আগামী কয়েক বছরের মধ্যে দেশে উৎপাদিত পোল্ট্রির ডিম ও ব্রয়লার মাংসের মান আরও উন্নত হবে এবং ভোক্তাদের জন্য তা হবে আরও পুষ্টিকর, সুস্বাদু ও নিরাপদ।
আজ ১০ জুন ২০২২, সকালে ঢাকার বসুন্ধরায় ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরা (আইসিসিবি) তে অনুষ্ঠিত নিরাপদ ও টেকসই পোল্ট্রি উৎপাদন বিষয়ক দু’দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সেমিনার ও পলিসি ডিসকাশনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এমনটাই জানানো হয়েছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডাঃ মনজুর মোহাম্মদ শাহজাদা বলেন, বঙ্গবন্ধু খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের জন্য নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন। তাঁর সুযোগ্য উত্তরসূরী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার খাদ্য নিরাপত্তা অর্জনের পাশাপাশি জনগণের জন্য নিরাপদ খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।
তিনি আরও বলেন, নিরাপদ পোল্ট্রি পালনে অনেকটাই এগিয়েছে বাংলাদেশ। এন্টিবায়োটিকের ব্যবহার কমে গিয়ে প্রিবায়োটিক ও প্রোবায়োটিকের ব্যবহার উল্লেখযোগ্য পরিমানে বেড়েছে। তিনি বলেন, নিরাপদ ডিম ও মুরগির মাংস উৎপাদনে পোল্ট্রি শিল্প উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছে।
প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, নিরাপদ খাদ্যের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের অবস্থান খুবই সুস্পষ্ট। নিরাপদ পোল্ট্রি পালন একটি বিজ্ঞানসম্মত প্রক্রিয়া। পোল্ট্রি চেইনকে নিরাপদ রাখতে দেশীয় পোল্ট্রি বিজ্ঞানী ও গবেষকরা যথেষ্ট অবদান রাখছেন।
ওয়ার্ল্ড’স পোল্ট্রি সায়েন্স এসোসিয়েশন-বাংলাদেশ শাখার (ওয়াপসা-বিবি) সভাপতি মসিউর রহমান বলেন, শিশু থেকে বয়স্ক সকলেই পোল্ট্রির ডিম ও মাংস খায়। সে কারনেই ডিম ও ব্রয়লার মাংসকে অধিকতর মানসম্পন্ন ও নিরাপদ করা আমাদের দায়িত্ব।
তিনি আরও বলেন, নিরাপদ পোল্ট্রি পালনকে উৎসাহিত করতে হলে খামারের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা উন্নত করতে হবে এবং ছোট-বড় সব ধরনের বাণিজ্যিক ও ব্রিডার খামার এবং ফিডমিলগুলোকে নিবন্ধনের আওতায় আনতে হবে। শুধু খামারিদের সচেতনতাই যথেষ্ট নয়, ভোক্তাদেরও সচেতন হতে হবে।
ওয়াপসা-বিবি’র সাধারন সম্পাদক মো. মাহাবুব হাসান, ওয়াপসা-বিবি’র নির্বাহী সদস্য শামসুল আরেফিন খালেদ,
আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন পোল্ট্রি বিশেষজ্ঞ মি. গর্ডন বাটল্যান্ড, ড. সান্তিয়াগো রামিরেজ, ড. ক্লডিও চিমিনেন্তি।
সেমিনারে অন্যান্যের মাঝে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন, প্রফেসর ড. এস ডি চৌধুরি, প্রফেসর ড. এমদাদুল হক চৌধুরী, ড. নাথু রাম সরকার, ড. এম এ ছালেক, প্রফেসর ড. মো. বজলুর রহমান।
টেকনিক্যাল কমিটির আহবায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন প্রফেসর ড. মো. রফিকুল ইসলাম। প্লেনারি সেশনের চেয়ারপারসন হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রফেসর ড. এন. সি. দেবনাথ, প্রফেসর ড. মো. আলী আকবর, মো. রফিকুল হক, প্রফেসর ড. মো. মকবুল হোসেন, কালিদাস সরকার প্রমুখ।
সেমিনারের বক্তারা বলেন, দেশে উৎপাদিত মাংসের প্রায় ৪৫ শতাংশ আসে পোল্ট্রি থেকে। বর্তমানে দেশী মুরগি কিংবা ডিম তেমন একটা পাওয়া যায় না; তাই পোল্ট্রি মুরগির উপরই নির্ভর করতে হয়। গরু-খাসির মাংসের দাম যেখানে হু হু করে বাড়েছে; সেখানে বাজারে কমেছে মুরগির মাংসের দাম। এটিই এখন গরীবের আমিষ। তাই আপামর মানুষের পুষ্টি নিশ্চিত করতে হলে সাশ্রয়ী মূল্যের এ প্রোটিনকে আরও নিরাপদ করতে হবে; প্রান্তিক খামারি ও পোল্ট্রি শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে।