বুধবার, ০৭ জুন ২০২৩, ১১:১৮ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
ওমানে সকল প্রবাসী শ্রমিকদের জন্য নতুন নির্দেশনা দেশটির শ্রম মন্ত্রণালয়ের সবাই বলবে ‘এই মেয়েটা আসলে সংসার করতে পারে না’ আর্জেন্টিনায় বাংলাদেশের নামে ফুটবল ক্লাব প্রতিষ্ঠা বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্পোরেশন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ২০২৩-১৪১ টি শূন্য পদে নিয়োগ দেবে – চাকরির খবর ২০২৩ | বাংলাদেশের সকল সরকারি ও প্রাইভেট চাকরির খবর সিলেটে ট্রাক-পিকআপ সংঘর্ষে ১২ জনের প্রাণহানি অবশেষে পাঁচ দিনের মধ্যে বৃষ্টির পূর্বাভাস দিলো আবহাওয়া অধিদপ্তর চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ২০২৩ – চাকরির খবর ২০২৩ | বাংলাদেশের সকল সরকারি ও প্রাইভেট চাকরির খবর বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ২০২৩ আফগান সিরিজের আগে ফিরলেন সাকিব লোডশেডিংয়ের প্রতিবাদে বিএনপি’র হারিকেন মিছিল

বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষে পানি ব্যবস্থাপনার কৌশল |

  • Update Time : শুক্রবার, ২৪ জুন, ২০২২
বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষে পানি ব্যবস্থাপনার কৌশল


বর্তমানে বর্জ্য থেকেই খাদ্য তৈরি করে মাছকে খাওয়ানোর অভিনব প্রযুক্তির উদ্ভাবন হয়েছে যার নাম”বায়োফ্লক” নতুন এই পদ্ধতি অনেক বেশি সম্ভাবনাময় ও লাভজনক। তুলনামূলক অল্প বিনিয়োগে বিজ্ঞানসম্মত এই পদ্ধতি আকৃষ্ট করতে পারে নতুন উদ্যোক্তাদের।

বায়োফ্লক হল প্রোটিন সমৃদ্ধ জৈব পদার্থ এবং অণুজীব, ফ্লক পানিতে ভাসমান বা নিমজ্জিত অবস্থায় থাকতে পারে। ফ্লকে প্রচুর প্রোটিন ও লিপিড রয়েছে। যাহা মাছ বা চিংড়ির গুরুত্বপূর্ণ খাদ্যের উৎস, যেমন- ডায়াটম, ব্যাকটেরিয়া, প্রোটোজোয়া, অ্যালজি, ফেকাল পিলেট, জীবদেহের ধ্বংসাবশেষ এবং অন্যান্য অমেরুদণ্ডী প্রাণী ইত্যাদির ম্যাক্রো-এগ্রিগেট।

বায়োফ্লকে মাছ চাষের জন্য পানি ব্যবস্থাপনা ও ফ্লক একটি গুরুত্বপূর্ন বিষয়। যেকোন মাছ বা চিংড়ি চাষ বা বায়োফ্লক প্রজেক্ট করার আগে পানির উৎস কি হবে এবং তার গুণাগুণ বা ব্যবহারের উপযোগীতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানা সবচেয়ে জরুরী বিষয়।

পানির উৎসঃ


গভীর নলকূপ, সমূদ্র, নদী,বড় জলাশয়,লেক,বৃষ্টি ইত্যাদির উৎসের পানি গুণ মান ভাল থাকলে ব্যবহার করা যায়। গভীর নলকুপের পানি ব্যাতীত অন্য উৎসের পানি ব্যবহারের পূর্বে জীবাণুনাশক/ ব্লিচিং পাউডার দিয়ে জীবাণুমুক্ত করে নিতে হবে।

বায়োফ্লকের জন্য উপযোগী পানি তৈরীঃ


প্রথমে ট্যাংক জীবাণুনাশক/ ব্লিচিং পাউডার দিয়ে জীবাণুমুক্ত করে নিতে হবে। পানিতে আয়রনের মাত্রা ০.১- ০.২ mg/L এর বেশি হলে পানি থেকে আয়রন দূর করার ব্যবস্থা করতে হবে। আয়রন দূর করার জন্য ১০ টনের ট্যাকিতে ৫০০ গ্রাম ফিটকারি দিয়ে ২৪ – ৩৬ ঘন্টা এয়ারেশন দিয়ে ৪ – ৫ ঘন্টা এয়ারেশন বন্ধ রাখলে আয়রনের ময়লা ট্যাংকির নিচে জমা হয়ে যায় এবং পুরো ট্যাংকির পানি স্বচ্ছ হয়ে যায়।

ফলে সাইফুনিন পাইপ দিয়ে আয়রন / ময়লাটা বাইরে সহজেই ফেলে দেওয়া যায়, আবার অনেক অভিজ্ঞজনেরা ৪৮ ঘন্টা ভালভাবে শুধু এয়ারেশন দিয়ে ৪ – ৫ ঘন্টা এয়ারেশন বন্ধ রাখে ফলে আয়রন এর ময়লা নিচে জমা হয়ে যায়। তখন উপরের স্বচ্ছ পানিটা সাইফুনিন পাইপের মাধ্যমে চাষের ট্যাংকে নিয়ে যায় বা নিচের ময়লাটা বাইরে ফেলে দেয়, ফিটকারি ব্যবহারের কারনে অবশ্য পানির পিএইচ কমে যায়, তখন আরও ১০ – ১২ ঘন্টা পানিতে অনবরত বাতাস সরবরাহ করতে হবে।

২৪ ঘন্টা পর পানিতে ৮০০ গ্রাম – ১ কেজি ( ১০ টনের ট্যাংকির জন্য) হারে ক্যালসিয়াম অক্সাইড (CaO) ডলো চুন প্রয়োগ করে বাতাস সরবরাহ নিয়মিত করতে হবে, চুন প্রয়োগ মাত্রা পানির পিএইচ এর উপর নির্ভর করে কমতে বা বাড়তে পারে। এর পর পানির ক্লোরিন, পি এইচ ও ক্ষারত্ব পরীক্ষা করে,ব্যবহারের জন্য বায়োফ্লক ট্যাংকে নেওয়া যায়।

তারপর চাষ ট্যাংকের পানিতে প্রজাতি ভেদে TDS কাংখিত পর্যায়ে আনতে লবন দিতে হবে, এইক্ষেত্রে বলতেই হচ্ছে, কিছু কিছু ইউটিউবাররা মাছি মারা কেরানির মত TDS ১৮০০ রাখতে বলে, আর এই জন্য ১০ টনের ট্যাংকিতে ১০ কেজি লবন মুখস্তের উপর দিয়ে দিতে বলে,

এখানে বুঝতে হবে আমাদের দেশে বায়োফ্লকে স্বাধু পানির মাছ চাষ হচ্ছে, তাই আমাদের এখানে TDS ১৮০০ এবং স্যালাইনিটি ৪ পিপিটি এর উপরে রাখার যুক্তি নাই, অবশ্য তেলাপিয়া ও কৈ ৫ পিপিটি স্যালাইনিটি পর্যন্ত সহ্য করতে পারে।

আমাদের দেশের স্বাধু পানির মাছ গুলোর জন্য TDS ৫০০-৬০০ রাখলেই চলে, তাই ছোট অবস্থায় TDS ৫০০-৬০০ রাখার জন্য ১০ টনের ট্যাংকিতে ৫-৬ কেজি র- লবন (আয়োডিন মুক্ত ) দিলেই চলে, পরবর্তীতে প্রয়োজন হলে কিছুটা বাড়িয়ে নিতে পারবেন তখন মাছও বড় হবে এবং সহ্য করতে পারবে।

আমাদের দেশের পুকুরের পানিতে যে মাত্রায় TDS ও স্যালাইনিটি থাকে সেটার সাথে মিল রেখে আপনার স্যালাইনিটি ও TDS রাখা উচিত, তাতে মাছের পোনা সহজেই মানিয়ে নিতে পারবে।

তাই আমরা বলতেই পারি ১০ টনের ট্যাংকিতে ৫-৬ কেজি র সল্ট (আয়োডিন ছাড়া লবন) এবং পিউর ২০ – ৫০ গ্রাম মিনারেলস দিয়ে TDS পরীক্ষা করে নিতে হবে। বায়োফ্লকের জন্য ৪০০ – ১৮০০ ppm TDS থাকা ভাল সেটা কত মাত্রায় কোন প্রজাতির জন্য থাকবে সেটা যাচাই করে নিতে হবে।

এর পর নির্বাচিত পানির গুণাগুণ পরীক্ষা করে পানি প্রবেশ করাতে হবে।

বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষে পানির গুণাবলীঃ


১. তাপমাত্রাঃ ২৪- ৩১ ° C

২. দ্রবীভূত অক্সিজেনঃ ৬- ৮ mg/L

৩. পানির রংঃ বাদামী(সূর্যের আলো বিহীন), সবুজ বা হালকা সবুজ(সূর্যের আলো পড়লে)।

৪. পিএইচঃ ৭.৫- ৮.৫

৫. ক্ষারত্বঃ ৫০ – ১২০ mg/L

৬. খরতাঃ ৬০ – ১৫০ mg/ L

৭. ক্যালসিয়ামঃ ৫- ১৬০ mg/L

৮. অ্যামোনিয়াঃ ০.০১ mg/L

৯. নাইট্রাইটঃ ০.১- ০.২ mg/L

১০. নাইট্রেটঃ ০ – ৩ mg/L

১১. ফসফরাসঃ ০.১- ৩ mg/L

১২. H2Sঃ ০.০১ mg/ L

১৩. আয়রন- ০.১- ০.২ mg/L (না থাকলেই ভাল)

১৪. পানির স্বচ্ছতাঃ ২২ – ৩৫ সে.মি.

১৫. পানির গভীরতাঃ ৩- ৩.৫ ফুট

১৬. ফ্লকের ঘনত্বঃ ৩০০ গ্রাম/ টন

১৭.TDSঃ ৪০০০- ১৮০০০ mg/L ( প্রজাতি ভিন্ন ভেদে)

১৮. লবণাক্ততাঃ ১- ৭ ppt (প্রজাতি ভেদে ভিন্ন)

আরো পড়ুনঃ বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষে ফ্লক তৈরী করার কলাকৌশল

মৎস্য প্রতিবেদন / আধুনিক কৃষি খামার



Source by [সুন্দরবন]]

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Recent Posts

© 2023 sundarbon24.com|| All rights reserved.
Designer:Shimul Hossain
themesba-lates1749691102