চতুর্থ শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ৪০ আর একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে ৩০ শতাংশ মূল্যায়ন হবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে।

বৈঠকে প্রায় ৮০ সদস্য যোগ দেন। তাদের মধ্যে ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জাতীয় শিক্ষাক্রম সমন্বয় কমিটি (এনসিসিসি) এবং শিক্ষাক্রম উপদেষ্টা কমিটির সদস্যরা। এতে সভাপতিত্ব করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব আবু বকর ছিদ্দীক, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব মো. আমিনুল ইসলাম, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আলমগীর মুহম্মদ মনসুরুল আলম, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মশিউর রহমান, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ফরহাদ হোসেন প্রমুখ।

এর আগে গতবছরের সেপ্টেম্বরে এই রূপরেখার খসড়া প্রধানমন্ত্রীর কাছে উপস্থাপন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী সেদিনই এটা নীতিগত অনুমোদন দেন। এর ভিত্তিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ষষ্ঠ শ্রেণিতে ২০২৩ সালে নতুন পাঠ্যপুস্তক প্রবর্তনের লক্ষ্যে শিক্ষাক্রমের পাইলটিং শুরু করে দেয়। কিন্তু বাগড়া দেয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। যেহেতু আন্তঃমন্ত্রণালয়ে বিশেষ করে এনসিসিসির বৈঠকে এটি অনুমোদন না পেলে আইনগত ভিত্তি পায় না, তাই এই কথাই বিতর্কে বারবার উঠে আসছিল। এই অবস্থায় সোমবারের বৈঠক ডাকা হয়। এরফলে জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা-২০২১ আইনগত ভিত্তি পেলো বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

জানা গেছে, বর্তমানে মাধ্যমিক পর্যায়ে ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষাক্রম সারাদেশে ৬১টি স্কুল ও মাদ্রাসায় পাইলটিং চলছে। সেসব বিষয়ে বিদ্যালয়ে পাইলটিং ক্লাস ভালোভাবে চলছে বলে বৈঠকে তুলে ধরা হয়। নতুন শিক্ষাক্রম বিষয়ে কোনো পরিমার্জন বা পরিবর্তন প্রয়োজন আছে না তা শিক্ষামন্ত্রী জানতে চান। তবে ঠৈকে কয়েকটি শব্দগত পরিবর্তন ছাড়া আর কোন প্রস্তাব আসেনি।

রূপরেখায় ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণিতে ১০টি বিষয় প্রবর্তনের কথা আছে। বিজ্ঞান, মানবিক ও বিজনেস স্টাডিজ বলতে মাধ্যমিকে কোনো বিভাগ থাকবে না। এটি চালু হবে এইচএসসিতে। কেবল দশম শ্রেণির পাঠ্যসূচির ওপরই বোর্ড পরীক্ষায় এসএসসির ফল হবে। একাদশ শ্রেণিতে এবং দ্বাদশ শ্রেণি শেষে আলাদা দু’টি বোর্ড পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে হবে এইচএসসির ফল।

প্রাথমিকে পড়তে হবে আটটি বই। তবে সব শ্রেণিতেই শিখনকালীন মূল্যায়নেই বেশি জোর দেওয়া হয়েছে। চলতি বছর মাধ্যমিক স্তরর ষষ্ঠ শ্রেণির পাইলটিং চললেও প্রাথমিকে বছর শেষের দিকে আগস্ট-সেপ্টেম্বরে পাইলটিং করা হবে।

এছাড়া আগামীবছর সারাদেশে পরীক্ষামূলক পাঠ্যবই দেওয়া হবে। বর্তমানে পাঠ্যবই লেখার কাজ চলছে। অর্থাৎ, ২০২৩ সালে প্রথম ও দ্বিতীয় এবং ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন শিক্ষাক্রমের বই যাবে। এছাড়া আগামীবছর সপ্তম শ্রেণির পাইলটিং হবে। ২০২৪ সালে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণি এবং অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে পাইলটিং হবে। ২০২৫ সালে পঞ্চম ও দশম শ্রেণি যুক্ত হবে। ২০২৬ সালে একাদশ ও ২০২৭ সালে দ্বাদশ শ্রেণি যুক্ত হবে।

নতুন শিক্ষাক্রমে প্রাক্-প্রাথমিক থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ১০ ধরনের শেখার ক্ষেত্র ঠিক করা হয়েছে। এগুলো হলো ভাষা ও যোগাযোগ, গণিত ও যুক্তি, জীবন ও জীবিকা, সমাজ ও বিশ্ব নাগরিকত্ব, পরিবেশ ও জলবায়ু, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি, শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য এবং সুরক্ষা, মূল্যবোধ ও নৈতিকতা এবং শিল্প ও সংস্কৃতি। প্রাক্-প্রাথমিকের শিশুদের জন্য আলাদা বই থাকবে না, শিক্ষকেরাই শেখাবেন।

সূত্র : দৈনিক যুগান্তর, ৩০ মে ২০২২ খ্রি.

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Recent Posts

© 2023 sundarbon24.com|| All rights reserved.
Designer:Shimul Hossain
themesba-lates1749691102