জন অ্যাডামস বলেছিলেন, ‘Every problem is an opportunity in disguise’ এই কথার সত্যতা প্রমাণ করতেই এবার ট্রেনের লাইনে দাঁড়িয়েই বিয়ে করলেন ঢাকার জোবায়ের(২৫) ও সীমা(২৭) নামের এক দম্পতি।
এর আগে বিজয় সরণীর জ্যামে বসে বিয়ে, বৌভাতের আয়োজন হলেও ট্রেনের ইতিহাসে এ ঘটনা একদমই নতুন৷ এ ব্যাপারে এই দম্পতিকে প্রেমের সূচনা কীভাবে হলো প্রশ্ন করা হলে সীমা জানান, ‘আমরা বিগত চারদিন ধরে একই লাইনে দাঁড়ায়া আছি। আমার দুই মানুষ সামনে ছিলো জোবায়ের। যতবার ওর দিকে চোখ পড়ছে ততবারই দেখি ছেলেটা ঘামতেছে। খুব মায়া লাগলো দেখে। এরপর আমি ওকে পানি অফার করি…সেখান থেকে ধীরে ধীরে কথা শুরু হয়…. ’
জোবায়ের বলেন, ‘সীমাই প্রথম আমাকে পানি খেতে দেন। এতো মমতা ভরে পানি বহুদিন পর কেউ খাইয়েছে। এরপর থেকে আমরা টানা লাইনে৷ একে অপরের সুখে দুঃখের আরেকজনের পাশে, এভাবেই একসময় মনে হলো বিয়েটা করি..কখন ফেললাম…’
একটি গোপন সূত্রে জানান যায়, অন্য দশটি বিয়ের মত বিয়েতে বেশ ধুমধামের আয়োজন করেন তারা। জানা যায়, ট্রেন কাউন্টারে শামিয়ানা টাঙিয়ে ও আশেপাশের টিকিটের জন্য অপেক্ষারত প্রায় তিনশো মানুষ নিয়ে মহাসমারোহে বিয়েটি অনুষ্ঠিত হয়।
বিয়েটি পড়ান টিকেটের জন্য অপেক্ষমাণ এক কাজী সাহীব। তবে বিয়ের পর আজ বাসর রাতের আয়োজন করা বন্দোবস্ত হলেও এখনো টিকেট পাননি তাদের কেউওই। বাধ্য হয়েই একটি নষ্ট ট্রেনের পরিত্যক্ত কামড়াকে বাসর ঘর হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে। তবে কনেপক্ষকে ঠিকঠাক টাকাপয়সা না দিলে সেখানে ঢুকতে পারবেন না জোবায়ের, এমনটাই জানা গেছে শালীপক্ষের কাছ থেকে৷ শুধু তাই নয়, বগিটির বাইরে করা হয়েছে জোরে জোরে গানের ব্যবস্থাও।
তবে এ ব্যাপারে পাইনে থাকা হেকমত আলী নামের এক মুরুব্বি বলেন, ‘বিয়া করুক বা যা ইচ্ছা তাই করুক। এইযে একবার লাইন থাইকা সরছে,আমরা আর লাইনে ঢুকতে দিমু না। আমরা কষ্ট কইরা লাইনে দাঁড়ামু, আর হেয় বাসর ঘর কইরাও জায়গা ঠিক থাকবো—এইগুলা বেইনসাফ… ’