সুন্দরবন ডেক্স: শরণখোলায় অনাবৃষ্টির কারনে মৌসুমের শেষেও আমন চাষ করতে পারছে না কৃষক। এছাড়া কয়েকদিনের তীব্র তাপদাহে অধিকাংশ বীজতলা শুকিয়ে গেছে। ফলে এ বছরে আমন চাষ অনেকটা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
উপজেলার চারটি ইউনয়নের বিভিন্ন মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, পানির অভাবে আমনের বীজতলাগুলি শুকিয়ে বিবর্ণ হয়ে গেছে। এছাড়া তীব্র তাপদাহে মাঠ শুকিয়ে গেছে। অনেক জায়গায় মাঠ ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের অনেক স্লুইজগেট সাথে খালের কোন সংযোগ নাই।
যারফলে স্লুইজগেট দিয়ে পর্যাপ্ত পানি ওঠানামা করতে পারছে না। এ অবস্থায় কৃষকরা আমন চাষ নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় পড়েছেন। উপজেলার সাউথখালী ইউনিয়নের চালিতাবুনিয়া গ্রামের চাষী শরৎ মন্ডল, মান্নান হাওলাদার ও সালাম হাওলাদার জানান, পানির অভাবে তাদের বীজতলা শুকিয়ে বিবর্ণ হয়ে গেছে। বৃষ্টি অভাবে চাষ করতে না পারায় বীজও রোপন করা যাচ্ছে না।
সোনাতলা গ্রামের ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, প্রতিবছর এমন সময় তাদের আমনের বীজ রোপন করা হয়ে যায়। কিন্তু বর্তমানে তার এলাকায় অনাবৃষ্টিতে মাঠ ঘাট শুকিয়ে চৌচির হয়ে গেছে। অনেকেই বীজতলা করতে পারে নাই। দুই একজনে যা করছে পানির অভাবে এবং তীব্র তাপদাহে তা শুকিয়ে বিবর্ণ হয়ে গেছে।
একই অবস্থা ওই ইউনিয়নের খুড়িয়াখালী, বকুলতলা, উত্তর সাউথখালী, দক্ষিন সাউথখালী, উত্তর তাফালবাড়ি গ্রামেও। খুড়িয়াখালীর ইউপি সদস্য মোঃ বাচ্ছু মুন্সি জানান, তার এলাকায় পাউবোর একটি ¯øুইসগেট থাকলেও তা অচল থাকার কারনে নদী থেকে পানি এনেও চাষ করা যাচ্ছে না। তাই এবছর তাদের আমন চাষ অশ্চিত হয়ে পড়েছে।
ধানসাগর ইউপি চেয়ারম্যান মাইনুল ইসলাম টিপু জানান, তার ইউনিয়ন অন্য এলাকার চেয়ে একটু উচু এবং লবনাক্ত। তাই বিষ্টির উপর নির্ভর করতে হয়। কিন্তু এবারে বৃষ্টি কম হওয়ায় কৃষকের চাষাবাদে মারাত্মক সমস্যা হচ্ছে। খোন্তাকাটা ইউপি চেয়ারম্যান জাকির হোসেন খান মহিউদ্দিন জানান, তার ইউনিয়নের বিধানসাগর, পূর্ব খোন্তাকাটা, মধ্যে খোন্তাকাটা, বানিয়াখালী এলাকায় মাঠ শুকিয়ে যাওয়ায় কেউ চাষ করতে পারছে না।
রায়েন্দা ইউপি চেয়ারম্যান আজমল হোসেন মুক্তা জানান, তার ইউনিয়নের উত্তর রাজাপুর, মালিয়া, উত্তর তাফালবাড়ি, লাকুড়তলা, চালরায়েন্দা গ্রামে মাঠ শুকিয়ে থাকায় চাষাবাদ ব্যহত হচ্ছে। যারা বীজতলা তৈরী করেছিল তাও শুকিয়ে গেছে। এব্যাপারে উপজেলা কৃষিকর্মকর্তা দেবব্রত সরকার বলেন, এ এলাকার মানুষের যেহেতু নিজস্ব কোন সেচ ব্যবস্থা নেই। এছাড়া মাটিতে কিছুটা লবনাক্ততা রয়েছে।
তাই বৃষ্টির উপর নির্ভর করা ছাড়া কৃষকরে আর কোন উপায় নাই। তবে অনাবৃষ্টির বিষয়টি মাথায় রেখে কৃষকের ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে নিতে রবিশষ্য সরিষা অথবা স্বল্প জীবনকালের ধান চাষের আগ্রহ সৃষ্টিতে চেষ্টা করা হচ্ছে।