শুক্রবার, ০২ জুন ২০২৩, ১১:১৩ পূর্বাহ্ন

বেনাপোল ও শার্শা থানায় খোলা আকাশের নিচে নষ্ট হচ্ছে কোটি টাকার গাড়ি

  • Update Time : সোমবার, ৮ আগস্ট, ২০২২
বেনাপোল ও শার্শা থানায় খোলা আকাশের নিচে নষ্ট হচ্ছে কোটি টাকার গাড়ি

বেনাপোল প্রতিনিধি।।
যশোরের বেনাপোল ও শার্শা থানার অভ্যন্তরে শতশত মোটরসাইকেল ও প্রাইভেটকারসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহন অযন্ত অবহেলা ও যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে খোলা আকাশের নীচে নষ্ট হচ্ছে। রোদ বৃষ্টি আর ধূলা ময়লার স্তুুপে এসব যানবাহনের যন্ত্রাংশ মরিচা পড়ে বিকল হয়ে পড়েছে। মামলা জটিলতায় দীর্ঘদিন ধরে অযত্বে অবহেলায় এসব যানবাহন পড়ে থেকে হারিয়ে ফেলেছে চলাচলের ক্ষমতা।
চুরি, সড়ক দুর্ঘটনা, চোরাই পণ্য, মাদকদ্রব্য বহনসহ বিভিন্ন অভিযোগে পুলিশ, বিজিবি ও কাস্টমস জব্দ করে মোটরসাইকেল, ট্রাক, বাস, প্রাইভেট কার, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, মাইক্রোবাস ইত্যাদি। জব্দ করার পর মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত এসব যানবাহন অযত্নে পড়ে থাকে থানা চত্বরে। এক পর্যায়ে এগুলো ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। মূলত তিনটি কারণে থানায় জব্দ যানবাহন নষ্ট হচ্ছে। গাড়ি ছাড়িয়ে নিতে মালিকের না আসা, আদালতের নির্দেশনা ছাড়া এসব যানবাহন নিলামে বিক্রি করতে না পারা এবং থানা কর্তৃপক্ষও জব্দ যানবাহন সম্পর্কে আদালতকে কিছু অবগত না করা।
থানা সূত্রে জানা যায়, বিভিন্ন অপরাধে জব্দকৃত ও মামলার আলামত হিসেবে বেনাপোল পোর্ট থানা ও শার্শা থানার অভ্যন্তরে রোদ বৃষ্টিতে নষ্ট হচ্ছে বিভিন্ন যানবাহন। যেগুলো বছরের পর বছর খোলা আকাশের নীচে এভাবে পড়ে আছে। এখানে রয়েছে মোটরসাইকেল, প্রাইভেটকার, অটোরিক্সা, ট্রাক, বাইসাইকেলসহ শতশত যানবাহন। মামলার আলামত হিসেবে এসব যানবাহন জব্দ করা হলেও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে খোলা আকাশের নিচে দিনের পর দিন পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে মূল্যবান সম্পদ। দিনে দিনে যানবাহনগুলো বিকল হয়ে পড়লেও সংরক্ষণের যেন উদ্যোগ নেই কর্তৃপক্ষের। আদালতে প্রমাণ স্বরূপ বিভিন্ন মামলায় এসব যানবাহনের আলামত নষ্ট হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন অনেকে।

এদিকে বিচারিক কার্যক্রম বিলম্ব হওয়ায় জব্দকৃত এসব যানবাহন নিলামে কিংবা মালিকদের কাছে হস্তান্তর করা যাচ্ছে না বলে জানান প্রশাসনের কর্মকর্তারা।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, মালিক না আসায় যানবাহনগুলো বছরের পর বছর থানা চত্বরে পড়ে থাকলেও আইনি জটিলতায় বিক্রিও করা যায় না। মামলার আলামত হিসেবে এগুলো রাখতে হচ্ছে।

স্থানীয়রা বলেন, বছরের পর বছর রোদ বৃষ্টিতে শতশত যানবাহন মাটির সাথে মিশে যাচ্ছে। থানায় পড়ে থাকা এসব যানবাহন নিলামের মাধ্যমে বিক্রি করলে অনেকেই এই যানবাহনগুলো কিনতে পারবে। আমরা চাই দ্রুত সময়ের মধ্যে এ যানবাহনগুলো এখান থেকে সরিয়ে নেওয়া হোক।

এসব থানায় জব্দকৃত যানবাহনগুলো পরিত্যক্ত স্থানে ফেলে না রেখে একটি নির্দিষ্ট স্থানে সেডের নিচে রাখলে দীর্ঘ সময়েও নষ্ট হবেনা। সেটি না করলে কোনটা সচল আর কোন অচল বোঝার উপায় থাকবেনা। অবকাঠামো হারিয়ে চ্যাচিস ছাড়া অবশিষ্ট কিছুই থাকবেনা বলে মনে করেন সচেতন মহল। বেনাপোল ট্রান্সপোর্ট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আজিম উদ্দীন গাজি বলেন, দুটি থানায় শতশত গাড়ি পড়ে আছে। এসব গাড়ি বিক্রি করে দিলে যেমন থানার পরিবেশ বাঁচবে, তেমনই সরকার কোটি কোটি টাকা রাজস্ব পাবে।

এ বিষয়ে অ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান বলেন, চোরাই পণ্য, মাদকদ্রব্য বহন, চুরি, দুর্ঘটনাসহ বিভিন্ন কারণে জব্দ করা যানবাহন সিজার লিস্টের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তখন এগুলো চলে যায় আদালতের জিম্মায়। থানার মাধ্যমে মালিক এলে আদালতের নির্দেশে সেটি মালিকের জিম্মায় দেওয়া যায়। মূলত বেশির ভাগ সময় মালিক আসেন না। মামলার আলামত হিসেবে থানা কর্তৃপক্ষও এগুলো সরাতে পারে না। এর থেকে বের হতে নতুন পদ্ধতি ভাবা দরকার। আর কিভাবে গাড়িগুলো ব্যবহার করা যায়, তা-ও ভাবতে হবে।

বেনাপোল পোর্ট থানার ওসি কামাল হোসেন ভূইয়া বলেন, দীর্ঘদিন পড়ে থেকে নষ্ট হলেও আমাদের কিছু করার নেই। গাড়িগুলো বিভিন্ন মামলার আলামত। আদালত নির্দেশনা না দিলে আমাদের কিছু করার নেই। কাগজপত্র না থাকলে কিংবা আদালতে মামলা থাকলে নিষ্পত্তির জটিলতায় বেশির ভাগ মালিক যোগাযোগ করেন না। ফলে আদালতের নির্দেশনা না আসায় মালিককে ফেরত দেওয়া যায় না।

নাভারণ সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মো. জুয়েল ইমরান বলেন, থানায় পড়ে থাকা গাড়িগুলো মামলার আলামত। আদালতের নির্দেশে এসব গাড়ির নিষ্পত্তি করা হয়। এর বাইরে কিছু করার নেই। যেসব গাড়ির মালিক পাওয়া যায় না, সেগুলোর নিলাম হলে বিক্রি করা যায়। জব্দকৃত যানবাহনগুলো থানায় দীর্ঘদিন পড়ে থাকায় আমাদের বেগ পেতে হয়। যদি বিজ্ঞ আদালত মামলা গুলো নিষ্পত্তি করেন তাহলে আমরা এসব আলামত দ্রুত নিষ্পত্তি করতে পারবো।


Post Views:
19



নিউজের উৎস by [সুন্দরবন]]

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Recent Posts

© 2023 sundarbon24.com|| All rights reserved.
Designer:Shimul Hossain
themesba-lates1749691102