শুক্রবার, ০২ জুন ২০২৩, ১১:৫৫ পূর্বাহ্ন

বায়োফ্লকে অধিক ঘনত্বে মাছ চাষের কৌশল | Adhunik Krishi Khamar

  • Update Time : মঙ্গলবার, ১২ জুলাই, ২০২২
বায়োফ্লকে অধিক ঘনত্বে মাছ চাষের কৌশল
মাছ চাষের কৌশল আমাদের অনেকেরই জানা নেই। মাছ চাষের আধুনিক পদ্ধতি হল বায়োফ্লক পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে খুব সহজে মাছ চাষ করে লাভবান হওয়া যায়। বায়োফ্লকে অধিক ঘনত্বে মাছ চাষ করতে পারলে আরও বেশি লাভবান হওয়া যায়। আসুন জেনে নেই বায়োফ্লকে অধিক ঘনত্বে মাছ চাষের কৌশল সম্পর্কে- 

বায়োফ্লকে অধিক ঘনত্বে মাছ চাষের কৌশলঃ


আমরা যে পদ্ধতিতে ব্যাকটেরিয়া কালচার করি তা পরিপূর্ণ ভাবে যথেষ্ট নয়। যে পদ্ধতি অবলম্বন করলে উপকারী ব্যাকটেরিয়াগুলো সঠিকভাবে প্রতিপালিত হবে এবং সুষমভাবে বংশ বিস্তার করতে পারবে, সে পদ্ধতিতেই তা চাষ করতে হবে।

ফ্লকগুলো যেন শুধু প্রোটিনের উৎসের মধ্যেই সীমাবদ্ধ না থাকে। হেটেরোট্রপিক ব্যাকটিরিয়ার উপস্থিতিতে শুধু মাত্র C:N ratio মেইনটেইন করলেই ফ্লক বা প্রোটিন সেল তৈরি করা সম্ভব।

কিন্তু শুধুমাত্র প্রোটিন দ্বারা মাছের সুষম গ্রোথ সম্পন্ন হয়না। মাছের সুষম বৃদ্ধি এবং যাবতীয় রোগ হতে মুক্তির জন্য দরকার খাদের ৬ টি উপাদানের সুষম প্রোয়োগ। পাশাপাশি সুষম গ্রোথ প্রোমটের জন্য বিভিন্ন হরমন ও এনজাইম, যা ভিন্ন ভিন্ন প্রজাতির প্রোবায়োটিক গুলো যোগান দিয়ে থাকে।

মোট কথা হলো, এমন কিছু উপাদানের সমন্বয়ে ব্যাকটেরিয়া কালচার করতে হবে যেন ফিশ ট্যাংকে প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, ফ্যাট, সব রকমের মিনারেল ও ভিটামিন এবং প্রয়োজনীয় হরমোন ও এনজাইম সব সময় মৌজুদ থাকে। প্রোবায়োটিক হচ্ছে সেনাবাহিনীর মত। এরা ট্যাংকির সুষম পরিবেশ বজায় রাখার জন্য একেক প্রজাতি একেক দায়িত্বে নিয়োজিত। কাজেই যত বেশি প্রজাতির প্রোবায়োটিক তৈরি হবে, তত বেশিই দায়িত্ব পালন বা কাজ আনজাম হবে।

প্রোবায়োটিক গুলো সাধারণত দু’ভাবে বংশ বৃদ্ধি করে। এয়ারেবিক ও আনএয়ারেবিক উভয় পদ্ধতিতে এরা নিজেদের বিস্তার ঘটিয়ে থাকে। সেজন্য দু’ভাবেই এদের কালচার করা দরকার হয়। যেহেতু খাদ্যের বিভিন্ন উপাদান নিয়ে এদের কাজ, তাই এদের কালচারে এমন সব উপাদান ব্যবহার করতে হবে, যা খাদ্যের সুষম উপাদান ও প্রোবায়োটিকের উৎস।

এখন ধারাবাহিক ভাবে সেসব উপাদানের বর্ণনা করা হল- 

১। কলাঃ এটা বিভিন্ন ধরনের মিনারেল, যেমন পটাশিয়াম, সোডিয়াম, ম্যাগ্নেশিয়াম, ক্যালসিয়াম প্রভৃতি যোগান দিয়ে থাকে। এতে ভিটামিন এ, বি, সি,ডি বিদ্যমানআছে। এছাড়া কলায় রয়েছে এক ধরনের প্রোবায়োটিক যা মাছের দেহে ক্যালসিয়াম সংশ্লেষণ ও অলিগোস্যাকারাইজড হজমে সহায়তা করে।

২। চিনিঃ এটা কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাদ্য উপাদান। এর দ্বারা কার্বন সোর্স, শর্করা ও ক্যালোরি উৎপাদন হয়।

৩। ইয়াকুল্টঃ এক জাতীয় পানীয়, যাতে Lacto bacillus ( L. Case) জাতীয় প্রোবায়োটিক রয়েছে। আতপ চাউলের পানি দিয়ে যে প্রোবায়োটিক ঘরোয়া ভাবে তৈরি করা হয়, এটা সে ধরনের। ইয়াকুল্ট আামাদের দেশে সচারাচর না থাকায়, আমরা টকদই দিয়ে কারচার করতে পারি। কারন টকদই Lacto bacillus এর বিরাট উৎস। টকদই পরিপাক তন্ত্রের উপকার সহ ৬ টি বিষয়ে উপকার করে থাকে।

৪। আনারসঃ এর মধ্যে এমন কিছু প্রোবায়োটিক রয়েছে, যা ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়াকে প্রতিহত করে, মাছের দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলে।

৫। ভিটামিন বি ও ভিটামিন সিঃ এগুলো মাছের স্কিন ডিজিজ দুর করে, খাদ্যের আগ্রহ সৃষ্টি করে এবং দৈহিক ও মানুসিক দুর্বলতা দুর করে।

৬। ইষ্ট ট্যাবলেট ও ইস্ট পাউডারঃ এগুলো FCO পদ্ধতিকে সহজ করে তোলে। ইস্টের ফার্মেন্টেশন ক্ষমতা রয়েছে খুব বেশি। তাছাড়া ইষ্ট হলো – প্রোবায়োটিকের একটা ( ফাংগাল) অংশ।

৭। প্রোবায়োটিক পাউডারঃ বায়োফ্লকের প্রাণ, যা দিয়ে পুরো সিস্টেমটাকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়, তা হলো প্রোবায়োটিক পাউডার। এটা দু’ধরনের হয়ে থাকে। যথা- হেটেরোট্রফিক ব্যাকটেরিয়া ও নাইট্রিফাইং ব্যাকটেরিয়া। এগুলো কয়েক ধাপে এমোনিয়াকে ফ্লকে পরিণত করে মাছের প্রোটিন চাহিদা অনেকাংশেই পুরণ করে থাকে।

৮। মোলাসেস বা চিটাগুড়ঃ এটা ব্যাকটেরিয়ার কার্বন সোর্স – এর উৎস এবং ফার্মেন্টেশনে সহযোগী একটা গুরুত্বপূর্ণ কার্বোহাইড্রেট।

৯। ডিমঃ এটা প্রোটিন, ক্যালসিয়াম এবং সালফার সমৃদ্ধ খাদ্য উপাদান। এটা ব্যাকটেরিয়ার ব্রুডিং – এ যথেষ্ট দরকারি ।


আরও পড়ুনঃ মাছের প্রাকৃতিক খাদ্য পরীক্ষায় গামছা-গ্লাস পদ্ধতি


মৎস্য প্রতিবেদন / আধুনিক কৃষি খামার



Source by [সুন্দরবন]]

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Recent Posts

© 2023 sundarbon24.com|| All rights reserved.
Designer:Shimul Hossain
themesba-lates1749691102