ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে বাংলাদেশের তরুণদের দিয়ে দেশে এবং দেশের বাইরে ডিজিটাল সার্ভিস দিচ্ছে দেশিয় প্রতিষ্ঠান বিজকোপ। মার্কেটপ্লেস দিয়ে কাজ শুরু করলেও ধীরে ধীরে প্রতিষ্ঠানিক ভাবে কাজ শুরুর পর এখনো নানা ভাবে কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটি। ডিজিটাল মার্কেটিং সার্ভিসের নানা বিষয়ে কাজ করা বিজকোপের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদ হাসান নিজের উদ্যোগ ও ডিজিটাল বিজনেসের নানা সার্ভিস বিষয়ে কথা বলেছেন টেকশহর ডটকমের নিয়মিত আয়োজন ‘টেক ভেঞ্চারস টক’-এ।
টেকশহর: বিজকোপের শুরুটা কিভাবে?
নাহিদ হাসান: আমাদের যাত্রা শুরু হয়েছিল ২০১০ সালে। সে সময়ে আমরা ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেস ‘ওডেস্ক’ (বর্তমানে ‘আপওয়ার্ক’) এ কাজ শুরু করি। একেবারে শুরুতে একা কাজ শুরু করলেও সাতদিনের মধ্যেই আমার টিমের প্রথম সদস্য নিয়োগ দেই। কাজের ক্ষেত্রে আমার আসলে একা কাজ করার চেয়ে টিম ওয়ার্ক বেশি পছন্দের। তাই প্রতিষ্ঠানটি শুরু করার ক্ষেত্রে আমরা দলীয় ভাবে যুক্ত হয়ে কাজ শুরু করি। শুরু থেকেই আমরা সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (এসইও) সার্ভিস দিচ্ছি।
টেকশহর: আপনারা কি কি ধরনের সার্ভিস দিচ্ছেন?
নাহিদ হাসান: শুরু থেকেই আমরা এসইও সার্ভিস দিচ্ছি। এটি ডিজিটাল মার্কেটিংয়েরই একটা অংশ। আমাদের মূল কাজের জায়গা এটা বলা যায়। তাই এ দুটি জায়গাতেই আমরা বেশি কাজ করে যাচ্ছি। এ জায়গাগুলোতে আরো কিভাবে কাজ করা যায়, গ্রাহকদের আরো উন্নত সেবা দেয়া যায় সেটি নিয়েই কাজ করছি। ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের মধ্যে অ্যাডভার্টাজিং ম্যানেজমেন্ট, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং, ওয়েব ডিজাইন এবং কনটেন্ট মার্কেটিং নিয়ে কাজ করছি।
টেকশহর: ডিজিটাল মার্কেটিং সার্ভিস দেয়া প্রতিষ্ঠানগুলো মার্কেটিংয়ে কিভাবে সহায়তা করছে বলে মনে করেন?
নাহিদ হাসান: ব্যবসার শুরু থেকেই মার্কেটিং নিয়ে নানা ধরনের কাজ হচ্ছে। বর্তমান সময়ে তারাই আসলে ব্যবসায় ভালো করবে যারা যত সহজে তাদের পণ্য বা সেবা গ্রাহকদের কাছাকাছি পৌঁছাতে পারবে। যেহেতু এখন ডিজিটাল নানা মাধ্যম রয়েছে তাই এখন মার্কেটিংয়ের সবচেয়ে বেশি রিটার্ন অন ইনভেস্টমেন্ট (আরওআই) এখন ডিজিটাল মার্কেটিংয়েই আসছে। তাই সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে কাজ করলে সেটি সত্যিকার ভাবেই ব্যবসায় দারুণ সহায়তা করবে।
টেকশহর: দেশে কিংবা দেশের বাইরে কত ধরনের প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ করছেন?
নাহিদ হাসান: আমরা যখন শুরু করেছিলাম তখন আমাদের গ্রাহক শুধুমাত্র দেশের বাইরের ছিল। দেশেও আমরা বেশ কয়েকটি ব্র্যান্ডের সঙ্গে কাজ করেছি। দেশে আমাদের প্রথম গ্রাহক বলা যায় ‘রকমারি’কে। এর পাশাপাশি রায়ান্স কম্পিউটার, লজিটেক, বিক্রয় ডট কমসহ বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান আমাদের গ্রাহক। এছাড়া গ্লোবাল নানা ধরনের ব্র্যান্ড যারা বাংলাদেশে নিজেদের ব্যবসা সম্প্রসারণ করতে চায় তাদেরও সার্ভিস দিয়েছি এবং দিচ্ছি। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে গ্লোবাল ফাইন্স্যান্সিং প্রতিষ্ঠান ‘পেওনিয়ার’।
টেকশহর: প্রাতিষ্ঠানিক ভাবে অনেক প্রতিষ্ঠান এখনো ডিজিটাল মার্কেটিং খাতে তেমন মনযোগী নয় বলে অনেকের মত। আপনার কি মনে হয়?
নাহিদ হাসান: এটা আসলে গ্লোবাল মার্কেটেও হয়। অনেকে বিষয়টা বুঝতে পারছে কিন্তু সেখানে যে মনযোগী হতে হবে বা আরো কাজ করতে হবে সেটি নিয়ে অনেকের নানা ধরনের দ্বিধা কাজ করে। বিশেষ করে বাংলাদেশে অনেকে বুঝতে পারে না কি করবে শুরুতে। বিশেষ করে ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে কাজ করলে নিজেদের একটি টিম তৈরি করবে নাকি কোন এজেন্সিকে দেবে সেটি নিয়েও অনেকে শুরুতে বুঝতে পারে না। আর এ খাতে বিনিয়োগ করে কবে আরওআই পূর্ণ হবে সেটিও অনেকে শুরুতে বুঝতে পারে না। তাই শুরুর ক্ষেত্রে কিছুটা সমস্যা হয়। তবে সারাবিশ্বে করেনাকালীন সময়ে অনেকেই বিষয়টিকে আগের চেয়ে অনেক গুরুত্ব দিচ্ছে।
টেকশহর: দেশে এবং দেশের বাইরে ডিজিটাল মার্কেটিং সার্ভিস দেয়ার ক্ষেত্রে আপনার অভিজ্ঞতা কেমন?
নাহিদ হাসান: আমার সবমিলিয়ে অভিজ্ঞতা বেশ ভালো। আমরা অবশ্য গ্রাহক পছন্দ বা কাজ করার ক্ষেত্রে অনেক কিছু বিবেচনায় নেই। বিশেষ করে আমরা এমন গ্রাহকদের সঙ্গে কাজ করতে চাই যারা সহযোগীর মতো কাজ করবে। কারণ, আমাদের কাজ করার জন্য অনেক ধরনের তথ্য প্রয়োজন হয় যা আসলে পার্টনারশীপ ভালো বা শক্ত না হলে ফলাফল ভালো হওয়া সম্ভব না। আর আমরা চাই, আমাদের গ্রাহকদের সর্বোচ্চ সার্ভিস দিতে তাই তাদের সঙ্গে সম্পর্কটাও সেভাবে গড়ে তুলতে চাই। এর ফলে দেখা যায় আমাদের গ্রাহকরা দীর্ঘ সময় ধরে আমাদের সঙ্গে আছে।
[সাক্ষাৎকার নিয়েছেন টেকশহর ডট কমের স্পেশাল করসপনডেন্ট নুরুন্নবী চৌধুরী]